উন্নয়নে বিষফোড়া ৪২ প্রকল্প

  09-12-2016 10:50PM

পিএনএস: জাতীয় উন্নয়নে ৪২ প্রকল্পকে বিষফোড়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ওমূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এসব প্রকল্পের তালিকা তৈরি করেছে। যার মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৭ প্রকল্প বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছে কমিশন। আইএমইডি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা উদ্যোগ গ্রহণের পরও এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নের অগ্রগতি অতি নগণ্য। ফলে প্রতিবছর এডিপি বরাদ্দের পুরোপুরি অর্থ ব্যয় করা যাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, এমন অনেক প্রকল্প রয়েছে যা শুরু হয়েছে ২০০৬ সালে। এই ১০ বছরে বাস্তবায়নের অগ্রগতি দশমিক শূন্য দুই শতাংশ। তারপরও প্রতিবছর এসব প্রকল্পের জন্য এডিপিতে বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে। অথচ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যথাসময়ে অর্থায়নের অভাবে সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এই অবস্থায় ৫টি প্রকল্প বাদ দেয়াসহ অন্যান্যগুলোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে এ নিয়ে এক জরুরি সভাও হয়েছে। যেখানে এসব স্থবির প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ওই সভার কার্যপত্র থেকে জানা যায়, বাদ পড়া ৭ প্রকল্পের মধ্যে ৪টিই রেল মন্ত্রণালয়ের, বাকি ৩টির মধ্যে নৌ, শিল্প ও সড়ক বিভাগের ১টি করে প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া দুটি প্রকল্প সংশোধন করে বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ও মন্থর গতির প্রকল্প নিয়ে বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিছু প্রকল্প রয়েছে যা অনেক আগে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন আর প্রয়োজন নেই। এজন্য কয়েকটি প্রকল্প এডিপি থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়ে আছে সেসবের গতি বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।

আইএমইডির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্থবিরের তালিকায় বাদ দেয়া ছাড়াও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আরও ৫টি প্রকল্প রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগে ১০টি, সড়ক বিভাগের ৪টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৩টি, স্থানীয় সরকার ৩টি। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রকল্প রয়েছে।

আইএমইডির তথ্যানুসারে এসব প্রকল্পে মন্থর গতির বেশ কয়েকটি কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে। যা গতানুগতিক। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব সভায় একই সমস্যার কথা বলা হয়ে থাকে। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে, বৈদেশিক পরামর্শক নিয়োগে বিলম্ব, অনাপত্তিপত্র প্রাপ্তিতে দেরি ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঠিক সময় সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা না দেয়া।

এছাড়া ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে অনুমোদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব, দক্ষ জনবলের অভাব, ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা, যথাযথ মনিটরিং এবং মূল্যায়নের অভাব, ক্রয় প্যাকেজের প্রক্রিয়াকরণে পুনঃদরপত্র আহ্বান, আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং প্রাপ্তিতে বিলম্ব এবং ঠিকাদারের কাজে শ্লথগতি।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাউদ্দীন বলেন, বিভিন্ন কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা এইসব প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি। তবে যেসব প্রকল্প বাদ যাচ্ছে তা নিয়ে তিনি কথা বলতে চাননি।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন