ঢাকায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডিভোর্স!

  06-12-2017 10:53AM

পিএনএস ডেস্ক: বিয়ে হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে ধর্ম ও সামাজিকতার পবিত্র বন্ধন; যা পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে সংসার করার আইনগত স্বীকৃতি। সংসারের নিয়মিত সমস্যায় মানুষ নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে টিকিয়ে রাখে তাদের বিবাহ বন্ধন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিয়ে নিয়ে ধারণা পাল্টে দিচ্ছে। সংসার থেকে মুক্তির আশায় অনেকেই একে অন্যের কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাচ্ছে। সারাদেশেই বাড়ছে এ সংখ্যা ।

তবে আশ্চর্যজনকভাবে রাজধানী ঢাকাতেই বাড়ছে দাম্পত্য কলহ, বিয়েবিচ্ছেদ। ফলে পৃথক হওয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যা। ব্যতিক্রমী দু’চারটি পরিবার বাদ দিলেও বেশিরভাগ লোকই নিজেকে সুখী মনে করতে পারছে না।

রাজধানীতে বছরের পর বছর ধরে তালাকের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। নানা ঠুনকো কারণে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দিতে দেখা যাচ্ছে। তালাকের ব্যাপারে এক সময় পুরুষরা সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেলেও বর্তমানে নারীরাই বেশি এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে; তালাক দিচ্ছেন স্বামীকে। ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিয়ে, তালাক রেজিস্ট্রির পরিসংখ্যানে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে হিসাব মতে, বছরের পর বছর তালাকের নোটিস সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের সালিশী বোর্ডের তথ্য মতে, মোট তালাকের ৭০ দশমিক ৮৫ ভাগ তালাক হয়েছে নারীর পক্ষ থেকে। বাকি ২৯ দশমিক ১৫ ভাগ তালাক দেয়া হয়েছে পুরুষের পক্ষ থেকে।

তালাকের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, সাধারণত স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, একে অপরের মধ্যে সংসারের নানা কারণে সন্দেহ প্রবণতা সৃষ্টি, স্বামী কর্তৃক শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন, সংসারে মিথ্যা কথা বলার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যাওয়া, পরকীয়া, মাদক আসক্তি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা ও শারীরিক সম্পর্কে অক্ষমতাই তালাকের কারণ হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের তথ্যে জানা গেছে।

তবে এর বাইরে সমাজে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাবে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার, ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপিসহ নানা প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহার, অতিরিক্ত লোভ, অবৈধ অর্থ আয়ের চেষ্টা, সংসারে প্রয়োজনীয় সময় না দেয়া, স্ত্রী- সন্তানদের সময় না দেয়া ও সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সহনশীলতা ও পারিবারিক মূলবোধের অভাব, বিদেশী অপসংস্কৃতির প্রভাব, বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন, নিজেদের মাঝে আত্মতুষ্টি না থাকা, একে অপরের মাঝে বোঝাপড়ার অভাব বা ধৈর্যচ্যুতি, পারিবারিক শিক্ষা ও সচেতনতা না থাকাসহ নানা কারণে তালাক দেয়ার ঘটনা ঘটে থাকে।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন