জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য লালবেদি

  14-12-2017 02:40AM



পিএনএস ডেস্ক: আজ ১৪ ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির এক শোকগাঁথা দিন। ৭১’এর এ দিনেই বিজয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। তাই শহীদদের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের রক্তে রাঙা লাল বেদিতে ফুল দিয়ে সম্মান জানান সর্বস্তরের মানুষ। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতারাও।

বুধবার মিরপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে সৌধের মূল বেদি ও আশপাশের এলাকা। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

সেখানে পুরোদমে চলছে রঙ আর ধোয়া-মোছার কাজ। রাতের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে বলে জানান দায়িত্বরতরা। নভেম্বর থেকেই এই সৌধের বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়।

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুদুর রহমান বলেন, 'সুশৃঙ্খলভাবে এখানে সবাই শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা হবে না। এরই মধ্যে আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কাজ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। রঙ করা থেকে ধোয়া-মোছা সব কাজই রাতের ভেতরে শেষ হয়ে যাবে।'

স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, প্রধান গেট দিয়ে ঢোকার পথে একদল পরিচ্ছন্নকর্মী মূল স্তম্ভে যাওয়ার রাস্তাটি ধোয়া-মোছায় ব্যস্ত। আর একদল স্মৃতিসৌধের ভেতরে থাকা গাছগুলোর গোড়া রঙ করছেন পরম যত্নে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে স্মৃতিসৌধের ভেতরের খালি স্থানগুলোও। আর যে স্থানটিতে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়, সে স্থানটির ইটগুলো রক্তের মতো লাল রঙ ধারণ করে আছে। এ যেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রক্তেরই প্রতিচ্ছবি। সেই রক্তের ওপর ফুল দিয়েই শ্রদ্ধা জানানো হবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের।

৯ মাস যুদ্ধের রক্তগঙ্গা পেরিয়ে পুরো জাতি যখন উদয়ের পথে দাঁড়িয়ে, ঠিক তখনই ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য হত্যাযজ্ঞ। পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে ১৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে জাতির সূর্য সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করে পাকবাহিনী।

প্রতিবছরের মতো এবারও বাঙালি জাতির শোকগাঁথা এই দিনটিকে স্মরণ করেতে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। বুদ্ধিজীবীদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা আর দেশপ্রেমই পুরো জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে। অর্জিত হয় কাঙ্ক্ষিত বিজয়। কিন্তু স্বাধীন বাংলার বুকে লাল-সবুজের পতাকা দেখতে দেয়া হয়নি তাদের। হত্যা করা হয় নির্মমভাবে।

তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, 'বুদ্ধিজীবী দিবসকে সামনে রেখে নিরাপত্তা সংক্রান্ত যেসব তথ্য পেয়েছি, সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেটা নিয়েছি। কমপক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব।' বৃহস্পতিবার রাত ১২টা এক মিনিটে ফুল ফুলে ভরে উঠবে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন