মিয়ানমারের পরিকল্পনাই জয়ী; ফাঁদে বাংলাদেশ!

  04-12-2016 07:17AM

পিএনএস ডেস্ক : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে সীমান্ত পথে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারও কিছুটা নমনীয়ভাব দেখিয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্র দাবি করেছে, এরই মধ্যে কক্সবাজারসহ আশপাশের জেলাগুলোতে অর্ধলাখ রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে। তারা এখন ঘরবাড়ি বানানোর জন্য পাহাড় কেটে সাবাড় করছে। কেউ কেউ বলছে শেষ পর্যন্ত মিয়ানমারের পরিকল্পনাই জয়ী হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গরা এখন অনেকের বাড়িঘরে আশ্রয় নিলেও তারা এখন কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছে। আর মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয়রা। সচেতন মহলের দাবি, রোহিঙ্গাদের কারণে আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনসহ নানান সমস্যা তৈরী হবে। এখনই নতুন আসা রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদা আইডি দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার।

কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর বাসিন্দা মনিরুল হক মুন্সি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, মাস খানেক ধরে মায়ানমারে চলমান সহিংসতার কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে এটা সবাই জানে। তাদের একটি অংশকে এখন আমাদের আশপাশে দেখতে পাচ্ছি। এমনিতেই বৃহত্তর পাহাড়তলী এলাকা আগে থেকেই রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা। তাই তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে এসে তারা আশ্রয় নিয়েছে। এখন তারা নিজেদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করছে এবং পথেঘাটে বের হচ্ছে কাজের সন্ধানে। বাড়িঘর তৈরি করতে গিয়ে এখানে বেশ কয়েকটি পাহাড় কাটা পড়েছে। তবে এসব পাহাড় কিন্তু বিক্রি করছে স্থানীয়রা। আমার জানা মতে, শুধু পাহাড়তলীতে কমপক্ষে নতুন করে ২০০/২৫০টি পরিবার এসেছে। তারা এখন স্থায়ী হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে।

মিয়ানমারের ফাঁদে বাংলাদেশ!নাইক্ষ্যংছড়ি কলেজের অধ্যাপক নীলোৎপল বড় বলেন, আমি প্রতিদিন কলেজে যাওয়া-আসা সূত্রে জানতে পেরেছি নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ি এলাকা এখন নতুন আসা রোহিঙ্গাতে ভরে গেছে। বেশ কয়েক হাজার নতুন রোহিঙ্গা পরিবার এখন এলাকার পাহাড়ি জনপদে বাড়িঘর তৈরি করছে, বন উজাড় করছে, এবং অযাচিত চলাফেরার কারণে বেশ নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এভাবে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়লে আমাদের সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি প্রফেসর এম এ বারী বলেন, দীর্ঘ ২ দশক ধরে আমাদের ঘাড়ের উপর রোহিঙ্গার বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই ভার বহন করতে গিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তাই হারিয়ে ফেলেছি। এখন আরো নতুন করে রোহিঙ্গা আসছে সেটা আমাদের জন্য মারাত্মক হুমকি হবে বলে আমি মনে করি। আমার মতে, মায়ানমার সেনাবাহিনীর একটি কৌশল ছিল আরাকান রাজ্যের মুসলমানদের নির্যাতন করে তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া। সেই ফাঁদে আমরা কেন পা দিচ্ছি? আসলে এখানে মিয়ানমারের পরিকল্পনাই জয়ী হয়েছে।

উখিয়ার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সুজন সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, যে যাই বলুক আমার জানা মতে কমপক্ষে ২০/৩০ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে প্রবেশ করেছে।তারা এখন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে খুব কম সংখ্যক আছে যাদের কোন পূর্ব পরিচিতি ছিল না তারাই ক্যাম্পে স্থান নিয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনা করা হয়েছে সেটা ঠিক আছে- কিন্তু আমার নিজের অবস্থাই যদি শোচনীয় হয়ে পড়ে তাহলে আমি কার কাছে সহযোগিতা চাইবো।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন