প্রতিবন্ধী হয়েও বডিবিল্ডিং!

  16-02-2017 12:18PM

পিএনএস ডেস্ক: জন্মেছেন বামন হয়ে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য অন্যদের মত দেহ গড়ে উঠেনি তার। শখ বড় হয়ে একজন নামকরা বডিবিল্ডার হবেন। কিন্তু এ শরীরে বডিবিল্ডিং করা কি সহজ কথা! মোটেও না। তারপরও বডিবিল্ডিংয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কালেব মুটোম্বো নামের সেই কিশোর। বয়স মাত্র ১৯ বছর। শারীরিক খর্বতার কারণে উচ্চতা ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। ওজন মাত্র ৩৫ কেজি।

কালেব মুটোম্বো জন্মেছিলেন কঙ্গোতে। কিন্তু এখন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। সপ্তাহে পাঁচদিন এলাকার জিমনেশিয়ামে জিম করেন কালেব। তাছাড়া দৈনন্দিন কাজে সবসময় তিনি জিমের উপরই থাকেন। তিনি যদি একটি টেবিল অন্য স্থানের নিয়ে যান তাহলেও জিম করার স্টাইলে নিয়ে যান। তাতে তার কাজও হয় আবার শরীর চর্চাও হয়।

ছোটবেলা থেকে কালেবের শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যখন তার অন্য বন্ধুরা সুস্থ সবল শরীর নিয়ে মাঠে খেলাধুলা করতেন, তখন বাসায় বসে থাকা ছাড়া কোনো কাজ করতে পারতেন না তিনি। এভাবে চলতে চলতে প্রায় ১৪ বছর বয়সে শারীরিক বৃদ্ধি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

তারপরও থেমে থাকেননি কালেব। নিজের মত করে শরীরচর্চা চালিয়ে গেছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি লোকাল বডিবিল্ডারদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। গ্রামের প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন কয়েকবার।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শরীরচর্চা ভালোবাসি আমি। সে ভালোবাসা থেকেই নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যাচ্ছি। শরীরচর্চা করায় আমার শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি অন্যদেরও শরীরচর্চা করার জন্য উৎসাহ দিই। আমি মনে করি, প্রতিবন্ধকতাই আমার বডিবিল্ডিংয়ের মূল অনুপ্রেরণা।’

রায়ান মানথে নামক এক প্রশিক্ষকের কাছে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কালেব মুটোম্বো। ‘ট্রিএনার্জী হেলথ অ্যান্ড ফিটনেস’ নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে রায়াস মানথের। কালেব সেখানেই বেশিরভাগে প্রশিক্ষণ নেন। তাছাড়া বাসায় থাকার সময়ও তিনি তার চর্চা চালিয়ে যান।

কালেব মুটোম্বোব্যক্তিগত ভালোলাগা থেকেই বডিবিল্ডিংয়ে এসেছেন কালেব মুটোম্বো। বিশ্বের জনপ্রিয় একজন বডিবিল্ডার হতে চান তিনি।

বডিবিল্ডিং করার জন্য নানাভাবে অপমান হতে হয়েছে কালেবকে। তারপরও তিনি দমে যাননি। হাজারো অপমান সয়ে তিনি তার কাজ চালিয়ে গেছেন। এখন তাকে নিয়ে অনেক ফিটনেস ম্যাগাজিন লেখালেখি করছে। মোটামুটি একজন মডেলও তিনি।

কালেব বলেন, ‘জিম শুরু করার সময় অনেকে বলেছিলেন, এ শরীরে আমি তা করতে পারবো না। এমনকি নানাও অপমান করেছিল আমাকে। কিন্তু এখনকার অবস্থায় আমি খুবই খুশি। কারণ এখন আমি অনেক কিছুই অর্জন করেছি, যা আগে ভাবতেই পারিনি।’

শারীরিক প্রতিবন্ধতা নিয়েও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী কালেব। তিনি এখন কারো মুখাপেক্ষী নন। প্রতিদিন ভালো একটি দিনের আশা নিয়ে ঘুম থেকে উঠেন এবং সারাদিনের রুটিন মত কাজ চালিয়ে যান।

তিনি বলেন, ‘কে কি বললো বা কে কি করলো তাতে আমি মাথা ঘামাই না। নিজের প্রতি আমার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আছে। সব সময় আমি আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি।’


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন