পিএনএস ডেস্ক: আজকের সাহারা মরুভূমি হাজার বছর আগে ছিল সবুজের সমারহ। সেখানে ছিল হাজার হাজার প্রজাতির গাছপালা। সেই সবুজ সাহারাই কালক্রমে প্রকৃতির অভিশাপে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সাহারার সেই পরিবর্তণ মানুষের হাতেই হয়েছে বলে দাবি করেছেন এক প্রত্নতাত্ত্বিক। তার দাবি, আজকে আমরা যে সাহারা মরুভূমির দেখতে পাচ্ছি একদিন তা এমন ছিল না। মানুষ এখানে এসে বসতি স্থাপন করে এ অঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে।
সেই প্রত্নতাত্ত্বিকের নাম ডা. ডেভিড রাইট। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অধ্যাপক। দির্ঘদিন ধরে তিনি আফ্রিকার পুরাতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন।
তার দাবি, একদিন সাহারা মরুভূমিতে সবুজে সমারহ ছিল। আজকে অ্যামাজন জঙ্গলে যেমন হাজার হাজার প্রজাতির গাছপালা দেখতে পাচ্ছি, সাহারা মরুভূমিতেও এমন হাজার হাজার গাছপালা ছিল। তারপর প্রায় ছয় থেকে আট হাজার বছর আগে সেখানে মানুষের বসতি গড়ে উঠে। এলাকার মানুষ কৃষি কাজ শুরু করে। আর কৃষি কাজের সুবিধার জন্য তারা গাছপালা কাটা শুরু করে। আর গাছপালা কাটার কারণে এ এলাকাটি ধীরে ধীর গরম হতে শুরু করে। এভাবে গরম হতে হতে এক সময় বর্তমান মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
ডেভিড রাইট বলেন, ‘এ এলাকায় যত মানুষ বসবাস শুরু করে, ততই এলাকাটি গরম হতে থাকে। এক সময় এটি গরম হতে হতে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তবে এখানকার জনগোষ্ঠী যে ইচ্ছা করেই এলাকার আবহাওয়া গরম করেছে বিষয়টি তেমন নয়। তাদের বেঁচে থাকার জন্যেই তারা চাষাবাদ শুরু করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্ব এশিয়ায় হাজার হাজার বছর আগে নবপ্রস্তরযুগীয় মানুষ এলাকায় ভূমির গঠন পরিবর্তন করেছিলেন। অর্থাৎ তারা এ এলাকা বসবাস উপযোগী করার জন্য কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন। তাতে এলাকাটি বসবাস উপযোগী হয়েছে বটে কিন্তু কিছু ক্ষতিও সাধন হয়েছে।’
উল্লেখ্য, সাহারা মরুভূমি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় মরুভূমি। এটি প্রায় ১০টি দেশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এর আয়তন প্রায় নয় মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। এটি অত্যন্ত গরম ও শুকনো মরুভূমি। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২০ সেমি-র বেশি হয় না। দিনে প্রচণ্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা। কখনও কখনও পাহাড়ের চূড়ায় বরফও জমে থাকতে দেখা যায়। শীতকাল থেকে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সে থেকে ৪৩ ডিগ্রী সে পর্যন্ত ওঠা-নামা করে।
পিএনএস/আলআমীন
সাহারা মরুভূমি মানুষের তৈরি!
17-03-2017 03:58PM