ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা : ট্রেন যাত্রায় স্বস্তি, বাস ছাড়েনি নির্দিষ্ট সময়ে

  24-06-2017 09:00AM


পিএনএস ডেস্ক: ভিড়, কর্মব্যস্ততা আর চিরচেনা যানজটের কবল থেকে কয়েক দিনের জন্য মুক্তি পেতে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা। নাড়ির টানে বাড়ির পথ ধরেছে মানুষ।

ছুটি শুরু হয়ে যাওয়ায় গতকাল শুক্রবার রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছিল। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

ট্রেনের সময়সূচি ঠিক থাকায় যাত্রীরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সড়কপথের যাত্রীদের। মহাসড়কগুলোতে গাড়ির চাপ বেশি থাকায় বাস টার্মিনালগুলো থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে গাড়ি ছেড়েছে দেরিতে। মহাসড়কে গাড়ির গতি ছিল ধীর। বিভিন্ন স্থানে যানজটও দেখা গেছে। ব্যবস্থাপনায়ও ছিল বিশৃঙ্খলা।

আর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকেই ছিল যাত্রীদের বাড়তি চাপ। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাওয়ায় সকাল ১১টার মধ্যে অন্তত ৩০টি লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের আগেই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। কোনো কোনো লঞ্চ ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নেওয়ার পরও ছাড়তে বিলম্ব করে। পুলিশ ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে কিছু লঞ্চ ছেড়ে গেলেও মাঝ নদীতে থামিয়ে রেখে নৌকা ও ট্রলারে করে যাত্রী উঠিয়েছে।

গতকাল দিনভর কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। বগির ভেতরে আসন না পেয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে চড়ে বসে ট্রেনের ছাদে। সকালের ট্রেনগুলোতে যাত্রীর চাপ ছিল কিছুটা কম, দিন বাড়ার সঙ্গে চাপও বাড়ে। দু-একটা ট্রেনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের হেরফেরও হয়েছে।

কমলাপুর থেকে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়ায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। দুপুরে কমলাপুরে ঘরমুখো যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব ট্রেন সঠিক সময়ে যাত্রা করেছে। বিভিন্ন রুটের ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, সঠিক সময়ে ট্রেনে যেতে পারছে। এ জন্য (তারা) সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ’

বিকেল ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন থেকে একটি বাদে সব (২৭টি) ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য রংপুর এক্সপ্রেস কিছুটা দেরিতে ছেড়েছে। রেল কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ঝুঁকি নিয়ে রেলের ছাদে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে নেই, এর পরও ঈদের সময় মানুষ ছাদে ওঠে। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি, যাত্রীদের গায়ে হাত বুলিয়ে বোঝাতে, যেন তারা ছাদে না ওঠে। ’ পৌনে ৩টায় স্টেশনে অপেক্ষমাণ সুবর্ণ এক্সপ্রেসের একটি বগিতে উঠে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।

স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, প্রতিদিন প্রায় ৫০টির মতো ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। আজও (শুক্রবার) নির্ধারিত সময়ে প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। দু-একটি ট্রেনে ১০-২০ মিনিট দেরি হয়েছে।

তবে গতকাল সকালে কিছু রুটের বাস রাজধানীর টার্মিনালে আসতে দুই-আড়াই ঘণ্টা দেরি হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। যদিও বাস মালিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, অত দেরি না, সামান্য দেরি হয়েছে। শেষ সময়ে কাউন্টারগুলোতে যারা টিকিট কিনছে, তাদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ করেছে অনেকে। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর তিনটি আন্ত নগর বাস টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে পরিবহন কর্মচারীরা জানায়, ফেরিঘাট, মহাসড়কে যানজট থাকার পরও অতিরিক্ত গাড়ি আগে থেকেই ঠিক করে রাখায় দুই-একটি ট্রিপে আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে গাড়ি ছেড়েছে। কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকালে দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের গাড়ি নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়েছে। যদিও যশোর, খুলনা, বরিশাল, কুষ্টিয়ার উদ্দেশেও দূরপাল্লার গাড়িগুলো আধা এক থেকে দুই ঘণ্টা দেরিতে রাজধানী ছাড়ছে। তবে ঢাকার আশপাশের জেলা ও নগদে টিকিট বিক্রি কাউন্টারগুলো যাত্রীর আশায় নির্দিষ্ট সময়েও গাড়ি ছাড়েনি। ফলে টিকিট কেটে বাসে বসে থাকা যাত্রীদের হৈচৈ করতে দেখা যায়।

গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গগামী হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মোশাররফ বলেন, সকাল ১১টা পর্যন্ত গাড়ি নির্দিষ্ট সময়ে টার্মিনাল ত্যাগ করছে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাঙ্গাইল, কালিয়াকৈর ও চন্দ্রা এলাকায় গাডির চাপ বেশি থাকায় গাড়িগুলো ঢাকায় ফিরতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে গাড়ি ছাড়ছে।

শ্যামলী পরিবহনের কর্মচারী আব্দুস সোবহান বলেন, পাটুরিয়ায়-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে বেশ যানজট রয়েছে। গাড়ি সেখানে আটকা পড়ায় টার্মিনালে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। অতিরিক্ত গাড়ি আগে থেকেই ঠিক করে রাখায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যের উদ্দেশে গাড়ি ছাড়া গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির সময়ে একটু হেরফের হচ্ছে।

মহাখালী আন্ত জেলা বাস মালিক সমিতির নেতা আবুল কালাম গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ির চাপ একটু বেশি। ফলে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর পর গাড়ি ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। ’ এই টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের বাসেও একই চিত্র ছিল।

চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জেলার বাস ছাড়ে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে। সায়েদাবাদ আন্ত জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম গতকাল বিকেলে জানান, সকাল ১১টা পর্যন্ত মেঘনা ব্রিজের গোড়ায় কিছুটা যানজট ছিল। একটু পর তা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গাড়ির চাপ বেশি থাকায় ঠিক সময়ে কোনো বাস টার্মিনালে ফিরতে পারেনি। ফলে টার্মিনাল থেকেও প্রতিটি বাস ছেড়ে যেতে একটু দেরি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর ভেতরে অনেকটা ফাঁকা চেহারা দেখা গেলেও ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সব মুখেই গতকাল ছিল মানুষের স্রোতে ভরা। সেই সঙ্গে ছিল যানজট। নৌপথের যাত্রীদেরও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সদরঘাটে পৌঁছতে হয়েছে তীব্র যানজট ঠেলে। মহাসড়কেও বিভিন্ন জায়গায় বাসযাত্রীদের দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে। আবার অনেক এলাকায় ঈদের সময়ের তুলনায় এবার যানজট অনেকটা কম দেখা গেছে।

গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটার যানজট : গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট ছিল। দুপুরে কিছুটা কমলেও বিকেলে তা আবার বেড়ে যায়। ভবেরচরে আটকে থাকা যাত্রী সোহাগ বলেন, ‘সকাল থেকে এক জায়গাতেই আটকে আছি। গাড়ি নড়ছে না। ’ মহাসড়কের গজারিয়া অংশের মেঘনা সেতু থেকে বাউশিয়া পর্যন্ত যানজট। বুধবার সকালে মেঘনা সেতুর ওপর একটি ট্রাক বিকল হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এরপর তা কখনো কিছুটা কমে, আবার বাড়ে। যানজট নিরসন হচ্ছে না।

গজারিয়া থানার ওসি মো. হেদায়েতুল ইসলাম ভূইয়া জানান, দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত সড়ক চার লেন হলেও মেঘনা ও গোমতী সেতুতে দুই লেন। আবার সেতুতে টোল দেওয়া যায় একসঙ্গে আটটি গাড়ির। টোল প্লাজায় টোল দিয়ে যখন আটটি গাড়ি দুই লেনের সড়কে আসে তখন এমনিতেই যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঘাটে আটকা ৭০০ পরিবহন : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ঘাটের পাকিং ইয়ার্ড, বিআইডাব্লিউটিসি, বিআইডাব্লিউটিএ ও পুলিশ ফাঁড়ির প্রাঙ্গণ ছিল যানবাহনে ঠাসা। এমনকি মহাসড়কের এক পাশ ধরে যানজটের দীর্ঘ সারি চলে যায় কয়েক কিলোমিটার দূরের মাওয়া চৌরাস্তা পর্যন্ত। পারাপারের অপেক্ষায় ঘাটে আটকা পড়ে সাত শতাধিক যানবাহন। বিকেলের দিকে চাপ কিছুটা কমে। ১৮টি ফেরি দিয়ে এসব যানবাহন পারাপারে হিমশিম খেতে হচ্ছে ফেরি কর্তৃপক্ষকে। লঞ্চ ও সি-বোট ঘাটেও ছিল ভিড়।

বিআইডাব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ জি এম শাহ খালেদ নেওয়াজ বলেন, চারটি রো রো ফেরিসহ ১৮টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। আজ (শুক্রবার) যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ ছিল। প্রায় আড়াইগুন যানবাহন পারাপার করা হয়েছে। ফেরিতে লোডিং-আনলোডিংয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ধীরগতি : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বৃহস্পতিবার রাত থেকে গাড়ির চাপ অনেক বেড়েছে। ফলে গাড়িগুলো চলেছে ধীরগতিতে।

গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, বিগত বছরের তুলনায় মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে গাড়ির চাপ ছিল অনেক। ফলে গাড়ি কম গতিতে চলেছে, তবে কোথায় যানজট হয়নি। ঈদের কয়েক দিন আগে সরকারি ছুটি হওয়ায় মানুষের চাপ একবারে পড়েনি।

উত্তরবঙ্গে ঢুকতে ১৫ কিলোমিটার যানজট : সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোল চত্বর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় গাড়ির দীর্ঘ যানজট ছিল গতকাল। ভোর থেকেই এই মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রায় ২৪ জেলার যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করে। ঢাকা থেকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের বাড়তি গাড়ির চাপ ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী অতিরিক্ত যানবাহনের কারণেই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশের স্থানীয় পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈদের সময় বাড়তি যানবাহনের চাপের কারণেই যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। আর রাস্তায়ও কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

কাঁঠালবাড়ীতে মানুষের ঢল : মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ঘাটে গতকাল বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ঢল নামে। হাজার হাজার যাত্রী ফেরি, লঞ্চ-স্পিডবোটে শিমুলিয়া থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে নামে। কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ১৮টি ফেরির সঙ্গে চলছে নিয়মিত ৮৭টি লঞ্চ ও দুই শরও বেশি স্পিডবোট। বিআইডাব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ী ঘাট ম্যানেজার আ. সালাম মিয়া বলেন, নদীতে স্রোত বেশি থাকায় মাঝ নদী থেকে শক্তিশালী জাহাজ দিয়ে ফেরি পারাপার করানো হচ্ছে।

বিআইডাব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ী টার্মিনাল ইন্সপেক্টর এ বি এস মাহমুদ বলেন, কোনো লঞ্চ বা স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। আবহাওয়া খারাপ হলে লঞ্চ, স্পিডবোট বন্ধ রেখে যাত্রীদের ফেরিতে পারাপারের ব্যবস্থা করা হবে।

ছয় দিন ভারী যানবাহন বন্ধ : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতকাল থেকে ছয় দিন ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার পরও মহাসড়কের দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট ছিল।

সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হুমায়ন কবির খন্দকার দাউদকান্দি টোলপ্লাজা পরিদর্শন করতে এসে বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে সে জন্য শুক্রবার থেকে ঈদের আগে তিন দিন ও পরে তিন দিন ভারী যানবাহন ট্রাক, কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে নিত্যপণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করবে।

ভোলায় পন্টুন ডুবে দুর্ভোগ : ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের পন্টুন মেঘনা নদীর পানিতে ডুবে গেছে। ডুবন্ত পন্টুন দিয়ে গতকাল দুপুরে একটি যাত্রীবাহী বাস ফেরিতে ওঠার সময় পন্টুনেই আটকে পড়ে। এতে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরিতে সব ধরনের যানবাহন ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এ ফেরিঘাটের পন্টুন মেরামত না করায় প্রতিবছরই ঈদে ঘরমুখো হাজারো যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়। ইলিশা ফেরিঘাটের পাশেই বিআইডাব্লিউটিএর স্থাপিত আরেকটি পন্টুনেরও প্রায় একই অবস্থা। ওই পন্টুনে লঞ্চ ও সি-ট্রাকের যাত্রী ওঠানামা করে।

ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরির ব্যবস্থাপক বিআইডাব্লিউটিসি কর্মকর্তা আবু আলম বলেন, জোয়ারের পানিতে পন্টুনের র্যাম ডুবে যায়। ডুবন্ত পন্টুন দিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস ওঠার সময় সেটি আটকে যায়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নদীতে ভাটা পড়লে বাসটি পন্টুনে উঠে যাবে। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি : পাটুরিয়া ফেরিঘাটে সারা দিনই ছিল যানবাহনের তীব্র চাপ। বিকেল ৫টায় বিআইডাব্লিউটিসির হিসাবে ১৫০টি বাস এবং ২৫০টি ছোট গাড়ি ফেরি পারাপারের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল।

বিআইডাব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান জানান, ১৮টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯টি রয়েছে বড় রো রো ফেরি, যা একবারে ৪০টি ছোট গাড়ি কিংবা ২৪টি বড় বাস পারাপার করতে পারে। সন্ধ্যা নাগাদ আরেকটি রো রো ফেরি বহরে যোগ দেবে।

পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটেও ছিল প্রচণ্ড ভিড়। বাসের যাত্রীরা মূলত লঞ্চে পারাপার হয়ে থাকে।বিআইডাব্লিউটিসির পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম জানান, পর্যাপ্ত বয়া না থাকায় এমভি শাপলা ও এমভি তিতাসকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমভি নিপুনের গায়ে নাম লেখা না থাকায় একই অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ভোলা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মাদারীপুর ও দাউদকান্দি প্রতিনিধি)

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন