ভারতে নারীর চামড়া দিয়ে পুরুষাঙ্গ বড় করার রমরমা ব্যবসা!

  14-03-2017 12:32PM

পিএনএস ডেস্ক: খেতে না পাওয়া শুকনো মুখটা সে দিন একটু উজ্জ্বল হয়েছিল। যে দিন পাড়ার এক বড় ভাই এসে ভালো মাইনের কাজ পাইয়ে দেবে বলে কথা দিল। ভালো দিনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘর ছেড়েছিল নেপালি মেয়েটি।

মুম্বাইয়ের নাম আগে সে অনেক শুনেছে। বড় শহর, অনেক কলকারখানা। তাই অবিশ্বাস করেনি। কিন্তু, যে দিন প্রথম কাজের ‘বহর’ সম্বন্ধে চোখ খুলল তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।

ততক্ষণে বাণিজ্য নগরীর বিখ্যাত যৌনপল্লির অন্ধকার স্যাঁতসেতে ঘরে কোনো এক মাসির হেফাজতে পৌঁছে গেছে পুতুল পুতুল গড়নের নেপালি মেয়েটি।

সে একা নয়। তার মতো হাজার হাজার মেয়ের সঙ্গে প্রতিদিন এ ঘটনা ঘটছে। দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য হচ্ছে অনেকে। এর পিছনে আর একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, সেটা আরও ভয়ানক। বাজারে নাকি তাদের গায়ের চামড়ার চাহিদা বিপুল। তাই হঠাৎ করেই কোনো রাতে উধাও হয়ে যায় তাদের শরীরের চামড়া! বেশ কিছু ক্ষেত্রে আর কোনো খোঁজই পাওয়া যায় না সেই মেয়েদের।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মুম্বইয়ের যৌনপল্লির অলিতে গলিতে রমরম করে চলছে নারী চামড়ার এ ব্যবসা। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক গরিব মেয়েকে পাচার করে নিয়ে আসা হয় মুম্বইয়ের যৌনপল্লিতে। এদের বেশির ভাগই নেপালি। উদ্দেশ্য একটাই। চামড়ার যোগান বজায় রাখা।

যেভাবে চামড়া সংগ্রহ করা হয়


যৌনপল্লির এক বাসিন্দা নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, অনেক সময় চামড়া পাচারকারীরা সাধারণ খদ্দেরের বেশে আসে। মাদক খাইয়ে অজ্ঞান করে দেয়। সকালে উঠে দেখা যায় শরীরের কোনো অংশ থেকে চামড়া কেটে নিয়ে গেছে ওই খদ্দের। অসহ্য যন্ত্রণায় কাটে পরবর্তী দিনগুলো।

মেয়েদের এই চামড়ার ব্যবহার


শক্তি সমুহা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী সুনীতা দনুয়ার জানালেন, এ চামড়া প্রথমে যায় মুম্বাইয়ের বিভিন্ন চামড়া কারখানায় অথবা স্কিন প্যাথোলজিতে। সেখানে চামড়া ‘প্রসেসিং’ করা হয়। এরপর সেই ‘প্রসেসড স্কিন’ চলে যায় মার্কিন মুলুকে। সেখানকার প্লাস্টিক সার্জারি মার্কেটে এ চামড়ার চাহিদা বিপুল। প্রধানত পুরুষাঙ্গ বড় করা এবং স্তন বৃদ্ধি করার কাজেই ব্যবহৃত হয় এ চামড়া। এ ব্যবসায় লাভও আকাশছোঁয়া। কারণ ১০০ বর্গইঞ্চি চামড়া বিক্রি হয় ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়।

প্রশাসনের নাকের ডগায় বসেও অবাধে চলছে এ অবৈধ চামড়ার ব্যবসা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যৌনকর্মী জানালেন, বেশির ভাগ কেসই পুলিশের নজরে পড়ে না। কারণ কোনো মেয়েই সাহস করে অভিযোগ জানায় না। এ নিয়ে টুঁ শব্দটিও করলে কপালে জোটে অকথ্য অত্যাচার। ফলে বাধ্য হয়েই মুখ বন্ধ রাখেন নারীরা।

তবে সম্প্রতি প্রশাসনের নজরে এসেছে বিষয়টি। নেপালের সমাজ ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী কুমার খারকে জানান, ‘রিপোর্ট দেখে চমকে গেছি। এটি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। দ্রুত তদন্ত শুরু হবে। অপরাধীদেরও শাস্তি হবে।’

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন