পিএনএস ডেস্ক: জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে হচ্ছিল বড় ছেলের। জনপ্রিয় কয়েকজন গায়ক আর বেলি ড্যান্সারদের নাচ আর গানে বিয়ে বাড়ি জমে উঠেছে। আর ঠিক সেই মুহূর্তে নাসের হাসান বিয়ের আনন্দটাকে দ্বিগুণ করতে ঘোষণা দিলেন, ছোট ছেলেরও বিয়ে দেবেন। কিন্তু সে তো খুবই ছোট। তাতে কী? বাগদান সেরে নিতে দোষটা কোথায়? নাসের ঘোষণা করলেন যে, ছোট ছেলে ওমর তার চাচাতো বোন ঘারামকে বিয়ে করবে।
মিশরের কারিওর উত্তরে ৭৫ মাইল দূরে যেখানে বিবাহ উৎসবটি হচ্ছিল, সেখানে নিমন্ত্রিত ব্যাক্তিরা খবরটা শুনে খুব একটা অবাক হননি। অতিথিদের সাফাই, বিয়ে তো হচ্ছে না, হচ্ছে তো বাগদান। ওমরের বয়স ১২ আর তার হবু স্ত্রীর বয়স মাত্র ১১। ওমর আর ঘারামের সেই সব ছবি ফেসবুক, টুইটার আর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে।
মিশরের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে বিয়ের জন্য সরকারি রেজিস্ট্রেশন দেয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু কে এই নিয়ম মানে?
ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, ১৭ শতাংশ মিশরীয় কিশোরীদের ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মেয়েরা।
ওমর আর ঘারাম-এর বিষয়টায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সে দেশের শিশু ও নারী অধিকারকর্মীরা। সংবাদপত্রে এদের ছবি দেখে ক্ষুব্ধ দেশের সাধারণ মানুষও।
নারীদের লিগ্যাল এইড এবং কাউন্সিলিং-এর প্রধান রেদা এলদানবৌকি বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল সেন্টার ফর চাইল্ডহুড অ্যান্ড মাদারহুডে অভিযোগ জানিয়েছেন।
তবে শুধু মিশরে নয়। মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার বেশ কিছু অঞ্চেল এখনো বাল্যবিবাহ প্রচলন রয়েছে।
ছোট ছেলের বাগদান করিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছেন ওমরের বাবা নাসের। স্থানীয় সংবাদপত্রকে নাসের জানিয়েছেন যে, তিনি একজন সাধারণ মানুষ আর কোনো ভুল তিনি করেননি। এনগেজমেন্টের পক্ষে নাসের বলেছেন, "ওমর ঘরমকে ভালোবাসে। আর ও বলতো যে, আমি বড় হলে ওকেই বিয়ে করব। আর ওরা নিজেরাই নিজেদের বাগদানের ছবি ফেসবুক ও অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে। সঠিক সময় হলেই ওদের বিয়ে দেয়া হবে।’
তবে এই বছরে মিশরে এটিই প্রথম বাল্যবিবাহের ঘটনা নয়। জুন মাসে একটি ১০ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে ১২ বছরের এক ছেলে।
সূত্র: এনডিটিভি।
পিএনএস/আলআমীন
বর-১২, কনে-১১, ধুমধাম বিয়ে!
24-10-2016 02:25PM