বড় কোন হামলার’ প্রস্তুতি নিচ্ছিল জঙ্গিরা: পুলিশ

  23-04-2017 01:39AM

পিএনএস ডেস্ক: ঝিনাইদহে জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির রাসায়নিক উপাদান উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, জঙ্গীরা সম্ভবত বড় ধরণের কোন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

‘যেভাবে এক্সপ্লোসিভ এবং আনুষঙ্গিক উপাদান জড়ো করেছে - তাতে বড় ধরণের কোন অঘটন ঘটানোর প্রস্তুতিই চলছিল’ - বলেন খুলনা পুলিশের ডিআইজি দিদার আহমেদ।

তিনি বলেন, এই বাড়িটিতে এত জিনিস পাওয়া গেছে যে একে একটি ‘বোমা তৈরির কারখানা’ বলা যায়।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ঝিনাইদহের পোড়াহাটি উপজেলায় এ বাড়িটিতে জঙ্গী আস্তানা ছিল এবং ‘৫/৬ জন জঙ্গি সেখানে প্রায়ই আসা যাওয়া করতো’ বলে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমদ এক ব্রিফিংএর বলেছেন।

এ ব্যাপারে এখনো কাউকে ধরতে না পারলেও তারা জেএমবি বা নিউ জেএমবির সাথে যুক্ত ছিল বলে ধারণা করছেন পুলিশেরই কর্মকর্তা।

বাড়িটি থেকে বিপুল পরিমাণ ঘরে তৈরি বোমা, ডেটোনেটর, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, একটি পিস্তল, তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট, একটি প্রেশার কুকার বোম্ব, ২০টি রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার উদ্ধার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। জিহাদি বইপত্রও পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্থানীয় একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম ঐ বাড়িটিতে থাকতেন, তবে সেখানে যে এ ধরণের তৎপরতা চলছিল সেটি তারা ধারণা করতে পারেননি।

পুলিশ সন্দেহ করছে, এ ঘটনার মূল ব্যক্তি হচ্ছেন বাড়িটির মালিক আবদুল্লাহ। স্থানীয় লোকেরা বলেন, বছর পাঁচেক আগে ধর্মান্তরিত হবার পর থেকে পরিবারের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এ বাড়িতে তিনি নিয়মিত থাকতেনও না।

এলাকার বাসিন্দা শওকত আলি বলেন, তিনি তেমন কারো সাথে মিশতেন না। মাঝে মাঝে মোটর সাইকেলে করে দাড়িওয়ালা দু একজন বাড়িটিতে লোক আসা-যাওয়া করতো।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঝিনাইদহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ‘সাউথ প।’

এর আগে শুক্রবার ওই বাড়িতে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম আছে বলে তথ্য পেয়ে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে জেলা পুলিশ ও ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িটি চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছিল।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে বাড়িটিতে কাউকে পাওয়া যায়নি। এরপর ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়, সরিয়ে দেয়া হয় আশপাশের কয়েকটি বাড়ির লোকজনকে। ঢাকা থেকে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

এর আগে গত রাত দশটার দিকে ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমদ জানিয়েছিলেন, বাড়িটিতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে এবং বাড়ির মালিক জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য।

এর আগে গত মাসে সিলেট ও মৌলভীবাজারে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নারী ও শিশু সহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী তাদের কেউ কেউ আত্মঘাতী হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন