শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার চেষ্টা হচ্ছে কেন?

  03-12-2016 08:38AM


পিএনএস ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বোয়িং উড়োজাহাজেও নাশকতার চেষ্টা হয় বলে একটি ধারণা রয়েছে। যদি এই ধারণা সত্য হয় তা হলে এ ঘটনা ২০তম হত্যার চেষ্টা হিসেবে পরিগণিত হবে। উড়োজাহাজে ত্রুটি ছিল অথবা নাশকতার চেষ্টা হয়েছিল এই দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত এগিয়ে চলছে। দুটি ঘটনায় নাশকতার আলামত পাওয়া যাচ্ছে। এর একটি হলো ইঞ্জিনের নাটবল্টু ঢিলা পাওয়া ও দ্বিতীয়টি হলো উড়োজাহাজের মনিটরে ইঞ্জিনে ফুয়েলের পরিমাণ ও চাপ কমে যাওয়ার সঙ্কেত পাওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটি বন্ধ না করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটির জরুরি অবতরণ নিয়ে কারিগরি ও বাস্তব অবস্থা উভয় দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফ্লাইটটি দিল্লি, করাচি ও কাবুল পার হওয়ার পর পাইলট জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই বোয়িং উড়োজাহাজে ইঞ্জিনে অয়েলের পরিমাণ ও চাপ কমে যাওয়ার বিষয়টি ভারতের আকাশে থাকতেই মনিটরে ধরা পড়ে। কিন্তু পাইলট তা উপেক্ষা করে দিল্লি, করাচির পর আফগানিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পার হন। প্রায় তিন ঘণ্টা ওড়ার পর ইরানের কাস্পিয়ান সাগর এবং কৃষ্ণ সাগর সামনে রেখে তা বিপজ্জনক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। পাইলট মাত্র দশ মিনিটের সিদ্ধান্তে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন। প্রশ্ন উঠেছে ভারতের আকাশসীমায় থাকতেই এই উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে অয়েলের পরিমাণ ও চাপ কমার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরও কেন ঝুঁকি নেওয়া হলো? আশগাবাদ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করা সম্ভব না হলে সাগর পাড়ি দিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগত। যা ছিল চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সন্ত্রাস কবলিত আফগানিস্তানে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করার কোনো সুযোগ ছিল না।

এদিকে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টগামী এই ভিভিআইপি ফ্লাইটের রুট পূর্বেই জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ফ্লাইটটির ঝুঁকিমুক্ত অবতরণ না করা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্বখ্যাত বোয়িং কোম্পানিও নড়েচড়ে বসেছে। বিমান কর্তৃপক্ষ বোয়িং কোম্পানিকে তাদের স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করেছে। উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়াও এটি নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কি না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে অনেক আগে থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। উড়োজাহাজ যেখানে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হয় সেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ভেতরে অবস্থিত হ্যাঙ্গারে ইতিপূর্বে চোরাচালানকৃত সোনা ধরা পড়েছে। সেই অভিযোগ বিমানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এই নাজুক অবস্থায় উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের সময় নাশকতার কাজ করা হয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা থেকে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টগামী বোয়িং-৭৭৭ ইআর ৩০০ উড়োজাহাজে পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন এবিএম ইসমাইল ও ক্যাপ্টেন আমিনুল ইসলাম। তাদের উভয়ের ব্যাপারে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আমিনুল ইসলাম ১৯৯৭ সালে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী এটিপি উড়োজাহাজের পাইলট ছিলেন। ওই বছর ২ জুন ৫০ জন যাত্রী ও ৫ জন ক্রু নিয়ে এটিপি ফ্লাইট ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাচ্ছিল। সেই ফ্লাইটে ট্রেনিং ক্যাপ্টেনের দায়িত্বে ছিলেন আমিনুল ইসলাম। তার অদক্ষতার কারণে ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণের পর রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। তবে এ ঘটনায় উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যাত্রী ও ক্রুরা প্রাণে বেঁচে যান। ক্যাপ্টেন আমিনুল ইসলামের বাবা ৭১’ এ মুক্তিযুদ্ধকালে কুড়িগ্রামের শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। আর এক সহোদর এরশাদের জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। এসব কারণে তদন্তে নাশকতার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রথম আঘাতটি আসে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে। ৮ দলীয় জোটের মিছিলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গুলি চালানো হয়। পুলিশ ও বিডিআরের চালানো সেই গুলিতে ৭ জন নিহত ও তিনশত লোক আহত হয়।

এর দেড় বছরের কিছুটা বেশি সময় পর ১৯৮৯ সালের ১১ আগস্ট দ্বিতীয় হামলাটি হয়। এই হামলা হয় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে। রাত ১২টার দিকে ফ্রিডম পার্টির একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীর ওই হামলার সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বাসভবনেই ছিলেন। হামলাকারীরা ৭/৮ মিনিট ধরে বঙ্গবন্ধু ভবন লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তবে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়নি।

দুই বছর পর ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্ব্বর দুপুরে উপ-নির্বাচন চলাকালে গ্রিনরোডে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ভোটের পরিস্থিতি দেখতে যান শেখ হাসিনা। সেখানে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপির একদল কর্মী গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ শুরু করে। ২০/২৫ রাউন্ড গুলি ও বোমাবর্ষণ হয়।

তিন বছর পর ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী ও নাটোর রেল স্টেশনে ঢোকার মুখে তাকে বহনকারী ট্রেন লক্ষ্য করে গুলি হয়। নাটোর স্টেশনে সমাবেশ পণ্ড করার জন্য আগে থেকে অসংখ্য বোমা ফাটানো হয়। সেই হামলার টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা।

পঞ্চম আঘাতটি আসে ১৯৯৫ এর ৭ ডিসেম্বর। ওই দিন ধানমন্ডির রাসেল স্কোয়ারে সমাবেশে ভাষণ ছিচ্ছিলেন সে সময়ের বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সমাবেশেও শেখ হাসিনার উপর গুলিবর্ষণ করা হয়।

এ ঘটনার তিন মাসের মাথায় ফের হামলার টার্গেট হন শেখ হাসিনা। সেদিন ছিল ১৯৯৬ সালের ৭ মার্চ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক সেই ভাষণের দিন। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ৭ই মার্চের ভাষণের স্মরণে বক্তৃতা করেন তিনি। বক্তৃতা শেষ করার পরপরই আকস্মাত্ একটি মাইক্রোবাস থেকে সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা নিক্ষেপ চলতে থাকে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়।

পরের ঘটনাটি ছিল হত্যার এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। একটি সংবাদপত্রে ওই পরিকল্পনা ফাঁসের খবরটি প্রকাশিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পুত্রকন্যাসহ ৩১ জনকে হত্যার জন্য পুরস্কার ঘোষণার একটি ই-মেইল চালাচালির খবর আসে। ইমেইলটি পাঠিয়েছিলেন ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক শোয়েব চৌধুরী। শেখ হাসিনাকে হত্যা, গণতান্ত্রিক সরকারকে উত্খাত এবং বিদ্বেষ সৃষ্টির লক্ষ্যে ই-মেইল পাঠানোর অভিযোগে শোয়েব চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাও দায়ের করা হয়েছিল।

২০০০ সালের ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভাস্থলের অদূরে ও হ্যালিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখে। এই বোমা গোয়েন্দাদের কাছে ধরা পড়ে। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত জনসভাস্থল। তা ডেকে আনতে পারতো শেখ হাসিনার মৃত্যু।

২০০১ সালের ২৯ মে খুলনার রূপসা সেতুর কাজ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জঙ্গি সংগঠন হুজি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সেখানেও বোমা পুঁতে রাখে যা গোয়েন্দা পুলিশ তা উদ্ধার করে। হুজি এই হামলার চেষ্টার কথা পরে স্বীকার করে।

মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে ফের সক্রিয় হয় হুজি। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সিলেটে আলীয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানে হুজির পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটে ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন সিলেট গিয়েছিলেন। রাত ৮টার দিকে জনসভা স্থল থেকে মাত্র ৫০০ গজ দূরে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই দুই জনের মৃত্যু হয়।

২০০২ সালের ৪ মার্চ যুবদল ক্যাডার খালিদ বিন হেদায়েত নওগাঁয় বিএমসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে তত্কালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়।

২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হামলাটি ছিল আরও বেশি পরিকল্পিত। সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন জোটের এমপির প্রত্যক্ষ মদদে সন্ত্রাসীরা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

২০০৪ সালে শেখ হাসিনার ওপর প্রথম হামলাটি হয় ২ এপ্রিল বরিশালে। সেদিন জেলার গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে গুলিবর্ষণ করে জামায়াত-বিএনপির ঘাতক চক্র। আর ২১ আগস্ট হলো সেই ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলা।

এতে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েক নেতা অল্পের জন্য এই ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও আকস্মিক এই হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুরর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমান এবং আরও ২৩ জন নেতাকর্মী নিহত হন। হামলায় আরও ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

শেখ হাসিনাকে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ সাব-জেলে স্থানান্তর করা হয়। সেসময় শেখ হাসিনার খাবারে ক্রমাগত বিষ দিয়ে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। স্লো পয়জনিং এর কারণে সেখানে আটক থাকাকালে শেখ হাসিনা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার লক্ষ্যে একটি সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনা করা হয়েছিল যা পরে ব্যর্থ হয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে তথ্য ফাঁসে আলোচিত প্রতিষ্ঠান উইকিলিকস প্রকাশিত সৌদি আরবের এক গোপন বার্তায় দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লে. ক. শরিফুল হক ডালিম এ অভ্যুত্থান পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তিন দেশে বসে এ অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনা চলছিল এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ জন অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সদস্য এতে জড়িত ছিলেন। শুধু তাই নয়, হংকংয়ে বসবাসরত এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এ পরিকল্পনায় অর্থায়ন করেন বলে গোপন বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকাশিত নথি অনুসারে, বাংলাদেশে অবস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে (আরবি ২৪ রবিউল আউয়াল, ১৪৩৩ হিজরি) দেশটির পররাষ্ট্র দফতরে আরবি ভাষায় পাঠানো ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ ওই নথিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ব্যর্থ করে দেওয়া এক সামরিক অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা হয়েছিল হংকং, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় বসে।

নথিতে বলা হয়েছে, তিন দেশ হংকং, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় বসে ওই অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনা করা হয় যার সমন্বয় করছিলেন শরিফুল হক ডালিম যিনি তখন আফগানিস্তানে অবস্থান করছিলেন।

২০১৪ সালের শেষে দিকে প্রশিক্ষিত নারী জঙ্গি দ্বারা মানব বোমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার একটি চেষ্টা হয় বলেও নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দারা। পরে তা অনেকটা প্রকাশও হয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার জঙ্গি শাহানুর আলম ওরফে ডাক্তার। রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মতো নারী ‘মানববোমা’ ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা হয়েছিল। এজন্য ভারতে দুটি মাদ্রাসায় নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৫০ জন নারী ও ১৫০ জন যুবককে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। এদের নেতৃত্বে রয়েছে ১৩ জঙ্গি দম্পতি। বাংলাদেশে সেই সময় প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

২০১৫ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী জনসভায় যাওয়ার পথে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কাওরান বাজারে জামা’আতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) জঙ্গিরা বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড় থেকে পালিয়ে আসা জেএমবির জঙ্গিরাই প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে বোমা হামলা চালায় বলে তখন গোয়েন্দা তথ্য মেলে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন