বাংলাদেশ না মিয়ানমার, কার সামরিক শক্তি বেশি?

  19-09-2017 10:52AM

পিএনএস ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘রোহিঙ্গা নিধন’ অভিযানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বেশ আগেই। এরই মধ্যে মিয়ানমার তার হেলিকপ্টার ও ড্রোন পাঠিয়ে ২০ বারেরও বেশি সময় বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এ ঘটনায়কে সামরিক উস্কানি হিসেবেই বিচার করছে সামরিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকেরা। তাদের ধারণা মিয়ানমার বাংলাদেশকে যুদ্ধের পথে টানতেই এমনটি করছে। তবে ওই ফাঁদে পা না দিয়ে সমস্যা সমাধানে এখনও সর্বোচ্চ দক্ষতা-প্রচেষ্টা এবং ধৈর্য্যের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

তবে অনেকেই মিয়ানমার কর্তৃক বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের ঘটনাটি স্বাভাবিকভাবে মানতে নারাজ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার। রোহিঙ্গা ইস্যুকে সামনে রেখে দুই দেশ পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানই হয়তো বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে এই বিষয়টি আবারও সামনে চলে এসেছে।

একটা কথা আমরা সবাই জানি যে, সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব একটি দেশের জাতীয় শক্তির অন্যতম নির্ধারক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ওই দেশের প্রভাব বিস্তার প্রধান স্তম্ভ। তাই প্রতিটি দেশই নিজ সার্বভৌম নিরাপত্তার লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীকে সর্বাধুনিক করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। এ প্রযুক্তি এগিয়ে থাকা দেশগুলোই মূলত এ বিষয়ে এগিয়ে থাকে। সামরিক শক্তিতে কোন দেশ কতটা এগিয়ে তার তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেস্ক’ নামের একটি ওয়েবসাইট। পৃথিবীর ১৩৩ দেশের সামরিক বাহিনীর ৫০টি তথ্য বিশ্লেষণ করে উপস্থাপিত ২০১৭ সালের তালিকা থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ামারের সামরিক শক্তির তুলনামূলক বিবরণ তুলে ধরা হলো-

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেস্কের তথ্যানুসারে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। শক্তিমত্তার বিবেচনায় দ্বিতীয় অবস্থানে রাশিয়া এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। আমাদের মিয়ানমার ব্যাতীত আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান চতুর্থ। ওয়েবসাইটটির তালিকা অনুযায়ী সামরিক শক্তিতে মিয়ানমার ৩১তম অপরদিকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম। অর্থাৎ সামরিক সক্ষমতায় মিয়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেস্কের তালিকা অনুসারে-
মিয়ানমার

‘গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার.কম’ সূত্রে জানা যায়, দেশটির সেনাবাহিনীর আকার ৫ লাখ ১৬ হাজার। যার মধ্যে ৪ লাখ ৬ হাজার নিয়মিত ও ১ লাখ ১০ হাজার রিজার্ভ সেনা সদস্য রয়েছে।

এ ছাড়া দেশটির হাতে যেসব অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- ১২৭টি যুদ্ধ বিমানসহ মোট ২৬৪টি সামরিক বিমান, ৯টি অ্যাটাক হেলিকপ্টারসহ ৮৬ হেলিকপ্টার, ৮৮৬টি অত্যাধুনিক ট্যাংক, ৪ হাজার ২১২টি বিভিন্ন ধরনের মিসাইল, ১ হাজার ২০০ সাঁজোয়া সামরিক যান, আকাশ প্রতিরক্ষায় অন্তত ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র, ৩৯২টি গান সিস্টেম, ১ হাজার ২০০ এন্টি ট্যাংক অস্ত্র, ২৭টি নেভাল ফ্রিগেড, ৪০টি পেট্রোল ক্যাফটসহ মোট ১৫৫টি নৌ-যুদ্ধযান।
বাংলাদেশ

সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার জন। এর মধ্যে নিয়মিত সেনা সদস্য রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার এবং অনিয়মিত ৬৫ হাজার জন। বিমান বাহিনীতে বিভিন্ন ধরনের বিমানের সংখ্যা ১৬৬টি, ট্যাংক রয়েছে ৫৩৪টি। এ ছাড়া আছে ৯৪২টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, ১৮টি কামান ও ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যন্ত্র। নৌবাহিনীতে রয়েছে ছয়টি ফ্রিগেট, চারটি করভেট ও দুটি সাবমেরিনসহ ৯১টি তরী।

প্রসঙ্গত, ওয়েবসাইটটি সামরিক শক্তির তুলনামূলক বিবেচনা করতে দেশগুলোর মানবসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, ভৌগোলিক গুরুত্ব, বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর শক্তি ছাড়াও সৈন্যদের দক্ষতা, যুদ্ধাস্ত্র এবং যুদ্ধ করার উপযোগী জনবলকেও বিবেচনায় নেয়।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন