‘আনু মুহাম্মদের বিএনপির সমর্থন গ্রহণ করা উচিত’

  26-10-2016 08:06PM

পিএনএস: রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলনে বিএনপি যে সমর্থন দিয়েছে, তা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করে কিছু হবে না। এই আন্দোলনে আগে খুলনা অঞ্চলের মানুষ এবং সারাদেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিরোধিতা করে গড়ে ওটা আন্দোলনে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে। আনু মুহাম্মদের (তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব) উচিত সেই সমর্থন গ্রহণ করা। বিএনপিসহ দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘সুন্দরবন বাঁচাও, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঠেকাও’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জিয়া সাইবার ফোর্স’ নামের একটি সংগঠন।
রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বিরোধিতা করে এটি বন্ধ করতে আন্দোলন করছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। বিএনপিও এই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। তবে এই আন্দোলনে বিএনপিকে সঙ্গে না নেওয়ার কথা বলছেন সংগঠনটির নেতারা।
সরকার ক্ষমতার ‘দখলে থাকতে’ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার জন্য ভারতের কাছে কমিটেট (প্রতিজ্ঞাবদ্ধ)- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ভারতের কাছে কমিটেট। সেজন্য জনগণের বিরোধিতা স্বত্ত্বেও তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে গণবিরোধী এই প্রকল্প করা হচ্ছে। তাদের অবস্থান এমন, যে করেই হোক, যত বাধাই আসুক- এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হবেই।’
ভারত সরকার জনগণের বিরোধিতার মুখে তাদের দেশে কয়লাভিত্তিক এই প্রকল্প করতে পারেনি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভারত সরকার জনগণের সরকার। সেজন্য জনগণের দাবিকে সম্মান করে। কিন্তু দেশে বর্তমান ক্ষমতাসীন যে সরকার আছে, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সেজন্য তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।’
শুধু সুন্দরবন রক্ষা নয়, বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা প্রয়োজন বলেও মনে করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সব দেশই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় নিয়ে তা বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ এই ধরনের বিদ্যুৎপ্রকল্প পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংসদে আলোচনা না হওয়ার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংসদে এই বিষয়টি আসেনি। কারণ সেখানে যে বিরোধীদল আছে তারা গৃহপালিত। তারা সরকারের থাকায় এ নিয়ে আলোচনা করে না।’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আগ্রাসন চালাচ্ছে দাবি করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে আরো সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘ঐক্যেরবিকল্প নেই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে হবে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে জনগণের জন্য দিক নির্দেশনা নেই- দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের কাউন্সিলে জাতির জন্য কিছু দিতে পারেনি। কাউন্সিলে গণতন্ত্র এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন আয়োজনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা জানে সত্যিকারের সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। সেজন্য তারা অবাধ নির্বাচনে আসতে চায় না।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু প্রমুখ।
সেমিনারে আরো আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. আলমুজাদ্দেদি আলফেসানী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল উদ্দিন রুনু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ওয়াহিদ উন নবী।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন