জিয়াউর রহমান, মিডিয়া ও আজকের প্রেক্ষাপট

  23-08-2017 09:23PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে তার শত্রুরাও মিডিয়া-বান্ধব বলতে কখনো ভুলেননি। কারণ ছিল তো বটেই। মিডিয়ার প্রতি তার রেখে যাওয়া অনন্য অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন নীতিবান সাংবাদিক সমাজ।

সাংবাদিকদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত আজকের প্রেস ক্লাব অন্যরা যখন সচিবালয়ে থেকে কমপক্ষে শিল্পকলা একাডেমির মতো দূরত্বে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, সে অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে মূল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন থেকে শুরু করে এর জন্য তিনিই প্রথম জমি দিয়ে যান।

শুধ কী তাই, জিয়াউর রহমান সংবাদিকতা পেশার উৎকর্ষ সাধনে প্রেস ইনস্টিটিউট- পিইআইবি প্রতিষ্ঠা করেন। যেখান থেকে সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব শতভাগ নিখুঁতভাবে পালনের সক্ষমতা অর্জন করেন।

ক্ষমতায় থেকে গণমাধ্যমকে অসহ্য করার নজির সামনে থাকা সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান কিন্তু এ পথে পা বাড়াননি। বরং রাজধানী ঢাকা থেকে দৈনিক দেশ ও রাজশাহী থেকে দৈনিক বার্তা প্রকাশে এবং এর জন্য পৃষ্ঠপোষকতা দানে তার অনন্যসাধারণ ভূমিকার কথা তৎকালীন সাংবাদিকরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

এর বাইরে তিনি সাংবাদিকদের মাথা গোঁজার জন্য রাজধানীর মীরপুরে নামকাওয়াস্তে মূল্যে জায়গা দেন। যেখানে দলমত নির্বিশেষে অসংখ্য সাংবাদিক অবস্থান করছেন। বর্তমানে ওই স্থানটি সাংবাদিক পল্লী হিসেবে পরিচিত। পরিপাটি সুন্দর এই জায়গায় থাকছেন হাজারো সাংবাদিক।

কালক্রমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিনী খালেদা জিয়া রাজধানীর মীরপুরে সাংবাদিকদের ৭ একর জায়গা দেন। সেখানেও সব দলমতের সাংবাদিকদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে বাধাপ্রাপ্ত আবাসন কার্যক্রম।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রয়োজনে ও আবেদনে সাড়া দিয়ে খালেদা জিয়া প্রায় ১ একর জায়গা ১০০ বছরের জন্য লিজ দেন। এমনকি একটি বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সাবাদিকদের জন্য যে পরিবারের এত অবদান, সে খালেদা জিয়াকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আসতে বাধা দিচ্ছে কথিত ‘নব্য বাকশালীরা’।

সাংবাদিকদের জন্য এই পরিবারের ব্যতিক্রমী আরো অবদান আছে। এর একটি হলো, জিয়াউর রহমান পিআইবিতে ডিজি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারের সংসদের এমপি এ বি এম মূসাকে। দলমতের উর্ধ্বে উঠে সাংবাদিকদের বৃহৎ স্বার্থ ও কল্যাণে তিনি এভাবেই কাজ করতেন।

যে জন্য এই লেখা, তার মূল হলো আজকের বিএনপিকে নানাভাবে প্রায় প্রতিনিয়ত মিডিয়া একহাত নিচ্ছে। অনেকের মতে, বিএনপি ঘরানার মিডিয়া না-থাকায় একতরফা সুযোগ নিচ্ছে একটি মহল। প্রকৃত অর্থে মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়ার অভাবে উন্নয়ন সাংবাদিকতার নামে মূলত একটি সিন্ডিকেট দলদাশে পরিণত। যেখানে গণমুখী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা মার খাচ্ছে।

আরেকটি বিষয় পেশাদার ও নীতিবান সাংবাদিকদের কুরে কুরে খাচ্ছে, আর সেটি হলো যে বিএনপির মিডিয়ার জন্য এত ঐতিহাসিক অবদান, সে বিএনপির মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক দিনকালের বর্তমান চিত্র বিবেকবানদের কেবলই হতাশ করছে। আরো বেশি হতাশ সেখানে কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীরা। দল ও মিডিয়ার বৃহৎ স্বার্থে দিনকালের প্রতি কর্তৃপক্ষের সুবিচার করা সময়ের দাবি।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : [email protected]

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন