যেভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন

  13-08-2018 07:01PM

পিএনএস ডেস্ক : বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিভিন্ন ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্স যেমন শিক্ষানবিশ লাইসেন্স, পেশাদার, অপেশাদার, পিএসভি ও ইনস্ট্রাক্টর লাইসেন্স দেয়। বিআরটিএ কার্যালয় থেকে ফরম সংগ্রহ বা www.brta.gov.bd থেকে আবেদনপত্র ও মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে মোট চার কপি ছবি জমা দিতে হয়। আবেদনপত্রটি বিআরটিএর অফিসে জমা দিতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এর যথার্থতা বিবেচনা করে সাধারণত সাত দিনের মধ্যে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়, যার মেয়াদ তিন মাস।

ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে : ট্রাক, লরি ও বাসের মতো ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পেতে হলে আগে হালকা মোটরযানের লাইসেন্স থাকতে হয়। হালকা মোটরযানের লাইসেন্স পাওয়ার তিন বছর পার না হলে ভারী যানবাহনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যায় না।

লাইসেন্স ফি : ফি বিআরটিএ নির্ধারিত পোস্ট অফিসে জমা দিতে হয়। শুধু প্রাইভেটকারের জন্য শিক্ষানবিশ ফি ২৩০ টাকা। প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের জন্য ৩৪৫ টাকা।

অপেশাদার লাইসেন্স ফি প্রাইভেটকারের জন্য দুই হাজার ৩০০ টাকা, হালকা বাহন ও মোটরসাইকেলের জন্য দুই হাজার ৪০০ টাকা।

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ : যাঁরা বিদেশে গাড়ি চালাতে চান, তাঁদের সংগ্রহ করতে হয় আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট। এ জন্য প্রার্থীর বাংলাদেশের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের জন্য চেয়্যারম্যান, অটোমোবাইলস অ্যাসোসিয়েশন, ৩/বি আউটার সার্কুলার রোড, মগবাজার, ঢাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা দিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে হয়। ফরমের সঙ্গে পাসপোর্টের ফটোকপি, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি জমা দিতে হয়। এরপর অটোমোবাইলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও বিআরটিএর সহকারী পরিচালকের যৌথ স্বাক্ষরে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট ইস্যু করা হয়।

নবায়ন : অপেশাদার লাইসেন্স ১০ বছর ও পেশাদার লাইসেন্স পাঁচ বছর পর নবায়ন করাতে হয়।

লাইসেন্স নবায়ন ফি : লাইসেন্সের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। মেয়াদান্তে নির্ধারিত পরিমাণ ফি জমা দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। অপেশাদার লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিশোধ করতে হয় দুই হাজার ৩০০ টাকা, যার মেয়াদ ১০ বছর। আর পেশাদার লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিশোধ করতে হয় এক হাজার ৪৩৮ টাকা এবং মেয়াদ পাঁচ বছর। মেয়াদোত্তীর্ণের পর লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে বিলম্ব ফি বাবদ প্রতিবছর ১০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র : স্ট্যাম্প সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি, পাসপোর্ট সাইজের এক কপি রঙিন ছবি, লাইসেন্সের দুটি লেমিনেটেড ফটোকপি।

লাইসেন্স পাঁচ ধরনের হলেও শিক্ষানবিশ লাইসেন্স, পেশাদার লাইসেন্স ও অপেশাদার লাইসেন্সই বেশি প্রচলিত। এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো।

যে ধরনের ব্যক্তি লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন

* পেশাদার ও অপেশাদার লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাঁদের বয়স (পেশাদার ২০ এবং অপেশাদার ১৮) নির্ধারিত বয়স অপেক্ষা কম ।
* কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন।
* ক্ষিপ্রতাগ্রস্ত ব্যক্তি ও মৃগী রোগী, বধির, রাতকানা, হৃদরোগী. বর্ণান্ধ

যেসব ব্যক্তি শারীরিক অক্ষমতা/শারীরিক স্বল্পতা/ত্রুটির কারণে গাড়ি চালনায় অযোগ্য।

শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পদ্ধতি

হবিআরটিএ অফিস থেকে ছাপানো নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করতে হবে।

* একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক শারীরিক ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রক্তের গ্রুপ ফরমে উল্লেখ থাকতে হবে।
* নির্ধারিত আবেদন ফি স্থানীয় পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
* আবেদনপত্র সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি ছবিসহ বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্র পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ যথার্থতা বিবেচনা করে তিন মাসের জন্য শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। এরপর কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নির্ধারিত তারিখে লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

লাইসেন্স পেতে হলে যেসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় আবেদনকারীকে ক. লিখিত পরীক্ষা, খ. মৌখিক পরীক্ষা ও গ. ব্যবহারিক পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে হবে।

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর যে শ্রেণীর মোটরযানের (মোটরকার, মোটরসাইকেল বা হালকা/ভারী) জন্য আবেদন করেছেন সে শ্রেণীর গাড়ি নিয়ে বিআরটিএ অফিসের নির্ধারিত স্থানে (জেলা পর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে) ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

ব্যবহারিক পরীক্ষা তিনটি ধাপে সম্পন্ন- ক. জিগজ্যাগ টেস্ট খ. জাম্প টেস্ট ও গ. রোড টেস্ট।

এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করবে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে মধ্যম ও ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পেতে হলে অবশ্যই আবেদনকারীর হালকা মোটরযানের লাইসেন্স থাকতে হবে এবং তিন বছর পার না হলে ওই ধরনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।

ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা ছিঁড়ে গেলে লাইসেন্সধারীকে নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় ফি পোস্ট অফিসে জমা দিয়ে যে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছিল তার বিবরণ দিয়ে অথরিটির কাছে তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে।

লাইসেন্স হারিয়ে বা পুড়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। এর একটি সত্যায়িত অনুলিপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।

এ ছাড়া দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সেই বিজ্ঞপ্তির তারিখ আবেদনপত্রে উল্লেখ করে পত্রিকার নির্দিষ্ট স্থানটি চিহ্নিত করে আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। আবেদনপত্র ঠিক বিবেচিত হলে লাইসেন্সধারীর অনুকূলে একটি প্রতিলিপি ইস্যু করা হবে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন