রোহিঙ্গাদের নিয়ে আতঙ্কে বাংলাদেশের বৌদ্ধরা

  23-09-2017 02:57PM


পিএনএস ডেস্ক: সহিংসতার কারণে মায়ানমার থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। তবে এ পরিস্থিতি শঙ্কারও জন্ম দিচ্ছে। এএফপিকে সে কথাই জানিয়েছেন কক্সবাজার এলাকার বৌদ্ধরা।

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় অনেক বাংলাদেশি বৌদ্ধ ক্ষুদ্ধ বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা এএফপি। বিশেষত কক্সবাজারের যেসব এলকায় তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, সেখানে অনেকেই উদ্বিগ্ন বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সে এলাকায় অতীতে বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে এক বৌদ্ধ তরুণ ফেসবুক পোস্টে কোরআনের অবমাননা করেছেন- এমন অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়েছিল ৩০০ বছরের পুরোনো এক বৌদ্ধ মন্দিরে। লুটপাট করার পর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল সেই মন্দির।

বৌদ্ধ সন্যাসী প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ওখনো সেই রাতের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন।
এএফপিকে তিনি বলেন, ‘লুটপাট শেষ হয়ে গেলে তারা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ ২০১২ সালের পর পুড়িয়ে দেয়া কেন্দ্রীয় শিমা বিহার মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হয়।

এমনিতে সেখানে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের সঙ্গে সংখ্যালঘু বৌদ্ধরা মিলেমিশেই থাকেন। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতি। তাই পাঁচ বছর আগের বিভীষিকার রাতের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বিস্ময় নিয়েই তিনি বলছিলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আমার কল্পনারও বাইরে ছিল। কারণ এখানকার মুসলমানদের সাথে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক।’

সাবেক ব্যবসায়ী মনোদা বড়ুয়াও বললেন একই কথা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জনকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘ওরা মুসলমান। ওদের সঙ্গে আমরা খাওয়া-দাওয়া করি, একসঙ্গে লেখাপড়া করি। আমাদের চার পাশে অনেকগুলো মুসলিম গ্রাম।’ দুই মুসলমানের মধ্যে একজনের নাম মোহাম্মদ ইসমাইল। এএফপি-কে তিনিও জানালেন, স্থানীয় মুসলমান এবং বৌদ্ধদের মধ্যে ভালো সামাজিক সম্পর্কের কথা।

দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হলে কেন ২০১২ সালে এমন ভয়াবহ হামলা হলো? মোহাম্মদ ইসমাইল মনে করেন, সেবার হামলাটি হয়েছিল মূলত বহিরাগতদের কারণে।

গত কিছুদিনে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে। তাদের আগমনে স্থানীয়দের মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

প্রকৃতি বড়ুয়া বললেন, ‘আমরা আতঙ্কে আছি। লোকজন বলাবলি করছে, মুসলমানরা নাকি আমাদের ওপর হামলা চালাবে।’

মায়ানমারে বৌদ্ধরা সংখ্যাগুরু হলেও বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা এক ভাগেরও কম বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কক্সবাজারের বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায় ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ৫৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারপরও রাঙ্গা বাবু চাকমা জানালেন, তাঁর বাড়িতে ইতিমধ্যে একবার আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। সূত্র: এএফপি

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন