রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ঠেকাতে পারে মায়ানমারের সেনাবাহিনী

  24-11-2017 10:16AM

পিএনএস ডেস্ক: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সঙ্গে চুক্তি হলেও তা কতটা বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আর এর মূলে রয়েছে মায়ানমারের নিপীড়ক সেনাবাহিনী। তারা চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মূলত মায়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের হাত থেকে বাঁচতেই গত ৩ মাসে সোয়া ৬ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী উগ্র বৌদ্ধদেরও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে।

অং সান সু চির সরকার আন্তর্জাতিক চাপের ফলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও তাদের প্রত্যাবাসন ঠেকিয়ে দিতে পারে সেনাবাহিনী। আর সেনাদের ঠেকানোর কোনো ক্ষমতাই নেই সু চির। জান্তা প্রণীত সংবিধানেই মায়ানমারে সেনাবাহিনী সরকারের ভেতর আরেক সরকার।

মায়ানমারের বর্তমান সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং চরম রোহিঙ্গাবিরোধী। তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনো কর্মরত সেনাপ্রধানের পক্ষে দেয়া শুধু অশোভনই নয়, রীতিমতো ধৃষ্টতা। তবে তাকে ঠেকায় কে?

সম্প্রতি মায়ানমার সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন হ্লাইংয়ের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠক যে ফলপ্রসূ হয়নি তা বোঝা যায় বুধবার টিলারসনের দেয়া বিবৃতিতে। এতে তিনি রাখাইনে মায়ানমার সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন চালাচ্ছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।

চীন সফররত মায়ানমার সেনাপ্রধান হ্লাইং বুধবারও বলেছেন, ‘রাখাইন পরিস্থিতি স্থানীয় রাখাইন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী (মগ) ও বাঙালি (রোহিঙ্গা) উভয়ের কাছে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে হবে। বরং স্থানীয় রাখাইন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীই মায়ানমারের সত্যিকারের নাগরিক এবং সে কারণে তাদের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।’

তিনি রোহিঙ্গাদের ফের বাঙালি তথা অবৈধ অভিবাসী বলে মন্তব্য করেছেন এবং মায়ানমারের সেনাবাহিনীর মতোই বর্বর মগদের পক্ষ নিয়েছেন। মগরা রোহিঙ্গা নিধনে সেনাদের সহযোগী এবং তারা চায় না রোহিঙ্গারা ফের ফেরত যাক। এখানেই থেমে থাকেননি হ্লাইং।

তিনি আরও বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ১৯৮২ সালের দেশটির কুখ্যাত নাগরিকত্ব আইন এবং ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ১৯৮২ সালে জান্তা প্রণীত চুক্তির ফলেই রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়, যদিও তারা সেখানে কয়েক শতাব্দী ধরে বাস করছেন।

রয়টার্স জানায়, মায়ানমারে জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও শঙ্কিত যে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা নাও করতে পারেন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন