আবদুল মুহিতের অবসরের পর কে হচ্ছেন নতুন অর্থমন্ত্রী?

  23-05-2018 12:19AM

পিএনএস ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তিনি অবসরের কথা জানিয়েছেন।মন্ত্রিসভার প্রবীণতম এই সদস্য বর্তমানে বাজেট প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন । বাজেট প্রণয়ণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সঙ্গে বৈঠকে নিয়মিত বলতে শোনা যাচ্ছে,, এটাই তাঁর শেষ বাজেট। অর্থমন্ত্রীর অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েই সম্প্রতি একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নতুন একজন অর্থমন্ত্রী খোঁজ করছি।’

আগেই জল্পনাকল্পনা চলছিল, মুহিতের পর কে হতে পারেন নতুন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর মন্ত্রিসভাসহ অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবমহলেই জোড়ালো আলোচনা হচ্ছে, কে হচ্ছেন নতুন অর্থমন্ত্রী।

সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রহণযোগ্য একজন নতুন অর্থমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, বিভিন্ন ব্যবসায়িক গ্রুপ এবং পেশাজীবীদের মতামত নিতে শুরু করেছেন।আগামী অক্টোবরে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই বর্তমান সরকারের অবয়ব পরিবর্তন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ছোট নির্বাচনকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। এই ছোট সরকারেই আত্মপ্রকাশ করত পারেন নতুন অর্থমন্ত্রী।

সূত্রমতে, আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিকল্প হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় একসময় একাই ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. ফরাস উদ্দিন আহমেদ। তবে সরকারের অর্থনৈতিক কৌশলের নীতিগত পার্থক্য থাকায় ফরাস উদ্দিন বর্তমানে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। বরং নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীল অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নামই এখন বেশি শোনা যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে বিভিন্ন অর্থবছরে বাজেটের নানা দিক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যাখা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে ড. মশিউর রহমান সহায়তা দিয়েছেন।এবারও বাজেট প্রণয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই নতুন সম্ভাব্য অর্থমন্ত্রী তালিকার শীর্ষে ড. মশিউর রহমানকে রেখেছেন বিশ্লেষকরা।

ড. আতিউর রহমানকেও দেখা যেতে পারে মুহিতের পদে।গত একমাসে প্রধানমন্ত্রী অন্তত দুবার ড. আতিউর রহমানকে গণভবনে ডেকে নিয়েছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন এবং ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক চিন্তা’ শীর্ষক একটি বইয়ের ব্যাপারে আলোচনা করতেই ড. আতিউর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ড. আতিউর রহমানকে অত্যন্ত পছন্দ করেন। রিজার্ভ চুরির ঘটনা না ঘটলে ড. আতিউর রহমান অর্থমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে অনেক এগিয়ে যেতেন।

টেকনোক্রাটদের বাইরে প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ. হ. ম. মোস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) নামও শোনা যাচ্ছে। কারণ পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে তিনি সাফল্য দেখিয়েছেন। পাশাপাশি বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নানও প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

মন্ত্রিসভায় আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন, সেটা চূড়ান্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। এ নিয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রসিকতা করে বলেছেন, ‘অর্থমন্ত্রী খুঁজছি। দেখি পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় কিনা?’ প্রধানমন্ত্রীর এই রসিকতায় উপস্থিত সবার মধ্যে হাসির রোল পড়ে।

কে হচ্ছেন নতুন অর্থমন্ত্রী, এটা নিয়ে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বাজেট প্রক্রিয়ার সাথে সাথেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠবে বলে মনে করছেন তারা।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন