সাড়ে তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন, সিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

  14-06-2018 05:23PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : ঈদে নাড়ির টানে বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ছুটছে মানুষ। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কষ্টকর যাত্রাও তাদের আটকাতে পারছে না। রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোয় ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। গন্তব্যে পৌঁছার প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়।

গতকালের মতো আজও সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে রেলের। ৫৫ থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা পর্যন্ত দেরিতে ছেড়েছে চার-পাঁচটি ট্রেন। আজ আরো সিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। গতকাল ট্রেনের ছাদে যাত্রী বহন করা না হলেও আজ কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। ছাদভর্তি যাত্রী নিয়ে ট্রেনগুলো গন্তব্যে ছাড়ছে দেরিতে। কমলাপুর স্টেশনে আজ একজন যাত্রী রেলেকাটা পড়ে মারা গেছেন।

রাজধানী ঢাকায় আজকের যানজট ছিল অবিশ্বাস্য। সুযোগ বুঝে ভাড়া নেয়া হয় বেশি। রিকশভাড়া নেওয়া হয় প্রায় দ্বিগুণ। রামপুরা ওয়াদপদা রোডের মাথা থেকে সেগুনবাগিচা আসতে লাগে এক ঘণ্ট ১৭ মিনিট। রিকশা ভাড়া নেওয়া হয় ১০০ টাকা। রামপুরা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত তীব্র যানজট ছিল। আর রাস্তায় চলাচলরত যানবাহনগুলো ছিল যাত্রীতে ঠাসা।

লঞ্চ টার্মিনালগুলো ছিল যাত্রীতে কানায় কানায় পূর্ণ। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও ছিল। সদরঘাটে একটি লঞ্চকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে প্রায় সব লঞ্চ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। আবহাওয়াও খুব একটা অনুকুল নয়। এর পরও প্রায় প্রতিটি লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

অতিরিক্ত যাত্রীর কথা মাথায় রেখে ১৩ জুন থেকে ঈদের বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রী ভোগান্তি কমাতে প্রতিবছরের মতো এবারও এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদের প্রথম বিশেষ ট্রেনটি সকাল পৌনে ৯টায় দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এবারই প্রথমবারের মতো ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটেও বিশেষ ট্রেন চলবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিদিন সকাল সোয়া ৯টায় কমলাপুর থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশে একটি এবং রাত ১২টা ৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে একটি বিশেষ ট্রেন। রাত ১০টা ৫০ মিনিটে পার্বতীপুরের উদ্দেশে একটি এবং রাত সোয়া ৯টায় রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে একটি বিশেষ ট্রেন। খুলনা ছাড়া বাকি রুটগুলোয় বিশেষ ট্রেন ঈদের পর সাতদিন চলাচল করবে।

রেলের পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার্থে বিআরটিসি অতিরিক্ত বাস সড়কে নামিয়েছে। গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদে কিছু বাস অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করছেন। যদিও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে গতকাল সায়েদাবাদে কয়েকটি বাসের কাউণ্টার বন্ধ করে দেয় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজকে কিন্তু এমন খবর পাওয়া যায়নি।

কর্মস্থল ছেড়ে ঈদ করতে স্বজনদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ । এ যাত্রা সুন্দর, সুখকর ও আরামদায়ক হোক- এ প্রত্যাশা সবার। আজকে সড়ক-মহাসড়কে তেমন একটা যানজট ছিল না । যেটা ছিল, সেটা অনেকটা সহনীয়। তবে রেলের একের পর এক সিডিউল বিপর্যয় যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। সিডিউল বিপর্যয় আরো বাড়বে বলে অভিজ্ঞ মহলের আশঙ্কা।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন