ভাস্কর্য সরানো হবে কি না সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতির

  26-04-2017 06:04AM


পিএনএস ডেস্ক: আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনের ভাস্কর্য সরানো হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতি। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড লেবার লেজিসলেশন ফর জাজেস অ্যান্ড জুডিশিয়াল অফিসার্স’ শীর্ষক ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান শেষে আনিসুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি। এখানে যখন ভাস্কর্য বসানো হয় তখন আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তাই সরানো হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতি। ’

আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘যখন ভাস্কর্য নিয়ে কিছু বিপরীত যুক্তি আসছে, তখন আমাদের দেখতে হবে সুপ্রিম কোর্ট অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে যেন কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেটা সবার বিবেচনা করা উচিত। ’

রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসিয়ার আদলে তৈরি ওই ভাস্কর্য সুপ্রিম কোর্টকে কলুষিত করেছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি এটা কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। এই উত্তর থেকে আপনারা বুঝে নিন আমি কী বলতে চেয়েছি। ’

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায়বিচারের প্রতীক জাস্টিশিয়া ভাস্কর্যটি স্থাপনের পর হেফাজতে ইসলাম, ওলামা লীগসহ ধর্মভিত্তিক আরো কয়েকটি সংগঠন এর বিরোধিতা করে। হেফাজতে ইসলাম ভাস্কর্য সরানোর হুমকি দেয়। একপর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একটি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভাস্কর্য সরানোর দাবি তোলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীও ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে মত দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এক বৈঠকে ভাস্কর্য সরাতে বা ওটা যাতে জাতীয় ঈদগাহ থেকে দেখা না যায় সে ব্যবস্থা করতে বলেন।

গতকাল আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যাবজ্জীবন অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড বলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন ওই রায় তিনি পড়ে দেখেননি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পর সেটা পড়ে দেখে সে প্রসেঙ্গ মতামত দেওয়া হবে।

এর আগে বিচারকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু অভিযোগ করেন, শ্রম আদালতের সংখ্যা কম হওয়ায় এবং বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতার কারণে শ্রমিকরা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। তিনি মতিঝিলের শ্রম ভবনে থাকা তিনটি শ্রম আদালতের দুটিকে সরিয়ে নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীতে স্থাপন করার দাবি জানান। এ ছাড়া সিলেট ও রংপুর জেলায়ও শ্রম আদালত স্থাপনের দাবি জানান।

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীতে জায়গা বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেখানে শ্রম আদালত স্থানান্তর করা যায়। রংপুর ও সিলেটেও নতুন আদালত স্থাপন করা যায়।

শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর দাবির পরিপেক্ষিতে আইনমন্ত্রী বলেন, কিছু অসংগতি থাকলে তা সংশোধন করার বিষয়ে বিবেচনা করা যাবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন