চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

  29-05-2017 06:32PM

পিএনএস ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে ‘মোরা’। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে এটি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আজ সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় মোরা উপকূল অতিক্রমের সময় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্ব ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে কাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে আজ বিকেল থেকেই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে আজ সকাল থেকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে মেঘলা ও থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করছে। রোববার দুপুরে ও রাতে বিভাগের কয়েকটি জেলায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও বরিশালে হয়নি।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ইমরুল কায়েস আজ সকালে জানান, নিম্নচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর কয়েক দিন ধরে কিছুটা উত্তাল ছিল। কিন্তু আজ সকালে তা আরও উত্তাল হওয়ায় সাগরে মাছ ধরা ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসছে।

সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং পরদিন তা ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’য় রূপ নেয়। পরে সেটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে।

পিএনএস: জে এ মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন