রাজধানীর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও মশার অভয়ারণ্য

  19-02-2017 08:58PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ঢাকাবাসীর যন্ত্রণার নতুন আরেক নাম মশা। মশার উৎপাতে রাতের ঘুম থেকে শুরু করে আরাম-আয়েশের সব পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম।সন্ধ্যা নামার আগ থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা দলবদ্ধভাবে মানুষকে ঘিরে ধরে কামড়ানো শুরু করে। এ যেন মশার সঙ্গে মানুষের জন্ম জন্মান্তের শত্রুতা!

মসজিদ-মন্দির কোথাও প্রার্থনা করার নিরাপদ সুযোগ নেই। সর্বত্র মশা হামলা করছে। মানুষ থেকে শুরু এমন কোনো প্রাণী নেই, যে প্রাণী মশার কামড় থেকে নিস্তার পায়। গৃহপালিত গরু-ছাগল থেকে শুরু করে ঘরের নিরীহ বিড়ালটিও মশার কামড় থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

নামাজে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা স্থির দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। বে-আড়া মশা তাদের এবাদতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। একদিকে ভনভন করে বিরক্ত সৃষ্টি করছে অন্যদিকে কামড়ে শরীরের বারোটা বাজাচ্ছে। ঘরে-বাইর-অফিস এমনকি যানবাহনেও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না সর্বস্তরের মানুষ।

রাজধানীতে মশার এমন আধিক্য ইতিপূর্বে খুব একটা চোখে পড়েনি। নোংরা-আবর্জনা, কাদা স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ ও নালা-ডোবায় কচুরিপানা সর্বোপরি ড্রেনের পানিবদ্ধতা মশার সৃষ্টির অন্যতম কারণ। এসব নিয়মিত পরিষ্কার না করার এগুলোয় মশার প্রজনন বাড়ছে।

‘মশা মারতে কামান দাগা’র একটি প্রবাদ সমাজে চালু থাকলেও বাস্তবে তা করেও নাকি কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। মশার জন্য ফগার মেশিন থেকে শুরু নানান রকম কৌশল ইতিপূর্বে গ্রহণ করা হলেও কাজের কাজ যে হচ্ছে না, মশার অসহনীয় উৎপাত তারই সাক্ষ দিচ্ছে।

রাজধানীর নালা-নর্দমা ও জলাশয়ে নিয়মিত মশা নিধন কর্মসূচি পালন না করায় ইদানীং মশার উৎপাত জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। নিয়মিত ওষুধ না ছিটানোয় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। তারা এ অসহনীয় অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান।

মশার কামড়ে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি মহল্লায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ভোর রাত থেকে সকাল সাড়ে ৯টা আর বিকেল ৪টা থেকে রাত সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত ডেঙ্গু মশা কামড়ায়। আর এসব মশার উৎপত্তিস্থল ঢাবের খোসা, ফুলের টবের পানি থেকে হয়।

মশার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অনেকে মশারি টানিয়ে রাতের খাবার খান। শিক্ষার্থীরা মশারির নিচে লেখাপড়া করে। কয়েল জ্বালিয়েও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে দিনের বেলায় মশারি টানিয়ে ভেতরে থাকেন। বিশেষ করে বাচ্ছাদের দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মশারির নিচে রাখেন।

মশার অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে রাজধানীবাসীকে রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিতপূর্বক এসব স্থানে মশক নিধন অভিযান জোরদার করতে হবে। নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে মশামুক্ত ঢাকা শহর গড়া সময়ের দাবি।


লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন