মেট্রোপলিটন মেডিকেল হাসপাতালে আইসিইউতে রেখে লাশের চিকিৎসা!

  24-04-2017 06:09PM

পিএনএস ডেস্ক : রাজধানীর নাখালপাড়ার হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে আইভি। গত ১৮ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পাওয়ার পর মহাখালীর মেট্রোপলিটন মেডিকেল সেন্টার নামক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৫ দিন চিকিৎসার পর কোনো উন্নতি না হওয়ায় আইভিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতেই স্বজনরা জানতে পারে্, আইভি মারা গেছে।

স্বজনদের অভিযোগ, আইসিইউতে রেখে মেয়ে বেঁচে আছে দাবি করে স্বজনদের কাছ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কয়েকজন চিকিৎসক।

সোমবার দুপুরে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে উপস্থিত আইভির মা হাসি বেগম এ অভিযোগ করেন।

হাসি বেগম বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দীর ডাক্তার এসে আইভিকে দেখে বলে গেছেন, কমপক্ষে তিন দিন আগে আইভি মারা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, গত তিন দিন আইসিইউতে লাশ রেখে ব্যবসা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’

হাসি বলেন, ‘সোমবার সকালে আইভির অপারেশন হবে মর্মে একটি বোর্ড গঠন করতে হবে বলে ১৫ হাজার টাকা নেয় কর্তৃপক্ষ। আইভি তিন দিন আগে মারা গেলে তারা বোর্ড মিটিং করবে কেন। আর গত তিন দিন ধরে কেন আমাদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নিলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?’

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে তিন দিন ধরে নড়াচড়া করে না। আমি গিয়ে ধরলেই দেখি হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। জিজ্ঞাসা করলেই ডাক্তার বলে, এসি আর ফ্যান ছেড়েছি তো তাই হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সোমাবর সকালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার কথা। পরে সিদ্ধান্ত হয় আজ যেকোনো সময় নিয়ে যাব। এ কথা শোনার পর তারা দুপুরের আগেই লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়। আইভিকে মৃত ঘোষণা করে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ডাক্তার এসে বলে গেছে, ‘তিন দিন হয়ে গেছে রোগীটা মারা গেছে। তারা শুধু শুধু কষ্ট দিচ্ছে।’

আরেক স্বজন বলেন, ‘যখনই স্থানান্তরের কথা বলেছি, তখনই তারা বলেছে মারা গেছে। এর আগে বলেছে, অবস্থা ভালো। পাঁচ মিনিট আগে রিপোর্ট দিয়েছে ভালো, এরপরই বলে মারা গেছে।’

মেট্রোপলিটন হাসপাতালে আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। তারা জানান, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তারা এমন ঘটনা ঘটিয়ে টাকা আদায় করার জন্য লাশ আটকে রাখে।

অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে ফ্রন্ট ডেস্ক এক্সিকিউটিভ রঞ্জন দাস অপু বলেন, ‘কোনো রোগীর অভিভাবক আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।’

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন