পিছিয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার আলোচনা

  23-10-2017 12:18AM

পিএনএস ডেস্ক: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার আলোচনা আবারও পেছাল। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তুললেও কানাডা পরবর্তী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনার কথা জানায়। এ বৈঠকে নূর চৌধুরীকে ফেরানোর প্রক্রিয়া ও সমাধান নিয়ে দুইদেশের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববার বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে ৪র্থ দ্বিপাক্ষিক পরামর্শক সভা বা পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। বৈঠকে কানাডার পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক সহকারী উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড ববিঅ্যাশ। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, নূর চৌধুরীর ফিরিয়ে আনার বিষয়টি বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনার কথা জানায় কানাডা। নূর চৌধুরী ইস্যুতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এবং কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক সহকারী উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলাদা ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ বৈঠক করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এরইমধ্যে বাংলাদেশ ও কানাডা সম্মত হয়েছে নুর চৌধুরীর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া নিয়ে সমাধান খুঁজতে। আর এ নিয়ে দুই দেশের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসে সমাধান বের করবে বলেও জানানো হয়েছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীর প্রত্যার্পণ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ সময়ে বাংলাদেশ দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে। এ সময়ে দুইপক্ষই পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সময়ে কানাডার সরকারের নেয়া অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনৈতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। আর এ রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারের স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কানাডা বিষয়টিতে সোচ্চার থাকবে বলে বাংলাদেশ আশা করে।

সকল প্রকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান ও জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়ে বৈঠকে কানাডাকে জানায় বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃংক্ষলা বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রমও ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ।

বৈঠকে কানাডা দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার কথা বলে। এ সময়ে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি যৌথ ‘ব্ল– রিবন প্যানেল’ স্থাপনের প্রস্তাব দেয় কানাডা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে জলবায়ু পরির্বতন ও মোকাবিলা নিয়ে প্যারিস চুক্তির বিষয়ে দুই দেশই নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা আবারও জানায়। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা করার আগ্রহ জানায় কানাডা। সেই সঙ্গে লিঙ্গ বৈষম্য দুর করতে কানাডার বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা রয়েছে তাতে বাংলাদেশকে সহায়তার কথাও জানায় দেশটি।

দুইপক্ষই নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক পরামর্শক সভায় যোগ দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। পরিবর্তী বৈঠকটি সুবিধাজনক সময়ে কানাডার রাজধানী অটোয়াতে অনুষ্ঠিত হবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন