ভারত থেকে ফিরে তরুণীর মামলা : দুইজনের দায় স্বীকার

  09-06-2021 07:00PM

পিএনএস ডেস্ক : ভারতে পাচার হওয়ার ৭৭ দিন পর কৌশলে দেশে ফিরে আসা তরুণীর করা মামলায় দুই অভিযুক্ত আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- মেহেদি হাসান বাবুল ও মহিউদ্দিন। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

বুধবার (৯ জুন) ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত বাবুল ও মহিউদ্দিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিন রিমান্ড শেষে তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আসামি মেহেদি হাসান ও মহিউদ্দিন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার আরেক আসামি আবদুল কাদেরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ৩ জুন আসামিদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে, ভারতে গণধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী সম্প্রতি দেশে ফিরে গত ১ জুন হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। ওই মামলায়ই তিনজনকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে মেহেদি হাসান ওই কিশোরীসহ এক হাজারের বেশি নারীকে ভারতে পাচারে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। অন্য দুই অভিযুক্ত মহিউদ্দিন ও আবদুল কাদের মামলার বাদী ভুক্তভোগীসহ পাঁচ শতাধিক নারীকে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি কক্ষে রাখতে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী নারীদের মোটরসাইকেলের মাধ্যমে সীমান্তে মানব পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়ার কথাও স্বীকার করেছেন গ্রেফতার ওই দুই ব্যক্তি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পাচারের শিকার কিশোরীর সঙ্গে ২০১৯ সালে রাজধানীর হাতিরঝিলের মধুবাগ ব্রিজে টিকটক হৃদয় বাবুর পরিচয় হয়। কখনো টিকটক স্টার বানাতে চেয়ে বা ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে হৃদয় বাবু। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের এডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কে ৭০-৮০ জনকে নিয়ে ‘টিকটক হ্যাংআউট’ এবং ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের আফরিন গার্ডেন রিসোর্টে ৭০০-৮০০ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়ে পুল পার্টির আয়োজন করে হৃদয় বাবু। এ বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় লালন শাহ মাজারে আয়োজিত টিকটিক হ্যাংআউটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আন্তর্জাতিক এই মানব পাচারকারীর চক্রের অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় কৌশলে ওই কিশোরীকে ভারতে পাচার করে হৃদয় বাবু। পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পরার পর থেকে পালিয়ে দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত তার ওপর লোমহর্ষক নির্যাতন চালানো হয়।


মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, ভারতে পাচারের পর ওই কিশোরীকে ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকার কয়েকটি বাসায় রাখা হয়। বাসাগুলোতে হাতিরঝিল এলাকার আরও কয়েকজন তরুণী ও কিশোরীর সঙ্গে দেখা হয় ওই কিশোরীর।

তাদের মধ্যে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওর নির্যাতিত তরুণীও ছিলেন। সুপার মার্কেট, সুপার শপ বা বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে পাচার করা হয় বলে ওই তরুণী জানান।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন