তীব্র সংকটের মধ্যে বিদেশী কোম্পানীকে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে

  16-01-2017 11:55AM


পিএনএস, এবিসি্দ্দিক: দেশে যখন গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে, তখন বিদেশেী কোম্পানীকে গ্যাস রফতানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানের গ্যাসের বার্ষিক চাহিদার প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হচ্ছে। সর্বশেষ সরকারি হিসাবে গ্যাসের উত্তলোনযোগ্য মজুদ আছে প্রায় ১৩ টিসিএফ(ট্রিলিয়ন ঘন ফুট) যা আগামী ৮/১০ বছর চলতে পারে। এর মধ্যে বিদেশী কোম্পানীকে গ্যাস রফতানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে। প্রায় আট বছর পর নতুন করে এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে। অষ্ট্রেলিয়ার কোম্পানি সান্তোষ প্রথম এই সুযোগ পাচ্ছে। এখন থেকে সমুদ্রে অন্য যেসব বিদেশী কোম্পানির সাথে চুক্তি হবে তাদেরও এই সুযোগ দেয়া হবে।

পেট্রোবাংলাকে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দিয়ে সান্তোষের সাথে চুক্তি করার নীতিগত অনুমোতি দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার সচিবালয়ে কমিটির বৈঠক হয়। দ্রুত সময়ে পেট্রোবাংলা এই চুক্তি করবে। বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লক অর্থাৎ মগনামায় যৌথভাবে খনিজ অনুসন্ধান করবে অষ্ট্রেলিয়ার বহুজাতিক কোম্পানি সান্তোস ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। মগনামায় গ্যাস পেলে তা রপ্তানি করতে পারবে সান্তোষ। উত্তোলিত তেল-গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রির প্রস্তাব দেবে। পেট্রোবাংলা কিনতে না চাইলে দেশের মধ্যেই তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করতে পারবে। আর তৃতীয় পক্ষ না না নিলে রপ্তানি করতে পারে। জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ জ্বালানি ঘাটতির দেশ।

বিদেশী কোম্পানির কখনই গ্যাস রপ্তানির প্রয়োজন হবে না। পেট্রোবাংলাই সব গ্যাস নিয়ে নেবে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য এই সুযোগ রাখা হয়েছে। এব্যপারে ক্যাবের জ্বালানী উপদেষ্টা শামছুল আলম বলেন, গ্যাস রপ্তানির প্রয়োজন না হলেও সুযোগ থাকাতে বিদেশী কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রির দাবি করতে পারে। তাছাড়া বেশি গ্যাস পেলে তখন রপ্তানির প্রশ্ন উঠবে। আর সান্তোষের যে সুযোগ দেয়া হল তা এখন অন্য কোম্পানিগুলোকেও দিতে হবে। ফলে সমুদ্রে যখন বেশি বেশি গ্যাস পাওয়া যাবে তখন দ্রুত মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য বিদেশী কোম্পানি গ্যাস রপ্তানি করতে চাইবে। ২০০৮ সালের উৎপাদন অংশীদারী চুক্তিতে (পিএসসি) বিদেশী কোম্পানির জন্য গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দেয়া হয়েছিল। পরে ২০১২ সালে যখন আবার নতুন করে সমুদ্রের ব্লক ইজারা দেয়া হয় তখন রপ্তানির সুযোগ তুলে দেয়া হয়।

অর্থাৎ বাংলাদেশের গ্যাস কোনভাবেই রপ্তানির সুযোগ ছিল না। ২০০৮ সালের অনুকরণে নতুন করে আবার গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখা হলো। পাইপলাইন নয় তরল বোতলজাত করে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখার বিষয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু ২০১২ সালের পিএসসিতে সে সুযোগও রাখা হয়নি। সমুদ্রে গ্যাস পেলে তা অবশ্যই দেশের মধ্যে বিক্রি করতে হবে।

পেট্রোবাংলা না নিলে দেশের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ ছিল। উচ্চ আদালতেরও গ্যাস রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দিয়ে চুক্তির জন্য পেট্রোবাংলার প্রস্তাব জ্বালানি বিভাগ আইন মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রনালয়ের পর্যালোচনা শেষে জ্বালানি বিভাগ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠায়। কমিটি বুধবার এ প্রস্তাবে অনুমোতি দিয়েছে। পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, জ্বালানি বিভাগ থেকে অনুমোদনের কাগজ পেলেই চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হবে। এরআগে মগনামায় অনুসন্ধান কূপ-২ খনন করতে সান্তোস বাংলাদেশ লিমিটেড (এসবিএল) বাপেক্সকে সাথে নিয়ে যৌথভাবে কূপ খননের প্রস্তাব দেয়। সে অনুযায়ি ৪৯ ভাগের অংশীদার হয়েছে বাপেক্স। এতে বাপেক্স দুই হাজার ৩০৮ মিলিয়ন ডলার বা ২৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন