র‌্যাব ভেঙ্গে দেয়া উচিত: হিউম্যান রাইটস

  20-01-2017 10:37PM

পিএনএস : নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায়ের পর সরকারের উচিত র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ভেঙে দেয়া। কেননা জবাবদিহির অভাবে র‌্যাব একটি দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

সংস্থাটি সাত খুন মামলার রায়ে ফাঁসির বিরোধিতা করে, তা কার্যকর না করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, এ ঘটনার দায় র্যাবের নয়, যারা অপরাধ করেছেন তাদের। ব্যক্তির অপরাধের দায় কখনোই র‌্যাব গ্রহণ করতে পারে না।

বেনজীর আহমেদ শুক্রবার দুপুরে রংপুর শহরের স্টেশন এলাকায় র‌্যাব-১৩-এর প্রধান কার্যালয়ে দরিদ্র শীতার্ত মানুষজনের মধ্যে র্যাবের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এইচআরডব্লিউ বলছে, এ ঘটনার জন্য কেবল র‌্যাব-১১ দায়ী নয়; এর জন্য সরকারও দায়ী। কেননা ‘দায়মুক্তি’র পরিবেশ তারাই তৈরি করেছে। এ ধরনের ঘটনার জন্য র‌্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রশাসনের জন্য কাজ করছে বলে দাবি করছে। সাম্প্রতিক কিছু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পর দেখা গেছে, তাদের অনেকেই মারা পড়ছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র‌্যাব পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি যৌথ বাহিনী। যদিও একজন বেসামরিক কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে নেতৃত্বে থাকেন, কিন্তু র্যাবকে নিয়ন্ত্রণ করে আসলে সেনাবাহিনীই। পুলিশের ভেতরও ক্ষমতার অপব্যবহারজনিত সমস্যা আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরাও র‌্যাবের মতো ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, সাত খুন মামলার রায় র‌্যাব সদস্যদের ‘দায়মুক্তির’ অবসানের দিক থেকে একটি ভালো পদক্ষেপ। যদিও কেবল ক্ষমতাসীন দলের কেউ ভুক্তভোগী হলে এটা ঘটা উচিত নয়।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করেন র‌্যাব-১১-এর কয়েকজন সদস্য। এরপর এই সাতজনের লাশ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নজরুল ইসলামকে হত্যা করার জন্য র‌্যাব-১১-এর কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অবশ্য সাত খুনের মধ্যে নজরুল ছাড়া বাকি ছয়জনকে হত্যা করা হয় কোনো প্রমাণ না রাখার জন্য।

এই হত্যা মামলায় ১৬ জানুয়ারি রায় দেন বিচারিক আদালত। এতে ২৬ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৬ জনের মধ্যে ১৬ জনই র‌্যাবের সদস্য এবং ফাঁসির দণ্ড না হওয়া অপর ৯ জনও র‌্যাবের সদস্য।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন