বিদ্যুতের দাম সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব পিডিবির

  26-09-2017 03:39PM

পিএনএস ডেস্ক: গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম প্রতিইউনিট সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। অপরদিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিইউনিটের দাম ১০.৬৫ শতাংশ বা ৭২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজারে টিসিবি মিলনায়তনে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য আয়োজিত ধারাবাহিক গণশুনানির দ্বিতীয় দিনে এসব প্রস্তাব করা হয়।

শুনানির সভাপতিত্ব করছেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। উপস্থিত রয়েছেন কমিশন সদস্য রহমান মুরশেদ, মাহমুদউল হক ভুইয়া, আব্দুল আজিজ খান ও মিজানুর রহমান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শুনানি চলছিল।

গণশুনানিতে পিডিবি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ এ প্রস্তাব দিয়ে বলেন, বর্তমানে ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে ঘাটতি থাকায় প্রতিইউনিটে ৩ শতাংশ হারে লোকসান দেয়া হচ্ছে। শুধু ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাঁচশ ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এ কারণে দাম বাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অপরদিকে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ১০.৬৫ বা ৭২ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।

এর আগে সোমবার গণশুনানির প্রথম দিনে পিডিবির উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে প্রতিইউনিট পাইকারি বিদ্যুতের গড় সরবরাহ ব্যয় ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের হিসাবে পিডিবি পাইকারি পর্যায়ে প্রতিইউনিট বিদ্যুৎ ৪ টাকা ৮৭ পয়সায় বিক্রি করে।

এতে দেশের একক পাইকারি বিদ্যুৎ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পিডিবির ইউনিটপ্রতি আর্থিক লোকসান ৭২ পয়সা। চলতি অর্থবছর বা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পিডিবি পাইকারি বিদ্যুতের প্রাক্কলিত সরবরাহ ব্যয় ধরেছে ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ৯৯ পয়সা। এ হিসেবে ইউনিটপ্রতি লোকসান হবে ১ টাকা ৯ পয়সা। এই বিপুল আর্থিক ক্ষতি সমন্বয় করার জন্যই পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো উচিত বলে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ শুনানিতে দাবি করেন।

২০১৬-১৭ বছরের হিসেবকে ভিত্তি ধরে পিডিবির প্রস্তাব যাচাই বাছাই করে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি চলতি বছরের জন্য পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৫৭ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে।

এদিকে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। তারা গণশুনানির প্রথমদিনে বলেছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি যেসব ব্যয় বিবেচনা করে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সেগুলোর ভিত্তি নেই। আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি দামে তেল কিনে, ভর্তুকিকে লোন বিবেচনা করে ও ব্যয়বহুল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের মতে, বাড়তি ও অযাচিত ব্যয় বাদ দিলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে কমবে।

এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ২৮ সেপ্টেম্বর ডিপিডিসি, ২ অক্টোবর ডেসকো, ৩ অক্টোবর ওজোপাডিকো এবং ৪ অক্টোবর নওজোপাডিকোর খুচরা মূল্য পরিবর্তনের প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানির আয়োজন করেছে বিইআরসি।

উল্লেখ্য, চলতি বছর মার্চে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠায় বিতরণ কোম্পানিগুলো। পাইকারি পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পিডিবি। গ্রাহকপর্যায়ে ডিপিডিসি ছয় দশমিক ২৪, ডেসকো ছয় দশমিক ৩৪, ওজোপাডিকো ১০ দশমিক ৩৬ ও আরইবি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন