মামলা প্রত্যাহারের পর যা বললেন তিনি

  23-07-2017 02:47PM

পিএনএস ডেস্ক : বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করে কোনো অপরাধ করেননি বলে মন্তব্য করেছেন বাদী সৈয়দ ওবায়েদুল্লাহ।

তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলাটি আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ওবায়েদুল্লাহ। পরে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার প্ররোচনায় মামলা করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে—এ প্রসঙ্গে ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়। নিজ উদ্যোগেই মামলা করেছিলাম।’ মামলা প্রত্যাহারে দলীয় হাইকমান্ডের চাপ ছিল কি না, তা জানতে চাইলে ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিলাম। নিজে থেকেই তা প্রত্যাহার করেছি।’

বঙ্গবন্ধুর ছবি (পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা ছবি) ‘বিকৃত’ করে ছাপানোর অভিযোগ করা হয়েছিল মামলায়। এখন বলছেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ভুলটা কীভাবে হলো? এই প্রশ্নের জবাবে ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘ছবিটি যে পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা ছিল, তা জানতাম না। মামলা হওয়ার পর আদালতে মূল ছবি জমা পড়ার পর বিষয়টি জেনেছি। ভুল বোঝার পর মামলা প্রত্যাহার করেছি।’

দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার পর এখন কী করবেন, জানতে চাইলে ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘মামলা করে আমি কোনো অপরাধ করিনি। আমি জাতির জনকের ছবির যথাযথ সম্মানের জন্য মামলা করেছিলাম। আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমি যথাযথ জবাব দেব। আশা করি, আমি নেত্রীকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বোঝাতে সক্ষম হব।’

মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আজ আদালতে আবেদন করেন ওবায়েদুল্লাহ। শুনানি শেষে বরিশালের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম অমিত কুমার দে আবেদন মঞ্জুর করে মামলা খারিজ করে দেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বিকৃত’ ছবি ছাপানোর অভিযোগে ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে গত ৭ জুন বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন ওবায়েদুল্লাহ। তারিক সালমন তখন বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত জুনের প্রথম সপ্তাহে তারিক সালমনকে বরগুনা সদর উপজেলায় বদলি করা হয়।

মানহানির মামলায় বিচারক ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে তারিক সালমনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করেন। গত বুধবার ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনের আবেদন করেন তারিক সালমন। আদালত প্রথমে তা নামঞ্জুর করেন। পুলিশ ইউএনওর দুই হাত শক্ত করে ধরে আদালতের হাজতখানায় নেয়। অবশ্য দুই ঘণ্টা পর তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়।

তারিক সালমনকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় জনপ্রশাসনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। মামলার বাদী ওবায়েদুল্লাহকে গত শুক্রবার দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

পুলিশ সূত্র জানায়, গাজী তারিক সালমনকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় বরিশাল আদালত পুলিশের ছয় সদস্যকে গতকাল শনিবার প্রত্যাহার করা হয়েছে। দাঁদের একজন উপপরিদর্শক (এসআই), দুজন টিএসআই ও তিনজন কনস্টেবল পদমর্যাদার। তাঁদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তবে বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মুখপাত্র সহকারী কমিশনার মো. নাছির উদ্দিন বলছেন, প্রশাসনিক কারণে ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন