ডেসটিনির রফিকুল আমীন জামিন পেলেন

  22-06-2017 08:08PM

পিএনএস ডেস্ক : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন দৈনিক ডেসটিনি সম্পাদক, বৈশাখী টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। গত বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি মামলায় বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীম্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন মঞ্জুর করেন।

মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের জামিনের খবরে বুধবার বিকেল থেকে ও গতকাল দিনভর দৈনিক ডেসটিন. বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ডেসটিনি গ্রুপের ৪৫ লাখ ক্রেতা-পরিবেশকের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। দৈনিক ডেসটিনি অফিসসহ সারাদেশে মহান আল্লাহর কাছে শোকরানা আদায় ও মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা এবং ন্যায়বিচার পাওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

দৈনিক ডেসটিনি সম্পাদক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের জামিনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাফর ওয়াজেদ। তিনি এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সংবাদপত্র শিল্পকে রক্ষায় এ পদক্ষেপ সন্তোষজনক, আমরা আশা করব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত না হয় সেই পদক্ষেপই নেবেন। অপরদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, দৈনিক ডেসটিনি সম্পাদকের এ জামিন হওয়াটা জরুরি ছিল এ জন্য যে সাংবাদিক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ বেতনভাতা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এ জামিনের কারণে তাদের আর বেতনভাতা পেতে অসুবিধা হবে না।

বৈশাখী টেলিভিশনের উপদেষ্টা সিরাজাম মুনির এই জামিন দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, আইনের শাসনের জয় হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ডেসটিনির ৪৫ লাখ ক্রেতা-পরিবেশক প্রাণ খুলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন, ক্রেতা-পরিবেশকরা এতদিন রফিকুল আমীনের জামিনে মুক্তির প্রতীক্ষায় ছিলেন। এ জামিনের মধ্য দিয়ে তাদের সে আশা পূর্ণ হলো।

তারা কেউ বিনিয়োগ ফেরত চাননি, এতদিন শুধু মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসাইনের মুক্তি চেয়েছিলেন। সব সময় বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, ডেসটিনির এ দুজন মালিক বেঁচে থাকলে তারা লগ্নীকৃত অর্থ ফেরত পাবেন। তিনি আরো বলেন, ক্রেতা-পরিবেশকসহ আমরা কঠিন মানবেতর জীবনযাপন করেও এমডি ও চেয়ারম্যানের জন্য দোয়া মাহফিল করেছি মহান আল্লাহ যেন তাদেরকে সুস্থ রেখে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন, রাব্বুল আলামীন আমাদের সে কথা শুনেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।

দৈনিক ডেসটিনির কো-অর্ডিনেটর মোশাররফ হোসেন সম্পাদক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের জামিনে মুক্তি পাওয়ায় আইনের শাসন তথা বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, তার এই মুক্তির দাবিটি ছিল সাংবাদিকদের প্রাণের দাবি, এ জন্য আমরা খুশি। তিনি আরো বলেন, ডেসটিনি গ্রুপ সততা ও সত্যের পথে ছিল বলেই আজ এ বিজয় অর্জিত হয়েছে। মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসাইন কারো অর্থ আত্মসাৎ করেননি, তারা চেয়েছেন এদেশের বেকার মানুষের কর্মসংস্থান। তিনি আরো বলেন, খুব অল্প সময়ে ৪৫ লাখ মানুষকে কর্মমুখী করা একটা বিরাট ব্যাপার, আর তারা সেটা করতে পেরেছিলেন।

আমরা সাংবাদিকরা দেখেছি চার বছরের অধিক সময় মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসাইনের জন্য সবাই দোয়া চেয়েছেন, তাদের মুক্তি চেয়েছেন। এতেই বলা যায় তারা কত ভালো মানুষ ছিলেন। এ জন্য আমরা আল্লাহর কাছে শোকরানা আদায় করি।

ডেসটিনি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতা-পরিবেশক ঐক্য ফোরামের আহ্বায়ক আযম আলী বলেছেন, সরকার আমাদের প্রতি ন্যায়বিচার করেছে, আমাদের এমডি ও চেয়ারম্যানকে জামিনের মাধ্যমে মুক্তি দেয়ায় দেশে আইনের শাসনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেছে। আমরা সরকার ও বিচার বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

সারাদেশে আনন্দের বন্যা
দৈনিক ডেসটিনি সম্পাদক, বৈশাখী টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল আমীন এবং ডেসটিনি-২০০০ লিঃ-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনের জামিনের খবরে সারাদেশে ডেসটিনির লাখ লাখ ক্রেতা-পরিবেশকের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। দেশের কোথাও কোথাও শোকরানা দোয়ারও আয়োজন করা হয়।

আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, শীর্ষ দুই কর্মকর্তার জামিনের খবরে চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডেসটিনির নেট অফিসগুলো ক্রেতা-পরিবেশকদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে। নেট অফিসগুলোতে ক্রেতা-পরিবেশকরা মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেন। মিষ্টিও বিতরণ করা হয়। শীর্ষ কর্মকর্তাদের জামিন দেয়ায় সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে তারা অভিনন্দন জানান এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। তারা বলেন, দৈনিক ডেসটিনি সম্পাদক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও ডেসটিনি-২০০০ লিঃ-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনের জামিন হওয়ায় দেশে আইনের শাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরো বেড়ে গেল। আমরা বিশ্বাস করি সরকার ডেসটিনির ৪৫ লাখ গ্রাহকের কর্মসংস্থানের বিষয়টি সুনজরে দেখবে।

খুলনা বিভাগের নেট অফিসগুলোতেও ডেসটিনির গ্রাহক ও ক্রেতা-পরিবেশকরা তাদের এমডি ও চেয়ারম্যানের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভিড় করেন। এ সময় আনন্দে অনেকে কাঁদতে থাকেন। তারা সরকারের সুদৃষ্টির প্রশংসা করেন। এ সময় ডেসটিনির ক্রেতা-পরিবেশকরা বলেন, আমরা অর্থ ফেরত চাই না, আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের মুক্তি চাই এবং তাদের সাথে কাজ করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার সহযোগিতা করলে এখন আমাদের ৪৫ লাখ গ্রাহক ও ক্রেতা-পরিবেশক আবারো বিশাল কর্মীবাহিনীতে পরিণত হতে পারেন।

রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধিরা জানান, রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলায় অবস্থিত ডেসটিনির নেট অফিসগুলো গতকাল ডেসটিনির গ্রাহক ও ক্রেতা-পরিবেশকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। এ সময় তারা আনন্দ ও উল্লাস প্রকাশ করে এলাকাবাসীর মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন। তারা সরকারের সুদৃষ্টিতে সন্তোষ প্রকাশ এবং আইনের শাসনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার এখন আমাদের প্রতি ন্যায়বিচার করেছে, আমরা আশা করি ডেসটিনি গ্রুপের সংকট নিরসনে সরকার ৪৫ লাখ গ্রাহকের রুটি-রুজির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

বরিশাল বিভাগের প্রতিনিধিরা জানান, গতকাল বরিশাল বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলোতে ডেসটিনির গ্রাহক ও ক্রেতা-পরিবেশকরা সকাল থেকে ভিড় করতে থাকেন। তারা শীর্ষ কর্মকর্তাদের জামিনে মুক্তি পাওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান। ডেসটিনির এমডি ও চেয়ারম্যানের জামিনের সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়া ও গণযোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর সারাদেশে ডেসটিনির ৪৫ লাখ ক্রেতা-পরিবেশক ও বিনিয়োগকারী আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তারা বিজ্ঞ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট বিচারকদের অভিনন্দন জানান।

সিলেট বিভাগের প্রতিনিধিরা জানান, ডেসটিনির এমডি ও চেয়ারম্যানের জামিনের সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়া ও টেলিভিশনে প্রচার হওয়ার পর সারাদেশে ডেসটিনির ৪৫ লাখ ক্রেতা-পরিবেশক ও বিনিয়োগকারী আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। মিষ্টি বিতরণ করেন। ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তারা বিজ্ঞ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট বিচারকদের অভিনন্দন জানান এবং তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করেন। তারা বলেন, আমরা অর্থ ফেরত চাই না, আবারো কর্মযজ্ঞে মেতে উঠতে চাই। আমরা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই। আমাদের পরিবার-পরিজন গত ৪ বছর মানবেতর জীবনযাপন করেছেন।

একইভাবে জামিনের এ শুভ সংবাদে সারাদেশে ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটররা মিষ্টি বিতরণ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন