তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশঙ্কা, করণীয়

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : প্রচণ্ড গরম আর তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। সূর্যের খরতাপে পুড়ছে পুরো দেশ। এই গরমে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মানুষ দিশেহারা। এই অবস্থায় হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, আরো কয়েকদিন এমন অসহনীয় গরম অব্যাহত থাকতে পারে।বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন সহজে হবে না। রাজধানী ঢাকায় গরমের প্রচণ্ডতায় রাস্তা-ঘাটে লোক চলাচল কমে গেছে। যানবাহনের সংখ্যাও আগের তুলনায় কম।

অসহ্য গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুলেও স্বস্তি নেই। একটা ছায়া খুঁজে নিতে পশুপাখিকে খুব তৎপর দেখা যায়। কর্মব্যস্ত মানুষ একটু ছায়া পেলেই সেখানে ভিড় করছেন। খুব সমস্যা না হলে ঢাকার মানুষ ঘর থেকে খুব একটা বের হচ্ছেন না।

২৩ মে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলা ছাড়া রোদে খা খা করছে দেশ। মাঝেমধ্যে ক্ষণিকের জন্য একটু ছায়া দেখা দিয়ে আবার হারিয়ে যাচ্ছে।

ইটপাথরের শহর ঢাকা। ছায়া যেখানে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। গাছগাছালি আর পাখপাখালির অস্তিত্ব যেখানে স্বপ্নমাত্র। রাজধানীর পানির আধারগুলো নেই। অনেক আগেই ১৬টি খাল গিলে খেয়েছে দখলদাররা। ফরমালিন মার্কা জনপ্রতিনিধিরা সেগুলো উদ্ধারে প্রতিশ্রুতি দিলেও সফল নয়।

গরমের আধিক্যে পেটের পীড়াসহ ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।গরমের উত্তাপ দেথে রক্ষা পেতে রাস্তার পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনেকে শরবতের নামে যা খাচ্ছে, তা শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ। তার পরও অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। নিম্নআয়ের মানুষ এ বড় খরদের।

গরম থেকে রক্ষা পেতে বিশুদ্ধ বাতাস দরকার, যার অভাব প্রকট। পর্যাপ্ত পানি পান ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ জরুরি। শরীর ঠাণ্ডা রাখে-এমন খাবার শরীরের জন্য সহায়ক। ভেজা কাপড় দিয়ে শিশুদের ঘন ঘন শরীর মুছে দেয়া যেতে পারে।

ডিম-গোশত এড়িয়ে স্বাস্থ্যসচেতন অনেকে খাবারের তালিকায় আম-ডাল, করলা, পেঁপের ভর্তা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। গ্লুকোজ ও লেবুর শরবত খাচ্ছেন কেউ কেউ। শরীরে ঠাণ্ডাভাব বজায় রাখতে কচিডাবও সহায়ক ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি তালের কচি শাঁস এক্ষেত্রে ভালো কাজ দিচ্ছে।

বৃষ্টি না হলে রাজধানীসহ দেশের তাপমাত্রা আরো বাড়বে বলে আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন। চলতি মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস। এমনটা হলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে।

২৮-২৯ মে রমজান শুরু হবে। এই অবস্থায় বৃষ্টি না হলে আর লোডশেডিংয়ে না কমলে রোজাদারদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতে হবে। রোজাদার, শিশু ও বৃদ্ধদের কথা মাথায় রেখে লোডশেডিং মুক্ত রমজান উপহার দেয়া সময়ের দাবি।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/জে এ মোহন