গণপরিবহনে ‘৯৯৯’ লেখা বাধ্যতামূলক

  19-05-2018 04:02PM

পিএনএস ডেস্ক:আনুষ্ঠানিকভাবে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর যাত্রা করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলছেন, যাত্রীদের যেকোনো হয়রানি রোধে রাজধানীর গণপরিবহনগুলোর ভেতরে বড় করে গাড়ির নম্বর ও ন্যাশনাল হেল্প ডেস্ক ‘৯৯৯’ লেখা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে সরকার।

এরপর বিভিন্ন স্থানে এর ব্যবহার শুরু হয়। জাতীয় পর্যায়ে তার সুফল আসতে শুরু করে। দেশের কোথাও এই নম্বরেই ফোন করে বাল্যবিয়ে থামিয়ে দেয়া হয়েছে, কোথাও ধর্ষণের অভিযোগ আসার পর গ্রেপ্তার হয় ধর্ষক। কোথাও আবার মিলে স্বাস্থ্য সেবা। এই সেবা আরও তৎপর করতে এবার নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

এ লক্ষ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে (বিআরটিএ) নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সেবা পেতে যেকোনো ফোন (মোবাইল বা ফিক্সড লাইন ফোন) থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ, দমকল বাহিনী ও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়। এই কল করতে কোনো অর্থ খরচ হয় না।

বেসরকারি চাকরিজীবী শাহ্ আলম বলছেন, গণপরিবহনে এখন যাত্রী হয়রানি অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে নারীদের তো যৌন হয়রানি করা হচ্ছে অহরহ। যা একটা মানসিক বিকারগ্রস্ততার বিষয়। রাজধানীতে গেলো কয়েক মাসে এ ধরনের খবর খুব বেশি মিলেছে। ৯৯৯ চালু সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। আশা করি, সরকারের এ ডিজিটাল উদ্যোগ আরও বেশি কার্যকর হবে।

চলতি বছর রাজধানীতে যাত্রীবাহী পরিবহনে বেশ কয়েকটি যৌন হয়রানির ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্য গত মার্চে ‘নিউ ভিশন’ বাসে এক কলেজছাত্রীকে হেনস্তা করা হয়। এর মাত্র এক সপ্তাহ পার না হতেই একই রকম হেনস্তার শিকার হন রমজান বাসে ওঠা আরেক আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

গত এপ্রিলে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করে তুরাগ পরিবহনের হেলপার ও কন্ডাক্টর। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মুখে ওই হেলপার ও কন্ডাক্টরদের আটক করে পুলিশ।

সম্প্রতিকালে সবচেয়ে বড় ন্যাক্কারজনক ঘটনা- ঢাকার আইডিয়াল ‘ল’ কলেজের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা। গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়।

রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কয়েকবছর ধরে চাকরি করছেন গাজী মাজহার। তিনি বলেন, যৌন হয়রানি থেকে বেরিয়ে আসা মূলত মানসিকতা পরিবর্তনের বিষয়। সবার আগে এই নীতিটাই মানুষের মধ্যে জন্ম নিতে হবে।তবে ৯৯৯ সেবা বাসেও চালু হলে দ্রুত আইনি সেবা নেয়া সম্ভব হবে। এতে করে ভুক্তভোগীও দ্রুত সেবা পেতে পারে।
অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে রাজধানীর বাসে বাসে যৌন হয়রানি কমতে পারে। খুব শিগগির এটার বাস্তবায়ন দরকার বলে মনে করেন তিনি।

যৌন হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি এ সেবার মাধ্যমে মানুষ দুর্ঘটনার সময় ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যাবে। উদাহরণ হিসেবে সম্রাট বলেন, গণপরিবহনে কেউ কোনো অপরাধ ঘটতে দেখলে, প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে, কোনো হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, দুর্ঘটনায় পড়লে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে, জরুরিভাবে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন