পিএনএস ডেস্ক: বিদ্যুতের দাম আবার সমন্বয় করা হচ্ছে। এজন্য গণশুনানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আজ সোমবার থেকে বিইআরসি কার্যালয়ে এই গণশুনানি শুরু করা হবে।
বিইআরসির সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের লোকসানের কথা উল্লেখ করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে অনেক আগেই। তাদের দাম বাড়ানোর আবেদনের জন্য এই শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। শুনানির পর বিদ্যুতের নতুন দাম নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেবে বিইআরসি।
২৫ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এই শুনানি হবে। এরমধ্যে প্রথম দু’দিন পিডিবির। কারণ পিডিবি পাইকারি ও খুচরা উভয় ক্ষেত্রেই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম ৭২ পয়সা (১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ) বাড়ানোর প্রস্তাব করে। আর মার্চ ও এপ্রিলে ৬ বিতরণ কোম্পানি সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে ছয় থেকে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এসব প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে।
আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর পিডিবির পাইকারি বিদ্যুতের দাম ও ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ের দাম নিয়ে শুনানি হবে। ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) শুনানি করবে।
আরইবি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) শুনানি। ডিপিডিসি ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ডেসকোর শুনানি ২ অক্টোবর। তাদের প্রস্তাব ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ দাম বাড়ানোর।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদনের শুনানি ৩ অক্টোবর। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নবগঠিত কোম্পানি নর্থওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ২৫ পয়সা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। তাদের গণশুনানি ৪ অক্টোবর।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি করে ৪ টাকা ৮৭ পয়সা (পাইকারি দাম)। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। সঞ্চালন ও বিতরণ খরচ যোগ করে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ৬ টাকা ৭৩ পয়সা দরে বিদ্যুৎ বিক্রি করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। দাম ছাড়াও কয়েকটি বিতরণ কোম্পানি গ্রাহক পর্যায়ে ডিমান্ড চার্জ ও সার্ভিস চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
বর্তমানে প্রতিটি মিটারে মাসে ৩০ টাকা ডিমান্ড চার্জ ও ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হয় গ্রাহকদের। এটি বাড়িয়ে যথাক্রমে ৪০ টাকা ও ২০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এখন প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন মূল্য ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। এর সঙ্গে সঞ্চালন ও বিতরণ খরচ যোগ করে গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গড় দাম পড়বে ৬ টাকা ৭৩ পয়সা।
এর আগে ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।
পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম
আজ থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে গণশুনাণী
25-09-2017 12:19AM