বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চীনের বক্তব্য

  09-12-2018 08:39AM


পিএনসে ডেস্ক: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনটি নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু। তিনি বলেছেন, চীন সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক গভীরতর করবে। এ লক্ষে চীনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাও রয়েছে।

গতকাল রাজধানীর সিক্স সিজনস হোটেলে ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক : ভবিষ্যতের সম্ভাবনা’ বিষয়ক এক সংলাপ শেষে সংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।

এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীনের সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লি তাও, পিপলস ডেইলির ভারত ব্যুরোর সিনিয়র সাংবাদিক ইয়ন জিরং, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এই আয়োজনটি কসমস ফাউন্ডেশনের নিয়মিত সংলাপের অংশ।

সংলাপে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে চীনের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। দুই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক আরো গভীর হবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে চীন গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চায় বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্ব গভীরতর করতে রাষ্ট্রদূত পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রথমত, আগামী দশকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্যে দ্রুত পরিবর্তন আসবে। অভিন্ন জাতীয় বাস্তবতার মুখে চীন ও বাংলাদেশ একই স্বপ্ন দেখছে। সমতা ও পারস্পরিক বিশ্বাসকে সমুন্নত রাখতে ভালো অংশীদারে পরিণত হতে দুই দেশ হাত মিলাতে পারে। দ্বিতীয়ত, আগামী দশকে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পরিবর্তন আসবে। চীন ও বাংলাদেশে ব্যাপক সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে, যা বিশ্বের ব্যবসায়ীদের আকর্ষণ করে। এ জন্য পারস্পরিক স্বার্থে ভালো অংশীদার হতে দুই দেশের হাত মেলানো প্রয়োজন। তৃতীয়ত, আগামী দশকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এ ক্ষেত্রে চীন ও বাংলাদেশের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভালো অংশীদার হিসেবে দুই দেশে হাত মেলাতে পারে। চতুর্থত, আগামী দশকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে অনেক পরিবর্তন আসবে। নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন ইস্যুগুলো মোকাবেলায় চীন ও বাংলাদেশ একসাথে কাজ করছে। তাই নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতায় ভালো অংশীদার হিসেবে দুই দেশকে কাজ করে যেতে হবে। পঞ্চমত, আগামী দশকে সংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আরো গভীরতর হবে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে হাজার বছরের যোগাযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আরো অন্তর্ভুক্তি ও পরস্পরের কাছ থেকে শিখতে ভালো অংশীদার হিসেবে দুই দেশ হাত মিলাতে পারে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। বর্তমান বিশ্বে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন