ঈদে রাজধানীতে ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন

  25-06-2017 02:36AM



পিএনএস ডেস্ক: ঈদুল ফিতর উদযাপন নির্বিঘ্ন ও আনন্দময় করতে রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে ১০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য শুধু জাতীয় ঈদগাহেই থাকছে তিন হাজার পুলিশ সদস্য। এছাড়াও র‌্যাবের রাজধানীর ৫টি ব্যাটালিয়ন থেকেও পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। যা ঈদের একসপ্তাহ পরও কার্যকর থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার ঈদের নিরাপত্তা বিন্যাসে ঈদের জামাত, মার্কেটে কেনাকাটা, ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও ঈদের ছুটিতে চুরি-এ চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ১০ হাজার পুলিশ সদস্য নগরজুড়েই টহলে থাকবেন। পাশাপাশি র‌্যাবের পাঁচটি ব্যাটালিয়নের প্রায় দুই হাজার সদস্যকে বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হচ্ছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও মাঠে থাকবেন। বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোয় থাকবে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানান, গত বছর গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলার ঘটনার অভিজ্ঞতায় এবারের ঈদের জামাতগুলোকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। শুধুমাত্র জাতীয় ঈদগাহকে ঘিরে থাকছে ৩ হাজার পুলিশ। আর পুরো রাজধানীতে থাকছে ১০ হাজার পুলিশ সদস্য। ঈদ ও ঈদ পরবর্তী নিরাপত্তায় তারা কাজ করবে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঈদ ঘিরে প্রতিবছরের মতো এবারো বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি। ঈদ মার্কেটের কেনাকাটা ও নগরবাসীর ঘরে ফেরা নিরাপদ করতেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে র‌্যাবের সদস্যরা তাদের দ্বায়িত্বপালন শুরু করেছেন। রাজধানীতে পাঁচটি ব্যাটালিয়ন মিলে প্রায় ২ হাজার র‌্যাব সদস্য থাকছে বাড়তি নিরাপত্তায়।

জানা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শেষ মুহূর্তে লোকজন ছুটছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। তাদের চলাচলের মধ্যেই ছিনতাইকারী ও পকেটমাররা ওৎপেতে থেকে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর প্রতিটি এলাকার সড়কগুলোতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে সবগুলো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেন নির্বিঘ্নে বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশনে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ওইসব সড়কে পুলিশের গাড়ি, মোটরসাইকেল ও পায়ে হেঁটে টহল জোরদার করা হয়েছে। ঈদের পরও ঢাকায় ফেরা লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ টহল ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

এজন্য থানা পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের রিজার্ভ ফোর্সের বিপুলসংখ্যক সদস্য। তারা ঈদ-পরবর্তী সময় পর্যন্ত নিরাপত্তায় কাজ করবে। প্রতিটি জোনের ডিসিরা সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেলে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।

পুলিশের সতর্কতামূলক পরামর্শ
এদিকে ঈদের ছুটিতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই প্রতিরোধে নগরবাসীকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এর মধ্যে আছে, ঈদের ছুটিতে বাসা ছাড়ার আগে জানালা-দরজা ভালোভাবে বন্ধ করে একাধিক তালা লাগানো, দরজা-জানালা ভাঙা থাকলে তা আগেই মেরামত করা, গ্যাসের চুলা ভালোভাবে বন্ধ রাখা এবং প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খোঁজ খবর রাখা। ফ্ল্যাট বাড়িগুলোতে সিসিটিভি থাকলে তা সচল রাখা এবং সম্ভব হলে দরজায় নিরাপত্তা অ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা। বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে রাখতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটিতে রাজধানীতে দামি প্রাইভেটকার ও যন্ত্রাংশ প্রায়ই চুরি হয়। এ ধরনের ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে একাধিক দারোয়ান রাখতে হবে। গাড়ি চুরি ঠেকাতে অটোমেটিক অ্যালার্ম স্টিয়ারিং লক এবং জিপিএস ব্যবহারের জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রাস্তায় চলাচলের সময় যানবাহনের জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে হবে। অপরিচিত কারো সঙ্গে গাড়ি ভাগাভাগি করে চলাচল না করতেও বলা হয়েছে। ট্যাক্সি বা অটোরিকশা ভাড়া নেওয়ার সময় রেজিট্রেশন নাম্বার, ড্রাইভারের নাম-ঠিকানা নিয়ে স্বজনদের কাছে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে রাখতে বলা হয়েছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন