এ কেমন আত্মপ্রচার

  20-05-2019 03:34PM

পিএনএস (হানিফ সংকেত) : গত ৭ মে, ২০১৯ মঙ্গলবার আমাদের সবার প্রিয় আধুনিক গানের অবিস্মরণীয় কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। সিঙ্গাপুর নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পরে পরপর হার্ট অ্যাটাক হওয়ায় চিকিৎসকদের শেষ আশাও ক্ষীণ হয়ে যায়। অবশেষে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ওইদিন ভোর সাড়ে ৪টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সুবীর নন্দীর মৃত্যুতে শ্রোতা-দর্শকসহ পুরো সংগীতজগৎ শোকাহত।

সুবীর নন্দীকে বলা হয় অমর শিল্পী। যে শিল্পীর মরণ নেই। তিনি ছিলেন সুরের রাজকুমার। ছিলেন শুদ্ধ সংগীতের শিল্পী। গানের বাণীকে অনুধাবনের পর হৃদয়ে ধারণ করে তিনি গান গাইতেন। আধুনিক গানের পাশাপাশি তিনি গেয়েছেন শাস্ত্রীয় সংগীত, ভজন, কীর্তন ও পল্লীগীতি। উচ্চাঙ্গ সংগীতের ক্ষেত্রেও তার ছিল শিক্ষা ও সাধনা। তাকে অহেতুক কখনো যন্ত্রনির্ভর সংগীত পরিবেশন করতে দেখা যায়নি। পড়াশোনা শেষে দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করলেও সুবীর নন্দী বাংলা সংগীতাঙ্গনে আসন করে নেন সুরের জাদুকর হিসেবেই। সংগীতে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সংগীতাঙ্গনে অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদক। তার গানের হাতেখড়ি মায়ের কাছে। ১৯৬৭ সালে প্রথম গান রেকর্ড করেন রেডিওতে। প্রথম প্লে-ব্যাক করেছেন ‘সূর্যগ্রহণ’ ছবিতে। ১৯৭২ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম প্রচারের মধ্য দিয়ে গানের জগতে আসেন সুবীর নন্দী। ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি গান। সুবীর নন্দীর এই চলে যাওয়া সবাইকে যেমন শোকাহত করেছে, তেমনি সংগীতাঙ্গনে সৃষ্টি করেছে বিশাল শূন্যতা। এ শূন্যতা কবে পূরণ হবে কিংবা আদৌ হবে কিনা জানি না।

আমরা একসঙ্গে বেশ কটি দেশে ভ্রমণ করেছি। বিদেশে খুব কাছ থেকে দেখেছি, মিশেছি। হাসি ছাড়া কথা বলতে দেখিনি। একজন মানবিক মূল্যবোধ-সম্পন্ন মানুষ ছিলেন সুবীর নন্দী। কারও অনুরোধ ফেলতে পারতেন না। যে কারণে অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে গিয়ে দু-একটি রিয়েলিটি শোতেও তাকে যেতে দেখেছি; যা কাক্সিক্ষত মানের ছিল না। সুবীর নন্দীর শিল্পীসত্তার প্রথম জনসম্মুখে বিকাশ ঘটে বেতারে, তারপর টেলিভিশনে। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। মূলত আমাদের দেশের চেনা-জানা, প্রতিভাবান অধিকাংশ শিল্পীরই প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। তারপর প্রাইভেট চ্যানেল আসার পর প্রতিটি চ্যানেলেই শিল্পীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। কেউ গেয়েছেন, কেউ অভিনয় করেছেন, কেউ লিখেছেন, কেউ পরিচালনা করেছেন। কিন্তু এসব গুণী শিল্পীর মৃত্যুর পর তাদের কারও কারও লাশ নিয়ে একটি চ্যানেলের আচরণ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেককেই যেমন অবাক করেছে, তেমনি করেছে ক্ষুব্ধ। যেমন সাম্প্রতিককালে শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু এবং সর্বশেষ সুবীর নন্দীর লাশ দেশে এত চ্যানেল থাকতে শুধু একটি বিশেষ চ্যানেলে কেন নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই চ্যানেলেই সুবীর নন্দী প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছেন বা সবচেয়ে বেশি গেয়েছেন- তা তো নয়। অথচ সুবীর নন্দীকে জাতি চিনেছে রেডিও এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে যখন ওসব চ্যানেলের জন্মই হয়নি। তাহলে কাদের উৎসাহে সব চ্যানেলকে বাদ দিয়ে তার মতো একজন মহান শিল্পীর অন্তিম যাত্রায় শুধু একটি চ্যানেলেরই তাকে নিজস্ব শিল্পী বানানোর চেষ্টা? যেহেতু প্রতিটি চ্যানেলই সুবীর নন্দীকে নিয়ে কাজ করেছে, সবাই তাকে ভালোবাসেন। সবারই তার প্রতি অধিকার রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার অনুষ্ঠানেও এসব চ্যানেল জন্মের আগে এবং পরে সুবীর নন্দী বেশ কটি গান গেয়েছেন। তাই বলে কি আমার প্রতিষ্ঠানে তার লাশ এনে শ্রদ্ধা জানাতে হবে? অনেক ছবিতে তিনি গান গেয়েছেন, তাই বলে কি প্রতিটি পরিচালকের অফিসে লাশ নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হবে? সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তো লাশ শহীদ মিনারেই নেওয়া হয়েছে। শিল্পী, সাংবাদিক, বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও সেখানে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন, শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ইচ্ছা করলে তারাও তো তাদের রাজনৈতিক কর্মস্থলে তার লাশ নিয়ে যেতে পারতেন কিন্তু করেননি। কারণ সেটা দৃষ্টিশোভন হতো না। অথচ কারও মৃত্যু কিংবা লাশ নিয়েও একটি বিশেষ চ্যানেলের কেন এই অশোভন প্রচারণা? দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, মন্ত্রী, রাজনীতিবিদরা শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারলে ওই চ্যানেলের কর্তাব্যক্তিরা কেন শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন না? কেন লাশ চ্যানেলে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হবে? এ কেমন শ্রদ্ধা? তারা নিজেদের কোন মানদন্ডে বিচার করেন? এফডিসি থেকে শিল্পীর লাশ সরাসরি সবুজবাগে নেওয়া হবে বলে বিভিন্ন চ্যানেলে স্ক্রল গেলেও শুধু এই চ্যানেলটিতে দেখা গেল সুবীর নন্দীর লাশ এখন ওই চ্যানেলে যাচ্ছে; যা দর্শকদেরও বিভ্রান্ত করেছে। বিভিন্ন শিল্পীর মৃত্যুর পর লাশ নিয়ে চ্যানেলটির এই প্রচার কার্যক্রম অনেকের মনেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শুধু তাই নয়, কারও মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় শিল্পীর সঙ্গে তাদের উপস্থিতিতে আত্মপ্রচারণামূলক বিভিন্ন ক্লিপিং, প্রামাণ্য অনুষ্ঠান। কিন্তু শিল্পীর জীবিত অবস্থায় তাকে নিয়ে তো কোনো প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বা ডকুমেন্টারি নির্মাণ করতে দেখা যায়নি। কেউ কেউ বলেন, চ্যানেলটির অনেক ক্ষমতা, তার প্রমাণ অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া গেছে। তাই ভয় পান বলে অনেকেই তাদের কোনো কার্যক্রমের সমালোচনা করেন না। বরং অনেকেই পারস্পরিক স্বার্থে চাটুকারিতা করেন।
এসব ব্যাপারে কথা উঠলেই চ্যানেলের চাটুকারদের কেউ কেউ বলেন, পরিবারের সম্মতিতে লাশ অমুক জায়গায় নেওয়া হয়েছে। অথচ পরিবারের সদস্যরা সে সময় স্বজন হারানোর বেদনায় মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত থাকেন যে, তাদের কোনো বিষয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব হয় না। তখন তাদের ঘিরে থাকা কিছু কিছু মানুষ এসে এসব সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। আর তখনই ঘটে সুবিধাবাদীদের স্বতঃপ্রণোদিত ইচ্ছার প্রতিফলন। সুবীর নন্দীর লাশ অন্যান্য চ্যানেলকে বাদ দিয়ে শুধু একটি চ্যানেলে নেওয়ার ব্যাপারে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া বাইরে ছিল অসহনীয় দাবদাহ। তার পরও কজন অতি উৎসাহী ব্যক্তির উদ্যোগে কাজটি করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার দু-তিন জন প্রিয় মানুষের অসুস্থতার সময় থেকে মৃত্যুর পর সমাহিত করা পর্যন্ত কাছে ছিলাম। যেমন খালিদ হাসান মিলু, আজম খান, হুমায়ুন ফরীদিসহ আরও কয়েকজন। যাদের লাশ শহীদ মিনার হয়ে পারিবারিক সম্মতিতে নির্দিষ্ট জায়গায় সমাহিত করা হয়েছে। কোনো বিশেষ চ্যানেলে নেওয়া হয়নি, নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। যেখানে তাদের শিল্পীসত্তার বিকাশ ও প্রকাশ ঘটেছে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ও এফডিসিই হলো শিল্পীদের প্রথম পছন্দের, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এবং স্মরণের জায়গা। অথচ সিন্ডিকেট এবং ওই চ্যানেলের চাটুকারদের দৌরাত্ম্যে মৃত্যুর পর শিল্পীদের লাশ বিটিভিতে নেওয়া হয় না, নেওয়া হয় ওই চ্যানেলে। কেউ কেউ বলেন, এ ক্ষেত্রেও তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। সব শিল্পীর লাশ ওই চ্যানেলে নেওয়া হয় না। যেমন নেওয়া হয়নি আনিস ভাই, টেলি সামাদ কিংবা সালেহ ভাইয়েরসহ আরও অনেকের লাশ। দৃষ্টিভঙ্গির এই বিভক্তি অবশ্য নিন্দনীয়। প্রশ্ন হলো, বিটিভি কি কোনো শিল্পীর লাশ বিটিভি প্রাঙ্গণে নিতে নিষেধ করেছে? কিংবা প্রয়াত শিল্পীর পরিবারকে বলা হলে তারা কি বিটিভিতে লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানাতেন? নিশ্চয়ই নয়। সব চ্যানেলেই ছিল তার অবাধ যাতায়াত, ছিল ভালোবাসা। তাহলে মৃত্যুর পরও কেন তাদের একটি বিশেষ চ্যানেলমুখী করে ফেলা হচ্ছে?

আজকাল কোনো অসুস্থ শিল্পীকে দেখতে গেলে কিছু কিছু শিল্পী নামধারী নারী-পুরুষ সেলফি নিয়ে স্ট্যাটাসনির্ভর হয়ে পড়েন। অর্থাৎ শিল্পীকে দেখার চাইতে তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মপ্রচার করাটাই যেন তাদের কাছে মুখ্য। কে কার জন্য কী করছেন, কবার দেখা করতে গেছেন- এসবই থাকে স্ট্যাটাসের বিষয়, সঙ্গে ছবি। সবচেয়ে বড় কথা হলো কিছু শিল্পী আইসিইউতে গিয়ে পর্যন্ত শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলে ফেসবুকে দেন। অথচ আইসিইউতে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শিল্পী বিছানায় শুয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন তাদের দিকে। আসলে এ এক অদ্ভুত প্রচারণা। সম্প্রতি খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কজন গুণী মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকে এখনো অসুস্থ আছেন। আমরা টিভিতে, পত্রিকায় শিল্পীর অসুস্থতার খবর জানতে পারি। অনেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগেও জানেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই এসব অসুস্থ শিল্পীকে দেখতে যান, তাদের খোঁজখবর নেন এবং সেটা প্রচারণার জন্য নয়। তবে কিছু কিছু দর্শনার্থীর ছবি ও সংবাদ প্রায় প্রতিনিয়তই কাগজে ছাপা হয়। আর অনেকেই আছেন যারা প্রায়শ যান কিন্তু তাদের কোনো সংবাদ দেখা যায় না। কারণ তারা সংবাদের জন্য যান না, যান আত্মিক টানে। একবার আমার এক শিল্পী বন্ধুকে একজন প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি অমুক শিল্পীকে দেখতে গেলেন না, উনি তো খুব অসুস্থ।’

শিল্পী বন্ধু অবাক, বললেন- কাল বিকালেও তো গেলাম।

প্রশ্নকর্তার উত্তর- কিন্তু আপনার কোনো নিউজ দেখলাম না?

অর্থাৎ এখন কেউ কাউকে দেখতে গেল কি গেল না তা নির্ভর করে সংবাদ ছাপা হওয়ার ওপর। সংবাদ না হওয়া মানে আপনি যাননি। অর্থাৎ সংবাদটাই মুখ্য।

এখন শুধু সংবাদই নয়, এখন প্রচারণার ক্ষেত্রে অসুস্থ শিল্পীদের ওপর নতুন উৎপাত শুরু হয়েছে। অসুস্থ শিল্পীর সঙ্গে দেখা করা কিংবা হাসপাতালে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থার ভিডিও করে অনলাইনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর অনুরোধ সাবস্ক্রাইব করুন। শুনেছি এও নাকি এক ধরনের আয়ের উৎস। কিছুদিন আগে অসুস্থ কণ্ঠশিল্পী আকবরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। ভর্তি হওয়ার দু-এক দিন পরই হাসপাতালের বিছানাতেই তার ভিডিও শুরু হলো, যা পরে অনলাইনে দেখেছি। ভিডিওতে দেখলাম তার গায়ের জামা ওপরে তুলে কোথায় কোন ফোসকা পড়েছে তারও ভিডিও করা হয়েছে, যা অনুচিত। শুধু আকবরই নন, অনেক বিখ্যাত শিল্পীর বেলায়ও এই ভিডিও বাণিজ্য শুরু হয়েছে। অথচ যাদের এসব ভিডিও করা হচ্ছে তারা কিছুই বলেন না কিংবা সৌজন্যের খাতিরে বলতে পারেন না। ব্যক্তিগতভাবে আমি সব সময়ই ক্যামেরার বাইরে থেকেই কাজ করতে চেষ্টা করি। আর বছরে ৬-৭ ঘণ্টা ক্যামেরার সামনে থাকি এবং সেটা ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে। আমার মতে কারও জন্য কিছু করলে কাউকে সহানুভূতি জানাতে চাইলে সেটা ক্যামেরার সামনে না করাই মহত্ত্বের লক্ষণ। সরকারপ্রধান কিংবা দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের বিষয়টি আলাদা। তাদের আগমন ঘটা করেই প্রচার হওয়া উচিত তাতে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। শিল্পীরাও উৎসাহ পান। শিল্পীর প্রতি যত্নও বাড়ে। প্রধানমন্ত্রীও ব্যক্তিগতভাবে অনেক অসুস্থ শিল্পীর সুচিকিৎসার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন এবং অর্থ সাহায্য দিয়েছেন, প্রয়োজনে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছেন; যা প্রশংসনীয়।

সুবীর নন্দী শুধু আমাদের নন, পুরো বাঙালি জাতির গর্ব। সুবীর নন্দীর লাশ ওই বিশেষ চ্যানেলে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তাদেরই কয়েকজনের অনুরোধে এবং বিবেকের তাড়নায় বিষয়টি নিয়ে লিখতে চেষ্টা করেছি। জানি অনেকেই অখুশি হবেন, তবে আমি অনেকের মনের কথাটুকু বলতে পেরে খুশি হয়েছি। আর যারা অখুশি হয়েছেন, তারা অখুশির কারণটা নিরপেক্ষভাবে ভাবুন- দেখবেন উত্তর আমার পক্ষেই আসবে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগবে, প্রচারবিমুখ শিল্পী সুবীর নন্দীর লাশ নিয়ে এ কেমন আত্মপ্রচার। সবার কাছেই যা অনাকাক্সিক্ষত।

আমরা গর্ব করে বলি আমাদের দেশে সুবীর নন্দীর মতো শিল্পী আছে। সুবীর নন্দী চিরদিন বেঁচে থাকবেন তার গানের মাধ্যমে, বেঁচে থাকবেন আমাদের হৃদয়ের গভীরে। জীবনের নানা পর্ব সর্বজনের ক্ষেত্রে গর্ব করার মতো না-ও হতে পারে। তবে সুবীর নন্দীর জীবনের প্রতিটি পর্বই ছিল গর্ব করার মতো। আমার এই লেখাটুকুর কারণে লাশ এবং অসুস্থ শিল্পীদের নিয়ে প্রচারমুখী মানুষদের যদি কিছুটা হলেও বোধোদয় ঘটে, তবেই আমার ভালো লাগবে। সুবীর নন্দীর আত্মার শান্তি কামনা করছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সৌজন্য লেখক : গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব; পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন