দুবার জন্ম নিল যে শিশু!

  24-10-2016 02:59PM

পিএনএস ডেস্ক: পুনর্জন্ম নয়, এক জীবনেই দুবার জন্ম হয়েছে তার। না, সে কোনো দেব-দেবী বা ঈশ্বরের অবতার নয়। প্রকৃত মানবশিশুই সে।

হ্যাঁ, এমন অসম্ভব ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের প্লানোতে। তাই তো শিশুটির মা মার্গারেট বোয়েমার বলেছেন, প্রতিবছর দুটি জন্মদিন পালন করবেন তার মেয়ের।

মার্গারেটের গর্ভাবস্থার ১৬ সপ্তাহ পার হলে নিয়মিত আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর চিকিৎসকেরা সমস্যা দেখতে পান। ওই ভ্রূণে একটি টিউমার ধরা পড়ে। এর আট সপ্তাহ পরে মাতৃগর্ভ থেকে শিশুটিকে অস্থায়ীভাবে বের করা হয় টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য।

সার্জনরা মাতৃগর্ভ থেকে ১ দশমিক ৩ পাউন্ড ওজনের শিশুটি বের করেন ২০ মিনিটের জন্য। জীবন-মরণের ঝুঁকি নিয়ে তার অস্ত্রোপচার করেন। এরপর আবারও জরায়ুতে তাকে স্থাপন করা হয়। বলতে হয়, পৃথিবীতে এমন ঘটনা খুবই বিরল।

এরপর মার্গারেটকে ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্রামে রাখা হয়। শিশুটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থভাবেই দ্বিতীয়বারের মতো জন্ম নেয়।

জন্মের সময় লিনলি হোপ নামে ওই শিশুর ওজন ছিল সাড়ে পাঁচ পাউন্ড।

মার্গারেট জানান, আল্ট্রাসনোগ্রামের ফলাফলের পর তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। গর্ভধারণের ১৬ সপ্তাহে স্ক্যান করার পর চিকিৎসকেরা জানান একটি মারাত্মক সমস্যা রয়েছে গর্ভের শিশুর। শিশুটির স্যাক্রোকোসসিজাল টেরাটমা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম। কারণ এত বড় লম্বা শব্দটার (স্যাক্রোকোসসিজাল টেরাটমা) মানে আমরা জানতাম না। আমাদের কী করতে হবে তাও জানতাম না।’

ছেলেশিশুদের চেয়ে মেয়েশিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। যদিও এর কারণ জানা যায়নি। টেরাটমা আক্রান্ত প্রতি ৩ লাখ থেকে ৭ লাখ শিশুর মধ্যে মাত্র একটি শিশুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

তবে কখনো কখনো চিকিৎসকেরা শিশুর জন্ম না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন অস্ত্রোপচারের জন্য। কিন্তু লিনলির ক্ষেত্রে দেখা গেছে টিউমারটি তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বড় হচ্ছিল।

এ রকম ক্ষেত্রে দেখা যায় টিউমারটি বড় হয় এবং হৃৎপিণ্ড অকেজো হয়ে পড়তে থাকে। ফলে একসময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং শিশুটি মারা যায়।

মার্গারেট বলেন, ‘যখন গর্ভধারণের ২৩ সপ্তাহ চলছিল, চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটির হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তখন অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত ছাড়া উপায় ছিল না। ২৪ সপ্তাহে দেখা যায় শিশুটির আকারের সমান হয়ে গেছে টিউমারের আকার। আমরা তার জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলাম, তাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই।’

যদিও সম্পূর্ণ অস্ত্রোপচারে ৫ ঘণ্টা সময় লেগেছিল কিন্তু শিশুটি বাইরে ছিল মাত্র ২০ মিনিটের মতো।

এই অস্ত্রোপচারের ১২ সপ্তাহ পর একটি পরিপূর্ণ শিশু হিসেবে পৃথিবীতে আসে লিনলি হোপ। সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার এই জন্মকে মার্গারেট বলেন দ্বিতীয়বার জন্ম। তাই তিনি মেয়ের জন্মদিন হিসেবে দুটি দিনই পালন করবেন বলে জানান।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন