আব্দুস সামাদ আজাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  27-04-2017 11:20AM


পিএনএস: বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (বৃহস্পতিবার)। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল মারা যান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক। তিনি স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এবং আব্দুস সামাদ স্মৃতি সংসদ। এই নেতার মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে বিকাল ২টায় আলোচনাসভা ও বাদ আছর স্থানীয় কোর্ট মসজিদে মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু।

এদিকে- আব্দুস সামাদ আজাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে রূহের মাগফেরাত কামনা করে উপজেলা বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া এবং মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আব্দুস সামাজ আজাদ স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব(ভারপ্রাপ্ত) জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র।

তিনি বলেন, এবছর সুনামগঞ্জ জেলার সবকটি হাওরের ধান তলিয়ে যাওয়া আমাদের নেতা প্রয়াত আব্দুস সামাদ আজাদের সূযোগ্য উত্তরসূরি আজিজুস সামাজ আজাদের আহ্বানে আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মধ্যে চাল বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় চাল বিতরণ করেছি। এ বছর প্রয়াত ওই নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় পৌরসভায় তিন হাজার অসহায় মানুষদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হবে।

এছাড়া উপজেলার রাণীগঞ্জ, মীরপুর ও পাইলগাঁও ইউনিয়নে ওই খাদ্য বিতরণ করা হবে। পৌরসভায় বাদ জোহর ওই কার্যাক্রম চালু করা হবে।

অপরদিকে- প্রয়াত নেতার জন্মভূমি ভূরাখালিতে আলোচনাসভা, মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ও হাওর উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান।

আজাদের জীবন:
তৎকালীন সিলেট জেলার জগন্নাথপুর থানার হাওর পাড়ের গ্রাম ভূরাখালিতে ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুস সামাদ আজাদ। তার পিতা শরিয়ত উল্লাহ ও মা সুরজান বেগম। মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ ১৯৪০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৪৬ সালে একই সংগঠনের অবিভক্ত আসামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তার নেতৃত্বে প্রথম জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট থেকে এম.এল.এ নির্বাচিত হন এবং আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক দায়িত্ব করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং সর্বদলীয় রাজনৈতিক জোট এন.ডি.এফ এর দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭০ এর নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগ থেকে এম.এন.এ নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠকের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।

১৯৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এবং জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ১৯৯০ এর গণঅত্থানে এবং ১৯৯৬ এর জনতার মঞ্চের অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিরোধী দলীয় উপ-নেতার দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় সবকয়টি নির্বাচনী এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভায় পররাষ্টমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ছাত্র জীবন থেকে বৃটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বৈরাচারের কোপানলে পড়ে জীবনের বহু বছর তিনি কারাবন্দী ছিলেন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন