তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস!

  23-05-2017 09:39AM

পিএনএস ডেস্ক: ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই করছে। জ্যৈষ্ঠের প্রখর তাপে দেশজুড়ে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে তাঁতিয়ে ওঠা রোদে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়; গরমে রাস্তায় যান ও মানুষের চলাচল কমে যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির আভাস থাকলেও কমছে না গরম।

এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বয়ে যাওয়া দাবদাহ অন্তত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় গরমে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় অস্বস্তিকর গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, তিন দিন ধরে রাজধানীসহ খুলনা, রাজশাহী বিভাগ এবং বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর ও নোয়াখালী অঞ্চলে মৃদু দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৬০ শতাংশের বেশি থাকলে বিরাজমান গরম আবহাওয়ায় অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। হালকা বাতাসে কিছুটা ভালো লাগলেও আর্দ্রতার তারতম্যের কারণে বিকাল থেকে রাতে দাবদাহে অতিষ্ঠ নাগরিকরা। তিনি জানান, তিন-চার দিন এমন আবহাওয়া থাকবে। বৃষ্টির আভাসও রয়েছে কোথাও কোথাও। বৃহস্পতিবারের পর পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকাসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর দেশের অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে। কিন্তু গরম সহজে কমছে না। বৃষ্টি হলে হয়তো তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। কিন্তু বৃষ্টিতে বিরতি পড়লে উষ্ণতার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হবে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চল ছাড়া বৃষ্টিশূন্য হয়ে পড়েছে দেশ। রবিবার সকাল ছয়টা থেকে গতকাল সবচেয়ে বেশি সিলেট ও তেঁতুলিয়ায় ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া রংপুরে ৩ ও ময়মনসিংহ জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১৮ মিলিমিটার। অন্যান্য বিভাগীয় শহরে কোনো বৃষ্টি নেই। রাজধানী ঢাকায় সবশেষ ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল ১৮ মে। এরপর থেকে মৃদু দাবদাহ বইছে এই অঞ্চলে। দাবদাহের মাত্রা খুলনা ও যশোর অঞ্চলে আরও বেশি। গতকাল দেশের এই দুই জেলায় সবচেয়ে বেশি গরম ছিল ।

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, ২৫ অথবা ২৬ মের আগে অন্তত ঢাকায় জোরালো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এই দাবদাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আরেক আবহাওয়াবিদ বলেন, এই সময় দক্ষিণ দিক থেকে আসা বাতাসে প্রচুর জলীয়বাষ্প থাকে। শরীরে তাই প্রচুর ঘাম হয়। বৃষ্টির বিরতি পড়লে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তা ছাড়া এ সময় দিনের ব্যাপ্তিও দীর্ঘ। সূর্যের প্রখরতা বেশি থাকে। এসব কারণে গরমে অস্বস্তিবোধ বেড়ে যায়।

গরমে বাড়ছে রোগ : অতিরিক্ত গরমের কারণে বেশি সমস্যায় পড়ছে শিশুরা। গরমে হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ডাক্তাররা বলছেন— গরমের কারণে শিশুরা ঘামাচি, সর্দিজ্বরসহ ভাইরাল রোগ যেমন- হাম ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া ডায়রিয়াও হচ্ছে। এদিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি শিল্প এলাকার দুটি পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক গতকাল কারখানার সরবরাহ লাইনের পানি পান করে অসুস্থ হয়েছে বলে শ্রমিকরা দাবি করেছে। এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন