সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় গরু, শঙ্কায় খামারিরা

  15-08-2017 05:19PM

পিএনএস ডেস্ক : কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ভারত থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে বৈধ ও অবৈধ উভয়পথে গরু আসছে। অবৈধপথে বা চোরাচালানের মাধ্যমে কত পশু আসছে, তার হিসাব না থাকলেও বৈধ পথে আসা পশুর হিসাব রয়েছে কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে।

এ হিসাবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ১ হাজার ৬৭০টি গরু ও ৩২০টি ছাগল এসেছে। এ সংখ্যা বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। কোরবানির জন্য যশোর জেলায় ৬৮ হাজার ২৫টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। এর বিপরীতে জেলায় চাহিদা রয়েছে ৫৫ হাজার পশুর। চাহিদার তুলনায় দেশীয় পশুই জেলার বেশি রয়েছে। এরপরও ভারতীয় গরু ব্যাপকহারে আসা শুরু হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন খামারিরা।

যশোরের পশ্চিমপ্রান্ত জুড়ে ভারত সীমান্ত। এ সীমান্তের বেশিরভাগ স্থান জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। তবে যেসব স্থানে বেড়া দেয়া নেই, সে সব পথে অনায়াসে গরু হেঁটে বাংলাদেশে চলে আসছে। আর যেখানে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে, সেখানে নেয়া হয় ভিন্ন কৌশল। গরু-ছাগল মাঠে চরানোর সময় সুযোগ বুঝে গেট দিয়ে পার করে দেয়া হয়।

অবশ্য এ জন্য বিজিবি ও বিএসএফকে টাকা দিতে হয়। বৈধ পথে গরু, ছাগল ও ভেড়া আনার জন্য বেনাপোলে কয়েকটি খাটালের (পথের) অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্টমন্ত্রণালয়। পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা-এই চারটি খাটাল দিয়ে সীমিত সংখ্যক গরু আসছে। বছর তিনেক আগে পুটখালীসহ এসব খাটাল হয়ে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার গরু আসত। কিন্তু পরবর্তীতে ভারতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএসএফের কঠোর হস্তক্ষেপে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমানে সেই অবস্থার অবসান হয়েছে। এখন প্রতিদিনই বৈধ ও অবৈধ পথে বিপুল সংখ্যক গরু আসা শুরু হয়েছে। যা বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। যশোরের নাভারণ পশু শুল্ক করিডোর সূত্রে জানা যায়, গত ১লা আগস্ট থেকে ৭ই আগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহে বেনাপোলের বিভিন্ন করিডোর দিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় ১ হাজার ৬৭০টি গরু ও ৩২০টি ছাগল এসেছে।

এ অফিসে দায়িত্বরত কাস্টমস পরিদর্শক সোমা মনি জানান, বেনাপোল সীমান্তের চারটি পশুহাট পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা দিয়ে যে পশু আসে নাভারণ করিডোরে তার ভ্যাট আদায় করা হয়। হিসাব করে দেখা গেছে, বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি ভারতীয় পশু দেশে আসছে। ঈদ সামনে রেখে এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। সীমান্তের অবৈধ পথে পশু আসার সংখ্যা কারো কাছে নেই। শুধু চোরাকারবারিরা এ হিসাব বলতে পরবেন।

কোরবানির ঈদের আগে পশু আমদানি বেড়ে গেলে বা ভারত থেকে পশু আসা বৃদ্ধি পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশি খামারিরা। তারা যে আশা নিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন, সেভাবে দাম না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তারা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু আসা প্রতিরোধে বিজিবির কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

অবশ্য এমনটা মনে করছেন না যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার। তিনি বলেন, সীমান্ত পথে যদি দিনে ১০০ থেকে ২০০ পশু আসে, তবে সেটা স্বাভাবিক। তবে দৈনিক হাজার হাজার এলে দেশি পশুর খামারিরা লোকসানে পড়বেন।

এটা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসাব মতে, কোরবানি উপলক্ষে যশোরের ৮ উপজেলায় ৬৮ হাজার ২৫টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। এরমধ্যে গরু ৩৫ হাজার ৭০০টি, ছাগল ২৯ হাজার ৩০০টি ও ভেড়া রয়েছে তিন হাজার। আর জেলায় কোরবানিতে ৫৫ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। এতে বাইরের জেলায় কোরবানির পশু সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন