ত্রাণের অভাব প্রকট

  20-08-2017 07:45PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ছাতক পাখির মতো একটু সাহায্যের আশায় চেয়ে আছে বানভাসী অসহায় লাখ লাখ মানুষ। সহায়-সম্বল হারিয়ে প্রায় এককাপড়ে আশ্রয় নেয়া হয়েছে ত্রাণ শিবিরে; কিন্তু সেখানেও মিলছে না প্রয়োজনীয় খাবার ও চিকিৎসা সেবা।মানুষ একটু সহযোগিতার আশায় তাকিয়ে থাকে ফ্যাল ফ্যাল করে।

হাহাকার বিরাজ করছে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোয়। মানুষ একটু খাবারের আশায় কাতর কণ্ঠে অনুরোধ জানাচ্ছে, যাকেই কাছে পাচ্ছে; তার কাছে। কোনো নৌকা বা গাড়ি দেখলে অথবা ত্রাণ বিতরণের খবর শুনলে অকূস্থলে অগণিত মানুষের ভিড় জমে যায় মুহূর্তে।

ত্রাণ নিয়ে যারা ছুটে যাচ্ছেন, তারা উপস্থিত হাজারো মানুষের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন।ফলে ত্রাণের জন্য আগতদের বেশির ভাগ হতাশ হয়ে ফিরে যান। সবার ভাগ্যে ত্রাণ জুটে না। অপর্যাপ্ত ত্রাণ মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। অনেক এলাকায় এখনো সাহায্য পৌঁছেনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, দুর্গতদের জন্য যে পরিমাণ ত্রাণ বরাদ্দ করা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। মূলত সরকারের বাইরে সেভাবে ত্রাণ তৎপরতা না থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। বর্নার্তদের পাশে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে না গেলে এই ক্ষতি সহজে কাটিয়ে ওঠ কঠিন হবে।

খাবারের অভাবে কুড়িগ্রামে মানুষ মারা গেছে বলে চ্যানেল একাত্তরের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। যদিও তা অস্বীকার করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে এ পর্যন্ত সাপের কামড়, পানিতে ভেসে বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক, যদিও সরকারি হিসাবে বলা হয়েছে ৯৪।

ফসল হারিয়ে কৃষকরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন। সে কষ্টকে দ্বিগুণ করেছে গবাদিপশু। নিজেদের ঠাঁই মাচায় ও সাইক্লোন শেল্টারে হলেও গরু-ছাগল-ভেড়া-মহিষ-হাঁস-মুরগি নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। সমস্যা আরো জটিল করেছে এগুলোর খাবারের জোগান।

বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেক এলাকায় পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া ও আমাশয় দেখা দিয়েছে। সঙ্গে আছে খোঁচপাড়ার চুলকানি। এসব এলাকায় ত্রাণ হিসেবে বিশুদ্ধ পানি, চিঁড়া-মুড়ি-গুড়, শিশুখাদ্য, দেশলাই, মোমবাতির পাশাপাশি খাবার স্যালাইন সরবরাহ করা জরুরি।

বানভাসী অনেকের অভিযোগ, তারা কোনো রকম সহযোগিতা পাচ্ছেন না। কাউকে তাদের পাশে পাচ্ছেন না। জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, তারা চাহিদামতো পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না্। ফলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ মানুষ থেকে যাচ্ছেন সহযোগিতার বাইরে।
দেশের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের এ অবস্থায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অবশ্য কর্তব্য। দেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল। ভূরি ভূরি সামাজিক সংগঠন। নিজেকে সেবক হিসেবে পরিচয় দেন আরো লাখ লাখো মানুষ। বানভাসী মানুষের এই কঠিন সংকটকালে তাদের কথার স্বার্থকতা প্রমাণের এখনই সময়।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন