ঈদ আনন্দ হোক সার্বজনিন

  22-08-2018 11:57AM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : মুসলিম সংস্কৃতির একটি বড় উৎসব ঈদ। এর একটি ঈদ-উল ফিতর অন্যটি ঈদ-উল আযহা। আজ ঈদ-উল আযহা বা কোরবানির ঈদ। মুসলমানদের কোরবানির উৎসব মূলত বিসর্জনের দিন। অথচ আজই আবার প্রকৃত ঈদের আনন্দ-উৎসবের দিনও।

আজ সে সত্য প্রতিষ্ঠার দিন যে, ভোগে নয়- ত্যাগেই প্রকৃত সুখ। বিসর্জন আর উৎসর্গের মধ্যেই যে প্রকৃত আনন্দ, হাতে-কলমে সে বাস্তবতা সমাজে বাস্তবায়নের দিন। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই, ঈদের নামাজে ধনী-গরিব নির্বিশেষে কাতারবদ্দ হওয়ার মধ্য দিয়ে সে সত্য প্রতিষ্ঠার দিন। ঈদের নামাজ শেষে হাসিমুখে একে-অপরের সঙ্গে কোলাকোলি সম্পর্ককে সুদৃঢ় করে বৈকি।

কোরবানির দ্বারা একে তো দরিদ্র লোকজন প্রীতিকর ও তৃপ্তিকর ভোজ পায়, পশুর চামড়ার বিক্রীত অর্থ দ্বারা তারা অন্ন-বস্ত্রের অভাব কিছুটা হলেও দূর করতে পারে। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে সর্বোপরি মহানবীর শিক্ষা থেকে সমাজের অবহেলিত শ্রেণীর পাশে সামর্থবানরা দাঁড়ালে সবার মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে।

কোরবানির গোশত একা এবং নিজেরা না খেয়ে আত্মীয়স্বজন-পাড়াপরশী ও গরিবদের মাঝে একটা অংশ বিলিয়ে দেওয়া উত্তম। ইসলাম ও মহানবীর শিক্ষা সামাজিক সাম্য। সে সাম্য প্রতিষ্ঠায় কোরবানী দেওয়া সামর্থবানরা অন্যদের মাঝে কোরবানির গোশত ও অর্থ বিলিয়ে পরস্পর ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।

কবির ভাষায়- ‘মুসলমানকে জীবনের পদে পদে এমনই করিয়া কোরবানি করিতে হইবে, এমনই করিয়া আল্লার নামে আপনাকে বিলাইয়া দিয়া ত্যাগের মধ্যে আনন্দ, মৃত্যুর মধ্যে জীবন খুঁজিয়া লইতে হইবে।’ কী অসাধারণ শিক্ষা লুকিয়ে আছে প্রতিটি শব্দের পরতে পরতে। এ ত্যাগের শিক্ষায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ হলে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা সহজ হবে।

সামাজিক দায় থেকে শুধু গোশত বিলিয়ে দায় শোধ মনে করলে চলবে না, গরিব, দীনহীন, এতিম, মিশকিন, পথশিশুদের পারলে ঈদের দিন নতুন জামা-কাপড় দিয়ে ডেকে এনে একসঙ্গে বসে ভোজন করিয়ে দেখুন আনন্দের মাত্রা কতটা বৃদ্ধি পায়। আত্মতৃপ্তি আপনাকে কতটা ব্যাকুল করে। একবার করেই দেখুন না।

ঈদের এই উৎসব যখন সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে তখনই এটা হবে প্রকৃত উৎসব। কেউ উৎসব করল, কেউ ভূরিভোজ করল আর কেউ অন্নই পেল না, পেলনা এক টুকরো কোরবানির গোশত- সেটা সার্বজনিন উৎসব হলো না। ঈদ উৎসব সার্বজনিন করতে সম্পদশীলরা সম্পদহীনদের প্রতি আন্তরিক হওয়ার মধ্য দিয়ে মহানবীর শিক্ষা সাম্য সমাজে সহজে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। ঈদকে ঘিরে আমরা এ মহৎ কাজটা মন-প্রাণ দিয়ে করতে পারি।

লেখক : বার্তা সমম্পাদক- পিএনএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন