‘কোনো অবস্থায় মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না’

  24-08-2016 04:32PM

পিএনএস ডেস্ক : মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, আমার সহযোগী হিসেবে ছিলেন মীর কাসেম আলী সাহেবের ছেলে ব্যারিস্টার আরমান। এই মামলার কাগজ-নথি-পত্র সবই তার কাছে ছিল, উনি আমাকে তৈরি করে দিতেন। আমি তার সহায়তা নিয়ে আদালতে যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করতাম। আমরা আদালতে বলেছি, আরমানকে আমাদের জানা মতে সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়েছে। তারপর তার কোনো খোঁজ আমরা পাচ্ছি না। আমি আশা করেছিলাম, হয়ত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিবে। তখন আমি তার সাথে যোগাযোগ করতে পারবো।

কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন যোগাযোগ না হওয়ার কারণে আমার পক্ষে আজকে মামলার যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই মর্মে আমরা আদালতে সময় চেয়েছিলাম। আদালত বলেছেন, এই মামলায় আপনাদেরকে সময় দেওয়া হয়েছিল। আর সময় দিবো না। তখন আমি বললাম, এই অবস্থায় আমার এই মামলা থেকে অব্যাহতি চাওয়া ছাড়া অন্য কোনো গত্যান্তর থাকবে না। তখন আদালত বললেন, আপনি আজ শুরু করেন। আমরা আগামী রোববার পূর্ণাঙ্গভাবে শুনবো। এরপর আমি শুনানি শুরু করেছি। আগামী রোববার এটার শুনানি হবে। ইতিমধ্যে আমি আশা করবো, আরমান ফিরে আসবে। অথবা সে কোথায় আছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তার একটা হদিস দিবে।

যার ফলে আমার জুনিয়ররা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। মামলা-সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজ কোথায় কিভাবে আছে, দেখতে পারে। নতুবা যে অবস্থায় আছে, আমি মামলাটা করেছি, কিছু কিছু আমার জানা আছে, আমি আমার স্মৃতি শক্তি দিয়েই আগামী রোববার মামলাটির যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করবো।

তিনি বলেন, তবে একটা কথা আমি আদালতকে বলেছি, এই মামলার যে সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে, সেই সাক্ষ্য প্রমাণে ৭ অভিযোগের মধ্যে একটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। যে অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, সেটা যদি স্বীকারও করা হয়, তাহলে পরিস্থিতির কারণে যে সাক্ষ্য প্রমাণ আছে, সেটা প্রমাণ হয় না। এ কারণে কোনো অবস্থায় তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না। এটার ওপরই আমি বেশি জোর দিবো।

আজ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসিসিয়েশনের অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব হোসেন এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য দুঃখজনক উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক কথা। আমি আশা করেছিলাম, আদালত আমার বক্তব্যের পরে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী আরমান, যিনি শুধু মীর কাসেম আলীর ছেলে না, আমাদেরই ভাই, আমাদেরই বন্ধু, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, তাকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে সাদা পোশাকে নিয়ে গেল, এ ধরণের একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটতে পারে, অথচ আদালত এই বিষয়ে নিশ্চুপ। প্রসিকিউশন থেকেও এটাকে হাসি তামাশা করে উড়িয়ে দিচ্ছে। যা আমার কাছে অত্যান্ত দুঃখজনক বলে মনে হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, ব্যারিস্টার আরমানের ব্যাপরে আমরা জিডি করেছি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছেন, তারপরও এই ব্যাপারে সরকার নিশ্চুপ। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তা থেকে প্রমাণ হয়, সাধারণ মানুষের তো কোনো নিরাপত্তা নাই, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদেরও জানমালের নিরাপত্তা নেই।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন