রোহিঙ্গা শিবিরে বৃষ্টিতে দুর্ভোগ

  12-10-2018 08:02PM

পিএনএস ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলির’ প্রভাবে গত তিন দিন ধরে জেলার উখিয়া-টেকনাফে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুই উপজেলার প্রায় ১০টি রোহিঙ্গা শিবিরে দুর্ভোগের মাত্রা। দেখা দিয়েছে ভূমিধসসহ নানা কারণে প্রাণহানির শঙ্কাও।

এই বৃষ্টি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কক্সবাজারের কিছু এলাকায়ও পড়েছে। তবে এখন ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সংকেত দেওয়া হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতে উখিয়া ও টেকনাফের কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রিতদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বৃষ্টির ফলে প্রায় সব শিবিরের ভেতরে জমেছে কাদাপানি। পিচ্ছিল সে পথে হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের শালবাগান শিবিরে মিয়ানমারের রাখাইনের হাসসুরাতা গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি জানান, সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে গত বছরের ২৫ আগস্ট পরিবারসহ চলে আসেন এপারে। আশ্রয় মেলে শালবাগান শিবিরে। তবে বৃষ্টি হলে তাদের কষ্টের মাত্রা বেড়ে যায়। আমরা যে জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি, সেটি পাহাড়ের পাদদেশ লাগোয়া। বৃষ্টি হলে পানি জমে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া শিবিরে বিশুদ্ধ পানির সংকট থাকায় অনেকেই ডায়রিয়ার আক্রান্ত। সেইসঙ্গে ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশিসহ ছড়িয়ে পড়েছে চর্মরোগও।

ওই শিবিরেই রাখাইনের মংডুর মংনিপাড়ার বাসিন্দা রমিদা বেগম জানান, বৃষ্টি বাড়লে তাদের কষ্ট বাড়ে। বাতাসে নড়াচড়া করে ঝুপড়িঘর। ওপর থেকে নিচের দিকে পানি নামলে ঘর স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। তাই রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়।

কুতুপালং শিবিরের মাঝি মোহাম্মদ ফয়েজু বলেন, এটি সবচেয়ে বড় রোহিঙ্গা শিবির। এখানে অধিকাংশ ঘর পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ভারি বৃষ্টিতে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এতে রোহিঙ্গাদের কষ্টের শেষ নেই।

টেকনাফ লেদা শিবির উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল মতলব বলেন, রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি ঘরগুলো খুবই দুর্বল, ফলে বৃষ্টির পানি সহজেই ঢুকে পড়ে। তা ছাড়া শিবিরের রাস্তাগুলো মাটির হওয়ায় চলাচল করতে কষ্ট হয়।

এ ব্যাপরে টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, বৃষ্টিতে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন