‘সময় এখন কালোটাকার মালিকদের’

  16-06-2019 09:54PM

পিএনএস ডেস্ক : সম্পূরক বাজেটের ওপর জাতীয় সংসদে আলোচনায় সরকারি ও বিরোধী দলের বক্তব্যে উঠে আসে কালোটাকা প্রসঙ্গ। খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচার প্রসঙ্গও তোলেন তাঁরা।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনা করেন সাংসদেরা। ফ্লোর পেয়ে গণফোরামের সাংসদ মোকাব্বির খান বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেটকে অর্থমন্ত্রী নাম দিয়েছেন ‌‌“সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের।” বাস্তবে সময় এখন কালোটাকার মালিকদের, সময় এখন লুটেরাদের এবং অথর্পাচারকারীদের।’


স্মার্ট বাজেটের সমালোচনা করে মোকাব্বির খান আরও বলেন, ‘আসলেই এটা স্মার্ট বাজেট। এই বাজেটেই ধনীদের আরও ধনী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এক পরিবার থেকে চারজনকে পরিচালক হওয়ার সুযোগ দিয়ে টানা ৯ বছর পর্ষদে থাকতে দেওয়া হয়েছে। ১০ বছরে খেলাপি ঋণ ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। অবলোপন যোগ করলে এই অঙ্ক ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা হবে। কী ভয়াবহ কথা! সেই তালিকা প্রকাশ করা হোক। কারা নিয়েছেন এই টাকা?

রুমিন ফারহানা বলেন, অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম বলেছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে। আর গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই) বলেছে, বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুট হয়, বিচার হয় না। ১৫ লাখ টন কয়লা নাই হয়ে যায়, বিচার হয় না।

জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না। অথচ এই ফাঁকে ১৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেল। ঋণখেলাপিদের অবলোপন করারও সুযোগ দেওয়া হয়। মানুষ পকেটে টাকা এনে ব্যাংকে রাখেন। অথচ ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি। দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণখেলাপিদের কাছে গেলে ব্যাংক খাতের সমস্যা তো হবেই। সুদের হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকে সুবিধা নিলেও তাঁরা আর সুদের হার কমাননি।

ফখরুল ইমাম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসায়ীবান্ধব। অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা যিনি আবার একজন সাংসদ—সবাই ব্যবসায়ী। বাজেটে ভ্যাটের বিষয়টি এখনো ঠিক হলো না। ভ্যাট কি শিল্পের ওপর না পণ্যের ওপর, প্রশ্ন তাঁর।

জাতীয় পার্টির আরেক সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, সম্পূরক বাজেট পাস হয়ে যাওযার পরই মন্ত্রীরা রাজা হয়ে যান। তারপর তাঁদের কাছে সাংসদদের আর মূল্যায়ন থাকে না।

বিএনপির আরেক সাংসদ হারুন-অর রশীদ দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলে অভিহিত করেন।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্যবসায়ী হওয়া কি অপরাধ? বিশ্বের অনেক দেশের সংসদেই ব্যবসায়ী আছেন। সুতরাং, ‘ব্যবসায়ী’ শব্দ দিয়ে গালি দেওয়া ঠিক নয়।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন