নিহত প্রত্যেকের পরিবার ৫০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পাবেন

  15-03-2018 08:57AM


পিএনএস ডেস্ক: নেপালে স্মরণকালের ভয়াবহতম দুর্ঘটনায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অনেক স্বজন দাবি করেছেন, যাতে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউএস-বাংলার যে উড়োজাহাজটি নেপালে দুর্ঘটনার শিকার হয়, সেটি দুটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আওতায় ছিল। তা হলো- ইংল্যান্ডের প্রখ্যাত কে এম দাস্তুর ও বাংলাদেশের সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। এরই মধ্যে দুই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় তাদের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করেছে। তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই উড়োজাহাজের নিহত যাত্রীদের স্বজন ও আহতরা ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ ছাড়া ক্ষতিপূরণ পাবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও।

নিয়ম অনুযায়ী নিহত প্রত্যেক যাত্রীর স্বজনরা ন্যুনতম ৫০ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সেই অর্থ কবে নাগাদ পেতে পারেন তা এখনও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে ইন্স্যুরেন্স ছাড়া চলাচলের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। এর আওতায় উড়োজাহাজ, যাত্রী ও পাইলটদের আলাদা ‘মূল্য’ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পাইলটদের ১-২ লাখ ডলার, যাত্রীদের ন্যুনতম ৫০ হাজার ডলার ইন্স্যুরেন্স সুবিধা থাকে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল এভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও মেঘনা এভিয়েশনের পরামর্শক এয়ার কমডোর (অব.) ইকবাল হোসেন সমকালকে বলেন, যে কোনো উড়োজাহাজ কেনার পরপরই তা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির তালিকাভুক্ত হতে হয়। সেখানে বিমানযাত্রী ও উড়োজাহাজের আলাদা মূল্য নির্ধারণ করা থাকে। বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি যে কোনো এয়ারলাইন্সের প্রত্যেক যাত্রীর ন্যুনতম ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার শিকার হলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক ইন্স্যুরেন্স সুবিধার আওতায় এ পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা। এ ছাড়া এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ইন্স্যুরেন্সে যে নিয়মাবলির আওতায় থাকে তাতে যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে উড়োজাহাজটি কেনা হয়েছে, প্রায় সব পরিমাণ অর্থ তারা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী একই ধরনের নিয়ম। তাই ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বীমা সুবিধায় ক্ষতিপূরণ পাবে। উড়োজাহাজ ও যাত্রীরা আন্তর্জাতিকভাবে বীমার যে প্রিমিয়ামের আওতায় থাকার কথা, তা কমানো কারও পক্ষে সম্ভব নয়। ইউএস-বাংলার ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য।

এয়ার কমডোর (অব.) ইশফাক এলাহী বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজন ও আহতরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এর আগেও বিশ্বের কোনো এলাকায় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর নিহতদের স্বজন ও আহতরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এখানে অস্বচ্ছতার সুযোগ নেই।

ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও বিপণন) কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দেশি-বিদেশি দুটি বীমা কোম্পানিতে ইন্স্যুরেন্স ছিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটির। দুর্ঘটনার পর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি তদন্ত শুরু করেছে। তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এখনই পরিস্কারভাবে বলা সম্ভব নয়। তারা হয়তো অন্যান্য তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও পর্যবেক্ষণ করবে। তবে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন তিনি।

সিভিল এভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর (অব.) ইকবাল হোসেন মনে করছেন, ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি মোটেও সময়সাপেক্ষ নয়। ইউএস-বাংলার ক্ষেত্রে লন্ডনের প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিপূরণ মূল্যায়ন করে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের কাছে তাদের প্রতিবেদন পাঠাবে। তখন সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স নিহতদের স্বজন ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন