নিরাপদ সড়ক আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের অপরাধ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ!

  23-06-2019 05:18PM

পিএনএস ডেস্ক : ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই। সেদিন রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় কুর্মিটোলায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিনই রাস্তায় নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারপর দুই শিক্ষার্থী ‘হত্যার’ বিচারসহ নিরাপদ সড়কের দাবীতে প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে রাজধানীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। এ আন্দোলনে সহানূভূতি জানিয়ে রাস্তায় নামেন শিক্ষক, অভিভাবক ও নাগরিক সমাজ।

তারপর সরকার এর পেছনে 'রাজনৈতিক উসকানি' খুঁজতে গিয়ে পুলিশ দিয়ে লাঠিপেটা করে দমন করে সে আন্দোলন। ছাত্রদের ঠেঙ্গাতে সরকারি ছাত্র সংগঠনের কর্মী এবং হেরমেটধারী গুণ্ডারা পুলিশের সাহায্যে মাঠে নামে। তারপর রাস্তা, ছাত্রাবাস এবং বাড়িতে গিয়ে ধরে আনা হয় বেশ কিছু ছাত্রকে। মামলা হয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

এদের মধ্যে অন্তত: ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে বাড্ডা ও ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয় এবং জেলে পাঠানো হয়। দু'সপ্তাহ কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেও মামলার ফয়সালা হচ্ছে না এখন পর্যন্ত। প্রায় দশ মাস ধরে তদন্ত করেও শিক্ষার্থীদের অপরাধ খুঁজে পাচ্ছেন না তদন্তকারী কর্মকর্তারা। যে কারণে তারা আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করতে পারছে না।


এ অবস্থায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েও হয়রানি থেকে মু্ক্তি মেলেনি শিক্ষার্থীদের। মামলায় পড়ে তদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়েছে। অনেকের শিক্ষাজীবন শেষ হলেও চাকুরিতে ঢুকতে পাছেন না মামলার কারণে। আর এ নিয়ে আদালত-উকিলের খরচা তো রয়েছেই।

এদিকে, তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে ওপর মহল থেকে কোনও সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, ছাত্রদের নিরাপদ সড়কের দাবি ন্যায্য। সে জন্য নাগরিক সমাজও তাদের সমর্থন দিয়েছে। তবে এটা দুঃখজনক যে তাদেরকে মামলা থেকে এখনো রেহাই দেয়া হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টার ওপর রাজনৈতিক রং চড়ানো হয়েছে বলে জটিলতা বেড়েছে। তাই সমস্যাটির দ্রুত সমাধানের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুরু থেকেই আদালতকে বলে আসছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবি ছিল যৌক্তিক। তাদের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হয়রানিমূলক মামলা। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার মতো কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না বলেই এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করতে দেরি হচ্ছে। এই হয়রানিমূলক মামলা থেকে এই শিক্ষার্থীদের অব্যাহতি দিয়ে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার দাবি করেন এই আইনজীবী।- রেডিও তেহরান

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন