বাংলাদেশ মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছে: বিশ্বব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট

  21-01-2018 03:35PM


পিএনএস ডেস্ক: মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংকট বাড়ছে বলে জানিয়েছে বহুজাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক। চলমান সংকট কমাতে রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আরো আর্থিক সহযোগিতা বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি। রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে বিশ্বব্যাংক। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছে বলেও অভিমত প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

সংস্থাটির দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানট ডিক্সন কক্সবাজারের বালুখালী ও কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে এসব মন্তব্য করেন।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে অ্যানট ডিক্সন বলেন, ‘মিয়ানমারে সহিংসতায় প্রাণভয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার পর সরকার ও স্থানীয় মানুষ যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে, মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’ তিনি বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত হয়ে যারা এখন কক্সবাজারে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।’

অ্যানট ডিক্সন আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। রোহিঙ্গাদের আমরা সহযোগিতা করতে চাই।’

গতকাল শনিবার বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোহিঙ্গাদের ‘রিফিউজি বা শরণার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সরকার এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে ঘোষণা করেনি। এ ছাড়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও কিছু বলা হয়নি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে দরখাস্ত করেছি। তবে সহযোগিতা পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা ধীর নীতি অবলম্বন করেছি। কারণ মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছে, তাতে দৈনিক দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে তারা ফেরত নেওয়ার কথা। দেখি কতজন রোহিঙ্গা শেষ পর্যন্ত ফিরে যায়। যখন দেখব মিয়ানমার আর রোহিঙ্গা ফেরত নিচ্ছে না, তখন আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে পুনরায় সহযোগিতা চাইব।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যানট ডিক্সন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বিশাল। যত দূর চোখ গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য প্লাস্টিক ও কাঠ দিয়ে তৈরি আশ্রয়শিবির দেখেছি। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরের কারণে বন উজাড় হয়েছে। অবকাঠামোর ওপর বড় ধরনের চাপ পড়েছে। রোহিঙ্গাদের কারণে পানি ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।’

অ্যানট ডিক্সন নিবন্ধিত ও অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। কথা বলেছেন রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতিনিধি ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গেও। একই সঙ্গে যেখানে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধিত সেন্টার, স্বাস্থ্য ও খাদ্য বিতরণ সেন্টার, শিশু সেন্টার পরিদর্শন করেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে তাদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন অ্যানট।

ডিক্সন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বড় ধরনের মহত্ত্ব্বের পরিচয় দিয়েছে। উদারতা দেখিয়েছে দেশের মানুষও। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা তাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য আরো বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন