উটপাখির সাথে মানিকগঞ্জে একদিন (ভিডিওসহ)

  29-03-2017 07:26AM


পিএনএস (সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম): যদিও আগে থেকে প্রস্তুতি ছিল তবুও হঠাৎ করে যে কোন কারণেই হোক সকালবেলা ইচ্ছে করছিলো না এক পাও বাড়াবার। ফোনে আমার অনিচ্ছার কথা জানাতেই আসাদ ভাই মৃদু রেগে বললো,“ইচ্ছে করে না এই কথা বলবেন না।” তাই আমিও কিছু আরা বললাম না, প্রস্তুতি নিলাম। ২৬শে, ফেব্রুয়ারী ২০১৭। সকাল সাতটা। গাড়ি আমাদের আটটায়। হাতে এক ঘন্টা সময় থাকলেও আমার জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। কারন আমি ছিলাম আমার বাসা মালিবাগ থেকে অনেক দূরে সেগুনবাগিচায়। বাসায় যেতে হবে, ফ্রেশ হতে হবে তারপর আবার উল্টো পথে কাকড়াইল আসতে হবে।যাইহোক খুব তড়িগড়ি করে আসলেও বাস আটটায় ছাড়েনি, ছেড়েছে সাড়ে আটটায়। গাড়ি চললো ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জের দিকে। পথে বাসের মধ্যেই সকালের নাস্তার ব্যবস্থা তারা করেছিল। আমার প্রিয় খাবার খিচুড়ি।আহ! বেশি সময় লাগেনি গন্তব্যে পৌছাতে।

১১.৩০টার মধ্যেই আমরা মানিকগঞ্জের ‘কাজী বাড়িতে’ ঢুকলাম। বাড়ির নাম ‘কাজী বাড়ি’ তাই মনে করেছিলাম কাজী সাহেব হয়তো এখানে থাকেন। কিন্তু কোথায় কি, কাজী সাহেব তো দূরের কথা, একটি পিকনিক স্পট ছাড়া কিছুই নয়। ভাবলাম, হয়তো কোন কাজী সাহেবের কল্যানে এই কাজী বাড়ি আমরা পিকনিক স্পট হিসেবে পেয়েছি। গ্রাম-বাংলার ঐতিয্যবাহী ঘরগুলো এখানে আছে। যা দেখলে মনে হয় সত্যি সেই আগেকার দিনের ঘরগুলো দেখছি। ঘরগুলো কাঠের আর টিনের নির্মিত। সেকেলের আবহাওয়াটা কিছুটা হলেও মনে লেগেছে…।

বাড়িটির ভিতর ঢুকতেই হাতের বাম পার্শে চোখে পড়ে একটি টোং। দৌড়ে গিয়ে আসাদ ভাই, মামুন ভাই আর আমি শুয়ে পড়লাম টোংয়ে গিয়ে। শরীরটাও ছিল ক্লান্ত। গত রাতে ঘুমাইনি তেমন। তাই বলে ঘুমানোর সুযোগ কিন্তু পাইনি। তবে গলা ছেড়ে গান গাইতে ভুল করিনি। ছোট খালের উপর নির্মিত টোংয়ের উপর শুয়ে শুয়ে গান গাওয়ার মজাই আলদা। আরও মজা লাগতো যদি খালে পানি থাকতো। হয়তো অই খালের পানি শুধু বর্ষাকালের জন্য। আবার একটু দূরেই অই খালের উপর একটি সাঁকো। অপরুপ দেখতে, আহ কি সুন্দর! আগেরকার দিনে এমন দৃশ্য গ্রাম-বাংলায় সচারচর দেখা যেতো। তবে এখনো দেখা যায় আমাদের এই বাংলাদেশে। বড়িটির মধ্যে দোলনা ছিল। বয়সের কথা ভুলে গিয়ে কতোক্ষণ ছোট বাবুর মতো ছোট বেলার স্বাধ নিলাম। ওখান থেকে সবাই যোহরের নামাজ পড়ে বের হয়ে গাড়ির মধ্যেই দুপুরের নাস্তা সারলাম। কয়েক কিলোমিটার পরেই চলে আসলাম নাহার পিকনিক স্পটে। সব কিছুই গ্রাম্য আবহাওয়ার দারুন পরিবেশ। মজার ব্যাপার হলো এখানে অনেক প্রকারের বন্য পাখি রয়েছে। পাখি দেখতে দেখতে এসে দাঁড়ালাম উটপাখির সামনে। এতোক্ষনে ঘুরতে এসেও আমার মনটা খারাপ থাকলেও এই উটপাখিটা আমার মনটাকে ভালো করে দিল। খুবই মিশুক সে। কাছে ডাকতেই আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। উঁকিঝুকি দিয়ে আমার আপদমস্তক দেখে নিচ্ছে সে। মনে হচ্ছিল আমাকে সে চিনে এমন একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়েই আছে আমার সাথে ভাব করার জন্য। উটপাখির কাছ থেকে আসার পর সেই স্পটে হয়তো আর আধা ঘন্টার মতো ছিলাম। তবে আইটুকু সময় খুবই ভালো কেটেছে।

এর মধ্যে আসরের নামাজ পড়তে গিয়ে তো পুরাই অবাক হলাম। আমাদের জাতীয় সংসদ যেমন চারিদিকে পানির মাঝখানে ঠিক এমনই পানির মাঝখানে একটি বৃত্তাকার ছোট মসজিদ। নামজটা ওখান থেকে সেরে কিছুক্ষণ খেলাধুলা করে সন্ধ্যের আগ মুহুর্তেই চললাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। আসতে আসতে ঢাকায় ১০.৩০টা বেজে গেল ততোক্ষণে…..
ভিডিও..

-একটি ভ্রমণ কাহিনী-
লেখক, সাংবাদিক

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন