জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী-অসুখী দেশ কোনটি!

  21-01-2019 01:14PM

পিএনএস ডেস্ক : জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টের ২০১৮ সালের সংস্করণে এবারেও ইউরোপের উত্তরের দেশগুলির প্রাধান্য, কেননা, এবারের চ্যাম্পিয়ন ৫৫ লাখ বাসিন্দার দেশ ফিনল্যান্ড। তবে শীর্ষ দশের বাইরে ওঠানামাও চোখে পড়ার মতো।

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ
২০১৮ সালের ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হলো ফিনল্যান্ড। তারপরেই আছে যথাক্রমে নরওয়ে, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড।
বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ

বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশগুলো হলো বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, দক্ষিণ সুদান, তানজানিয়া ও ইয়েমেন – এমনকি রুয়ান্ডা ও সিরিয়ার মানুষরাও নাকি তাদের চেয়ে বেশি সুখী!

পাঁচ ঘর নেমে গেল বাংলাদেশ
২০১৮ সালের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১১৫, গতবছর যা ছিল ১১০। সার্ক দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তানের স্থান হলো ৭৫, ভুটান রয়েছে ৯৭তম স্থানে, ১০১-এ নেপাল। তালিকায় বাংলাদেশের চেয়ে ‘অসুখী’ সার্ক দেশগুলো হলো শ্রীলঙ্কা (১১৬) ও ভারত (১৩৩)৷ ওদিকে রোহিঙ্গা সমস্যাপীড়িত মিয়ানমারের স্থান ১৩০-এ।

ভারতের দৈন্যদশা
বিশ্বের সুখী বা অসুখী দেশগুলির তালিকায় ভারত এক বছরের মধ্যে ১২২ থেকে ১৩৩তম অবস্থানে নেমে গেছে। ২০১৬ সালে ভারতের অবস্থান ছিল ১১৮ – কাজেই ভারতের মানুষ ক্রমেই আরো ‘অসুখী’ হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এবারকার রিপোর্ট থেকে সেই অসন্তোষ বাড়বে বৈ কমবে না, কেননা, পাকিস্তান ২০১৭-র তুলনায় আরো পাঁচ ধাপ উন্নতি করে ৭৫-এ পৌঁছেছে; ওদিকে চীন রয়েছে ৮৬তম স্থানে।

ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টের ষষ্ঠ সংস্করণ
২০১২ সালে জাতিসংঘ এই উদ্যোগ নেয়। রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক’ বা এসডিএসএন নামের একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে। ২০১৮ সালের রিপোর্টটি হলো ষষ্ঠ রিপোর্ট, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। ছ’টি উপাদানের ভিত্তিতে একটি দেশ বা জাতির ‘সুখ’ বিচার করা হয়েছে: কল্যাণ, আয়, স্বাধীনতা, আস্থা, আয়ু, সামাজিক সহায়তা ও বদান্যতা।

শীর্ষ দশ
সুখের তালিকার শীর্ষ দশে কিন্তু জার্মান (১৫), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৮) বা যুক্তরাজ্যের (১৯) মতো দেশের স্থান হয়নি। ২০১২ সালের প্রথম রিপোর্টের পর থেকে স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলো যেন সুখ বা সুখবোধের ইজারা নিয়ে রেখেছে। দৃশ্যত এর কারণ হলো, স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলোতে ব্যক্তিস্বাধীনতার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার এক সুন্দর সমন্বয় ঘটেছে – যে কারণে এসব দেশের মানুষ উচ্চ আয়করে বিশেষ আপত্তি করেন না।

সুখী অভিবাসী
২০১৮ সালের রিপোর্টে অভিবাসীদের সুখ-দুঃখের দিকে আলাদা করে নজর দেওয়া হয়েছে। এখানেও ফিনল্যান্ড সবার সেরা, যদিও সেদেশে বিদেশির সংখ্যা সাকুল্যে তিন লাখ। দেখা যাচ্ছে, সুখের তালিকায় এমনিতেই যারা শীর্ষ দশে, ঠিক সেই দেশগুলোতেই অভিবাসীরা সবচেয়ে সুখী। এক্ষেত্রে জার্মানি ২০১৫-১৬ সালে লাখ লাখ উদ্বাস্তু-অভিবাসী নিয়ে ও তাদের দেখাশোনা করেও অভিবাসীদের জন্য সুখের দেশের তালিকায় ২৮তম স্থান ছাড়াতে পারেনি।

মার্কিন মুলুকের মানুষরা সুখী নন কেন?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনোকালেই সুখের তালিকার শীর্ষ দশে ছিল না। এবার তারা আরো চার ধাপ নেমে গিয়ে ১৮তম স্থানে পৌঁছেছে। এর কারণ নাকি ট্রাম্প বা আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা নয়, বরং মার্কিনিরা মাত্রাধিক মেদবৃদ্ধি, মাদক সেবন বৃদ্ধি ও চিকিৎসাবিহীন মানসিক বিষাদে ভুগছেন – বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

দক্ষিণ অ্যামেরিকার মানুষরা সুখী কেন?
ভেনেজুয়েলার কথা আলাদা; নতুন রিপোর্টে ভেনেজুয়েলার যতটা ‘পতন’ ঘটেছে, খোদ সিরিয়ারও ততটা ঘটেনি। নয়তো প্রতিবারের মতো এবারেও দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশগুলো তাদের বাস্তব সমৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি সুখী। এর কারণ হলো দুর্নীতি, সহিংসতা, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান, সব কিছুকে ছাড়িয়ে পর্যাপ্ত “পারিবারিক উষ্ণতা ও অন্যান্য সহায়ক সামাজিক সম্পর্ক,” বলছে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০১৮।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন